পৃথিবীতে কত ধরণের পুরষ্কারের ব্যাবস্থা আছে। সেরা মিউজিসিয়ান, সেরা অভিনেতা, সেরা অভিনেত্রী, সেরা অভিনেতা থেকে শুরু করে সেরা কর্মকর্তা পর্যন্ত চলে এই পুরষ্কারের ধারা। প্রতি বছর সেরা ব্যাক্তিকে তার নিজ নিজ ক্যাটাগরিতে এই পুরষ্কারে ভূষিত করা হয়। এবার এই ক্যাটাগরিতে যোগ করা হল বার ট্যান্ডার বা পানশালা কর্মীদের।
বার কর্মীদের কাজকে যথাযথ মূল্যায়ন আর মর্যাদা দেয়ার লক্ষ্যেই সেরা বার টেন্ডার অফ দ্য ইয়ার এর পুরষ্কারের ব্যাবস্থা করা হয়েছে। বেস্ট বার টেন্ডার অফ দ্য অর্থাত বিশ্বের সেরা পানশালা কর্মীর পুরস্কার। আর এই ক্যাটাগরিতে ছেলেদের সঙ্গে সমান তালে পাল্লা দিয়ে প্রতিযোগিতায় সেরার সেরা হলেন এক নারী বার টেন্ডার। আর সেই বার টেন্ডারের নাম জেনিফার লে নিশে। তিনি ফ্রান্সের নাগরিক। জেনিফার লে নিশে আবারও প্রমাণ করলেন, পুরুষদের থেকে কোনও অংশেই কম নয় নারীরা।
মায়াবী নীল আলো, তার সাথে DJ-র রকিং মিউজিক। ডান্স ফ্লোরে যৌবনোচ্ছ্বাসের সবার ভরপুর প্রকাশ। এসব কিছুই যে কোনও নাইট ক্লাব কিম্বা পানশালায় চিরায়ত চিত্র। উন্মাদনার জোয়ারে গা ভাসিয়ে দেন সেখানকার কর্মীরাও। শুধু অতিথিদের গ্লাসে উষ্ণতা পৌছে দেওয়াই নয়। কখনও আগুন নিয়ে খেলা তো কখনও বোতল নিয়ে জাগলারি। পানশালা কর্মীদের রকমসকমও নজরকাড়া, শুধু পুরুষরাই নন। এখন এই পেশায় যুক্ত মহিলারাও হাতের কারসাজিতে সমান পারদর্শী।
অথচ এই সব পানশালা কর্মীদের এই শিল্পকলা যেন সকলের অলক্ষেই থেকে যায়। আবার অনেকেই এদের এই পরিশ্রম আর কাজ কে কাজের ভেতরেই গণ্য করেন নাহ। তাই ২০০৮ সাল থেকে পানশালা কর্মীদের শ্রেষ্ঠত্ব বিচার করে, তাদের পুরস্কৃত করে বিশ্বের জনপ্রিয় একটি মদ প্রস্তুতকারক সংস্থা। সেখানে বার টেন্ডারদের খুব কম সময়ে পানীয় তৈরির দক্ষতা, নিখুত পরিবেশন এবং মানসিকতা এই তিন বিষয়ে বিবেচনা করে বিচার করা হয়।
৮ বছর ধরে এই প্রতিযোগিতা চলছে। চলতি বছর প্রাথমিক পর্বে ইউরোপ, আমেরিকা, মধ্য এশিয়া, আফ্রিকা এবং অস্ট্রেলিয়ার মোট ১০ হাজার প্রতিযোগী অংশ নিয়েছিলেন। দ্বিতীয় রাউন্ডে ৫৬টি দেশের প্রতিযোগীকে বেছে নেওয়া হয়।
চার দিন ধরে মায়ামি বিচের একটি রিসর্টে বিচারকদের সামনে নিজেদের দক্ষতা জাহির করেন প্রতিযোগীরা। সেখান থেকেই চূড়ান্ত পর্বের জন্য নির্বাচিত হন ছজন।
শেষবেলায় সকলকে ছাপিয়ে সেরার সেরা হলেন ফ্রান্সের জেনিফার লে নিশে। ২৯ বছরের এই তরুণীর পারফর্ম্যান্সে খুশি আয়োজকরা। জেনিফার লে নিশে নিজে জানালেন, "প্রথম মহিলা হিসেবে আমি এই প্রতিযোগিতা জিতলাম। আমি তারজন্য প্রচণ্ড পরিশ্রম করেছিলাম"।
চূড়ান্ত পর্বের জন্য মিয়ামির একটি ফিল্ম স্টুডিও ভাড়া নিয়েছিল এই সংস্থা। সেখানে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যেক প্রতিযোগীকে একটি ক্ষুদ্র পানশালা তৈরি করতে বলা হয়েছিল। সব কাজেই পুরুষ প্রতিযোগীদের থেকে এক ধাপ এগিয়ে ছিলেন বাস্তিলের একটি পানশালার এই নারীকর্মী।
বিডি-প্রতিদিন/৮ অক্টোবর, ২০১৬/তাফসীর