১৯ মে, ২০১৯ ১০:০৯

কঠোর নিরাপত্তায় চলছে শেষ দফার লোকসভা নির্বাচন

দীপক দেবনাথ, কলকাতা:

কঠোর নিরাপত্তায় চলছে শেষ দফার লোকসভা নির্বাচন

কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে রবিবার (১৯ মে) ভারতে সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনের শেষ ধাপের ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। সকাল ৭টা থেকে শুরু হওয়া এই ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া চলবে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত। এই পর্বে দেশের আটটি রাজ্যের ৫৯ আসনে ভোটগ্রহণ হচ্ছে। 

এগুলি হল, উত্তরপ্রদেশ (১৩), পাঞ্জাব (১৩), পশ্চিমবঙ্গ (৯), বিহার (৮), মধ্য প্রদেশ (৮), হিমাচল প্রদেশ (৪), ঝাড়খন্ড (৩), চন্ডীগড় (১) টি আসন। 

শেষ দফাতে মোট ভোটারের সংখ্যা ১০ কোটির কিছু বেশি। ভাগ্য নির্ধারণ হবে মোট ৯১৮ জন প্রার্থীর। এদিন সকালে গোরখপুরের একটি কেন্দ্রে ভোট দেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। পাটনার রাজভবনের একটি স্কুলে ভোট দেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার। পাটনাতেই একটি কেন্দ্রে ভোট দেন বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী সুশীল কুমার মোদি।

ভোট শুরুর আগে সকালেই প্রধানমন্ত্রী ট্যুইট করে জানান, ‘২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আজ শেষ পর্ব। এই ধাপে সমস্ত ভোটারদের ভোট দিতে আমি অনুরোধ জানাবো। আপনাদের একটা ভোট আগামী দিনে ভারতের উন্নয়নকে তরান্বিত করবে। আমি নতুন ভোটারদেরও উৎসাহের সাথে ভোট দিতে আর্জি জানাবো।’

এই দফায় অন্যতম নজরকাড়া লোকসভা কেন্দ্র হল উত্তরপ্রদেশের ‘বারাণসী’। এই কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী হিসাবে লড়াই করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার বিরুদ্ধে কংগ্রেসের প্রার্থী অজয় রাই, সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজ পার্টির জোট প্রার্থী হয়েছেন শালিনী যাদব। 

এছাড়াও হেভিওয়েট প্রার্থীদের মধ্যে আছেন বিজেপি প্রার্থী কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ, কেন্দ্রীয় শক্তি প্রতিমন্ত্রী রাজ কুমার সিং, লোকসভার সাবেক স্পীকার কংগ্রেসের মীরা কুমার, কংগ্রেসের প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহা, বিজেপি প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী মনোজ সিনহা, বিজেপির ভোজপুরী অভিনেতা রবি কিষাণ, আপনা দল প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী অনুপ্রিয়া সিং প্যাটেল, রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) প্রার্থী মিশা ভারতীকে (লালু প্রসাদের কন্যা), সাবেক কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় লোক সমতা পার্টি (আরএলএসপি) উপেন্দ্র কুশওয়া, ঝাড়খন্ডের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) প্রধান শিবু সোরেন। কংগ্রেস প্রার্থী ও সাবেক মন্ত্রী মণিশ তিওয়ারি, কেন্দ্রীয় ন্যায় বিচার ও ক্ষমতায়ন প্রতিমন্ত্রী বিজেপির বিজয় সমপলা, বিজেপি প্রার্থী অভিনেতা সানি দেওল, কেন্দ্রের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রী বিজেপির হরসিমরাত কউর বাদল, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী (গৃহায়ণ প্রতিমন্ত্রী) বিজেপির হরদীপ পুরি, বিজেপির অভিনেত্রী প্রার্থী কিরণ খের প্রমুখ। 

এই ধাপে পশ্চিমবঙ্গে নয়টি আসনে ভোট নেওয়া হচ্ছে। এগুলি হল-কলকাতা দক্ষিণ ও কলকাতা উত্তর, যাদবপুর, দমদম, বারাসত, বসিরহাট, জয়নগর, মথুরাপুর, ডায়মন্ডহারবার। মোট ভোটার প্রায় ১.৫ কোটির কাছাকাছি। নয় কেন্দ্রে মোট প্রার্থী রয়েছে ১১১ জন। 

দুপুরে তীব্র দাবদাহের হাত থেকে বাঁচতে এদিন সকাল থেকেই বহু ভোট কেন্দ্রে লম্বা লাইন চোখে পড়েছে। ভোট গ্রহণ শুরুর এক ঘণ্টার মধ্যে ভোট এখনও শান্তিপূর্ণ। যদিও কয়েকটি বুথে ইভিএম বিকল হয়ে যাওয়ায় ভোট গ্রহণ শুরু হতে কিছুটা দেরি হয়। 

সকালে কলকাতার সিটি কলেজে ভোট দিয়েছেন কলকাতা দক্ষিণ কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী চন্দ্র কুমার বসু (স্বাধীনতা সংগ্রামী নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর নাতনি)। বিজয়গড় শিক্ষানিকেতন বালিকা বিদ্যালয়ে ভোট দেন উত্তর কলকাতা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী রাহুল সিনহা। সল্টলেকের একটি বুথে ভোট দেন রাজ্যের খাদ্য সরবরাহ মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।

রাজ্যের উল্লেখযোগ্য প্রার্থীদের এর মধ্যে ডায়মন্ডহারবার কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী বর্তমান সাংসদ তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির ভাতিজা অভিষেক ব্যনার্জি, দমদম কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী সাবেক কেন্দ্রীয় নগরায়ণ প্রতিমন্ত্রী সৌগত রায়, কলকাতা দক্ষিণ কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী চন্দ্র কুমার বসু (স্বাধীনতা সংগ্রামী নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর নাতনি), যাদবপুর কেন্দ্রে তৃণমূলের নবাগত প্রার্থী অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী, এই কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী তৃণমূল থেকে আসা বর্তমান সাংসদ অনুপম হাজরা, সিপিআইএম প্রার্থী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য, বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী বসিরহাট কেন্দ্রে তৃণমূলের আরেক অভিনেত্রী প্রার্থী নুসরাত জাহান, তার বিরুদ্ধে বিজেপির প্রার্থী দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু। গতবার এই ৯ টি কেন্দ্রেই জয়ী হয়েছিল তৃণমূলের প্রার্থীরা। 

উল্লেখ্য, আজ সপ্তম দফার মধ্যে দিয়েই শেষ হবে গত ৩৯ দিন ধরে চলা বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশের সর্বশ্রেষ্ঠ উৎসবের। গণনা ২৩ মে। 


বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর