রান্নার মধ্যে তিল ব্যবহারের চল অনেক আগের। শুধু রান্নাই নয়, আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরিতে তিলের ব্যবহার রয়েছে। সাদা ও কালো- এই দুই ধরনের তিলের মধ্যে এক সময়ে কালো তিলের ব্যবহারই হতো বেশি। বিশেষ করে রান্না, ওষুধ তৈরির ব্যাপারে কালো তিল বেশি কার্যকরী বলে মনে করা হতো।
মৃদু স্বাদের সাদা তিল দিয়ে বানানো হতো মিষ্টি। তবে সেই চল অনেকটাই কমে আসছে। আমাদের দেশে ‘তিলের খাঁজা’ নামের এক ধরনের মিষ্টান্ন বিশেষ দেখা যায়। সেটাতেও কিন্তু সাদা তিল ব্যবহার করা হয়। তবে নানা কাজে ব্যবহার হওয়া তিল ঝিমিয়ে থাকা মেজাজও ভালো করতে পারে। এছাড়া আর কী উপকার, তা জানুন এই প্রতিবেদনে-
মেজাজ ভালো করে
চারপাশে যখন মন খারাপ করা নানা ঘটনা ঘটে চলেছে, তখন মনকে চাপমুক্ত এবং মেজাজ ভালো রাখা সোজা কথা নয়। তিলকে বলা হয় প্রাকৃতিক ‘মুড বুস্টার’ বা মেজাজ ভালো করার খাবার। তিলে রয়েছে ট্রিপ্টোফান নামে এক ধরনের অ্যামিনো এসিড, যা দ্রুত মেজাজ ভালো করতে পারে। পাশাপাশি, তা উদ্বেগ, হতাশার মতো সমস্যাও কমাতে সাহায্য করতে পারে।
নাছোড় অসুখ দূরে রাখে
তিলে রয়েছে সেসামলিন ও সেসামিন নামের অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। এই দুই অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টই শরীরকে নানা নাছোড় অসুখের সমস্যা থেকে দূরে রাখে। ভালো রাখে সার্বিক স্বাস্থ্য।
চুল পড়া কমায়
গরমে মাথায় ঘাম বসে চুল পড়ার সমস্যা প্রতি দুজনে এক জনের হয়েই থাকে। তিলে থাকা তৈলাক্ত উপাদান মাথার ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। চুলকে রাখে আর্দ্র। তিলে রয়েছে চুলের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত জরুরি ভিটামিন বি। বিশেষ করে বি১ অর্থাৎ থিয়ামিন, বি৩ অর্থাৎ নায়াসিন এবং বি৬। এগুলো চুলের বৃদ্ধির জন্য জরুরি। এ ছাড়া তিলে থাকা কপার চুলের গাঢ় রং বজায় রাখতেও সাহায্য করে।
ত্বকের যত্ন নেয়
তিলের অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ত্বককে ভেতর থেকে ভালো রাখে এবং অকালে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না। এ ছাড়া তিলে থাকা ওমেগা-৬ ফ্যাটি এসিড এবং ভিটামিন ই ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে। ফলে ত্বক উজ্জ্বল দেখায়। তিল থেকে পাওয়া তেল সূর্যের অতিবেগনি রশ্মি থেকেও ত্বককে রক্ষা করতে পারে বলে জানাচ্ছে কিছু গবেষণা।
অস্টিয়োপোরোসিস
তিলে থাকা ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও ফসফরাস হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে। অস্টিয়োপোরোসিসের মতো রোগে যেসব রোগীর হাড় ভঙ্গুর হয়ে যায়, তাদের জন্যও উপকারী তিল।
কোলেস্টেরল কমায়, হার্ট ভালো রাখে
তিলে রয়েছে স্বাস্থ্যকর স্নেহপদার্থ। যার মধ্যে অন্যতম পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং মোনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট। দুটিই ‘খারাপ’ কোলেস্টেরল বা এলডিএলের মাত্রা কমিয়ে ‘ভালো’ কোলেস্টেরল বা এইচডিএলের মাত্রা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। ফলে হার্টের স্বাস্থ্যও ভালো থাকে।
ওজন কমায়, হজমে সহায়ক
ওজন কমানোর জন্য সব সময় খাদ্যতালিকায় ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার রাখতে বলেন পুষ্টিবিদরা। তিলে রয়েছে ওট্সের থেকেও বেশি ফাইবার। প্রতি ১০০ গ্রাম তিলে ১২ গ্রাম ফাইবার পাওয়া যায়। এর পাশাপাশি হজমশক্তি বৃদ্ধি করতেও সাহায্য করে তিল। কারণ, তিলে থাকা ফাইবার হজমে সহায়ক মাইক্রোবিয়োমগুলিকে ভালো রাখে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ