ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার নামের আদ্যক্ষর নিয়ে গঠিত ব্রিক্স জোটের প্রতিষ্ঠিত নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এনডিবি) সদস্য হওয়ার বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এবং এনডিবির প্রেসিডেন্ট মার্কোস প্রাদো ট্রয়জোর ভার্চুয়াল সভা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার এই সভা হয়।
অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে। সভায় বাংলাদেশ সরকারের অর্থ বিভাগ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ এবং এনডিবির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন। সভার শুরুতে বাংলাদেশ সরকারের অর্থমন্ত্রী এনডিবির প্রেসিডেন্টকে ভার্চুয়াল সভায় অংশগ্রহণ করার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
অর্থমন্ত্রী ও এনডিবির প্রেসিডেন্টের মধ্যে পারস্পারিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলাপ আলোচনা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী বাংলাদেশের গত ১২ বছরের অভাবনীয় অর্জন অবহিত করে বলেন, সদস্য পদের জন্য যেসব শর্ত রয়েছে, তার সবগুলোই বাংলাদেশের রয়েছে। তাই আশাবাদ ব্যক্ত করছি, অচিরেই বাংলাদেশ এনডিবির সদস্য পদ অর্জন করতে পারবে।
এনডিবির প্রেসিডেন্টও বাংলাদেশের অগ্রগতির বিষয়ে একমত পোষণ করেন। তিনি সক্রিয়ভাবে বাংলাদেশর প্রস্তাব বিবেচনা করেন। অতি দ্রুতই পরিবারসহ বাংলাদেশ সফর করবেন বলে আশা ব্যক্ত করেন।
এনডিবির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ২০১৫ সালের ২১ জুলাই। ব্যাংকটির মোট মূলধন ১০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার। আর প্রাথমিক মূলধন ৫ হাজার কোটি ডলার। ২০১৬ সাল হতে এনডিবি অবকাঠামো ও টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে ব্রিক্সভুক্ত দেশে ১.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ প্রদান করেছে। তাছাড়া, ব্যাংকটি অবকাঠামো, সেচ, পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা, পয়োনিষ্কাশন, সবুজ জ্বালানি ও নগর উন্নয়ন খাতসংশ্লিষ্ট প্রকল্প বাস্তবায়নে ঋণ প্রদান করে থাকে।
ইতোমধ্যে কোভিড-১৯ মহামারির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার লক্ষ্যে সদস্য রাষ্টগুলোর কার্যক্রমে ব্যাংকটি অংশগ্রহণ করছে। ২০২০ সালে ব্যাংকটি একসাথে ৭২টি প্রকল্পে ২৫.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ প্রদানের অনুমোদন দিয়েছে। এনডিবির সদস্যপদ অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্য ব্যাংকের পণ্য ও পরিষেবা ক্রয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণ, সহনীয় সুদ হারে ঋণ নেওয়ার সুযোগ তৈরি; ব্যাংকের কৌশল, নীতি, পদ্ধতি ও কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুযোগ এবং সদস্য দেশের নাগরিকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।
২০২৬ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হওয়ার পর সহজ শর্তে ঋণ পাওয়ার সুযোগটি সীমিত হয়ে যাবে। তাছাড়া পাঁচ বছর মেয়াদি ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০২১-২০২৫), টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি), ভিশন-২০৪১, ডেল্টাপ্ল্যান বাস্তবায়ন এবং কোভিড-১৯ পরবর্তী চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলার লক্ষ্যে এনডিবি বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন অর্থায়নের উৎস হিসেবে সূচনা করবে বলে আশা করা যায়।
আজ ভার্চুয়াল সভায় বাংলাদেশ সরকারের অর্থমন্ত্রী এবং এনডিবির প্রেসিডেন্টের মধ্যে এনডিবিতে বাংলাদেশের ভূমিকা, নতুন ব্যাংকের ঋণের শর্তাবলিসহ বিনিয়োগ খাত, অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়। পরবর্তীতে এনডিবির সদস্যভুক্তির মূল কার্যক্রমে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে একটি কারিগরি কমিটি গঠন করা হবে। এ বিষয়ে পরবর্তীতে বিশদভাবে আলোচনা করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ