স্বামী-স্ত্রী কিংবা পার্টনারদের মধ্যে যে কেউ নিজেদের একজন যখন ভাবেন আমার স্বামী বা স্ত্রী আমাকে ভালোবাসে না কিংবা একে অন্যকে নিয়ে নিজেদের ভালোবাসা নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকেন তখন মূলতঃ নিজদের সেক্স লাইফে ব্যাঘাত ঘটে থাকে, এর সুদূর প্রসারী এক প্রতিক্রিয়া হয়, যৌনশক্তি নষ্ট হয়ে যায়। এক সাইন্টিফিক রিসার্চ রিপোর্টে এমন বক্তব্যই প্রকাশিত হয়েছে।
রিসার্চ রিপোর্টে বলা হয়েছে, স্বামী বা স্ত্রীদের মধ্যে যে কেউ কিংবা উভয়ে যখন ভাবেন, চিন্তা করেন, তাদের মধ্যে ভালোবাসা নেই কিংবা তারা যদি অন্যের সাথে সম্পর্ক করতেন হয়তো সুখী হতেন অথবা সঙ্গিনীর সাথে ভালোবাসার সম্পর্ক নিয়ে পরিমাপ করেন তখন মূলতঃ তাদের মধ্যেকার যৌন সঞ্জীবনী শক্তি ও লাভ লাইফ ইনসিকিউরে ভুগে থাকেন।
কিন্তু যখন এই সমস্যা বা ভাবনা একে অন্যের মধ্যে অথবা দুজনের একজনের মধ্যে প্রতিদিনই এই সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে সেটা আর ভাবনা-চিন্তার মধ্যে না থেকে বরং আরওসিডি নামক এক প্রকার সিনড্রোমে ভুগে থাকেন, যার মেডিক্যাল নাম হলো: রিলেশনশিপ অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিসঅর্ডার (আরওসিডি)।
পিয়ার রিভিউড জার্নাল অব সেক্স মেডিসিনে এ ব্যাপারে যে সিম্পটম সাজেস্ট করে রিপোর্ট আলোচিত হয়েছে পুনরায়, সেটা এখন লাইভ সাইন্সে এই আরওসিডি এবং সাইন্সের মতে লেস দেন সেটিসফ্যাক্টরি সেক্স লাইফের মধ্যে লিংক সূত্র খুঁজে পেয়েছে।
গবেষণা পত্রে বলা হয়েছে, যুগল সঙ্গী-সঙ্গিনীর বেডরুম কিংবা বাড়িতে নিজেদের মধ্যে সুখী দম্পতি ও তাদের প্রাত্যহিক যৌন সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটা মারাত্মক বিঘ্ন সৃষ্টি করে থাকে, যা তাদের আরো অসুখী করে তুলে। এ ধরনের রোগীদের আজকের যুগে কাউন্সিলর ও থেরাপিস্টরা তাদের চিকিৎসা সেবা করে থাকেন।
ইসরাইলের স্কুল অব সাইকোলজি এট দ্য ইন্টারডিসিপ্লিনারি সেন্টারের রিসার্চার গাই ডুরুন বলেন, এই আরওসিডি সিম্পটম অনেক সময় নয়, বরং প্রায়ই ফ্যামিলি এবং যুগলদের চিকিৎসা সেবা প্রদানে নিয়োজিত থেরাপিস্টরা এড়িয়ে চলেন অথবা তাদের গোচরিভূত হয় না।
আরওসিডি হলো ফর্ম অব অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিসঅর্ডার যেখানে প্রতিনিয়ত সঙ্গী কিংবা সঙ্গিনী জিজ্ঞেস করেন একে অন্যকে তুমি কি এটাই মিন করেছ, অথবা ভালোবাসার পূর্ণতা পেতে গিয়ে অহেতুক বাতিকে জড়িয়ে নিজেদের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেন। ফলে একে অন্যের কাছ থেকে অনেক দূরে চলে যান, যদিও একই ছাদের নিচে বসবাস করেন।
ডুরুন অনলাইনের মাধ্যমে ১৫০ জন পুরুষ ও নারীদের কাছে তাদের ভালোবাসার পূর্ণতা ও সেটিসফ্যাকশন নিয়ে প্রশ্ন করে রিসার্চের এসেস করেছেন, যাদের সকলেরই বিয়ে কিংবা এক সঙ্গে থাকা ১৫ বছর পর্যন্ত।
ডুরুন তার রিসার্চ স্টাডিতে দেখতে পেয়েছেন মাত্র ১ পার্সেন্ট এই আরওসিডি সিম্পটম নিয়ে রেসপন্স করেছেন। তার মতে, তার মানে আরো অনেক এই আরওসিডি সিম্পটমে ভুগছেন, যারা নিজেদের যৌন জীবনে প্রচণ্ড অসুখী, যার ফলে অশান্তিময় জীবন-যাপন করছেন, নানা সন্দেহের আবর্তে একে অন্যকে দেখছেন।
রিসার্চে সাজেস্ট করা হয়েছে, এই আরওসিডি সিম্পটম প্রাথমিক অবস্থাতেই ট্রিট করা না হলে যুগল যখন কাউন্সেলিং ও থেরাপি নেন, তখন অনেক ক্ষেত্রে আর এই সিম্পটম খুব একটা ভালোমতো ট্রিট করা যায়না ।
নিউ ইয়র্ক ও নিউ জার্সির সাইকোলজিস্ট এবং ওসিডির ক্লিনিক্যাল ডিরেক্টর ষ্টিভেন ব্রডস্কি লাইভ সায়েন্সকে বলেছেন, নিয়মিত কাউন্সেলিং টেকনিক এই আরওসিডি সিম্পটমকে আরো বাড়িয়ে দেয় ।
ব্রডস্কির মতে, আরওসিডিতে যারা ভুগছেন তাদের উচিত ওসিডি চিকিৎসা নেয়া এবং একে অন্যকে টলারেন্স আর সেই সাথে অহেতুক এরকম চিন্তা মাথা থেকে ঝেরে ফেলা।