শরীর, মন, স্মৃতিতে যখন সময়ের থাবা বসে, তখন চেনা মানুষটাও অনেকটা অচেনা হয়ে যায়। কিন্তু সময়ের এই চেনা খেলাটা এক বৃদ্ধাকে জব্দ করতে পারেনি। বরং তিনিই জব্দ করে ছেড়েছেন এই সময়কে। তাই তো ৮৯ বছর বয়সেও তিনি অস্ত্রোপচার করেন নিয়ম করে। তাও দিনে একটা নয়। চার–চারটে। বলছিলাম ৮৯ বছরের বৃদ্ধা আল্লা ইলিইনিচানা লেভুশকিনার কথা।
আল্লা ইলিইনিচানা লেভুশকিনা একজন পেশায় চিকিৎসক। আরও ভালোভাবে বললে, শল্যচিকিৎসক। রাশিয়ার মস্কোতে রায়াজান সিটি হাসপাতালে চাকরি করেন। ১৯৫০ সাল থেকে শল্যচিকিৎসক হিসেবে কাজ করছেন আল্লা। সেই হিসেবে ৬৭ বছরের কর্মজীবন তার। কিন্তু ক্লান্তি কখনও গ্রাস করেনি তাকে। উল্টে নিজের কাজটা হাসিমুখেই সারেন এই বৃদ্ধা। এই বৃদ্ধা অবিবাহিত একজন নারী। তবে নিঃসঙ্গ নন। ফ্ল্যাটে মানসিক ভারসাম্য হারানো এক ভাইপো আর আটটি বিড়াল নিয়ে তার সংসার।
চোখে মোটা কালো ফ্রেমের চশমা, কুঁচকে যাওয়া চামড়া, ন্যুব্জ শরীর। কিন্তু দৃষ্টি প্রখর। মনের জোর তার চেয়েও বেশি। আর এই জোরেই ৮৯ বছর বয়সেও অস্ত্রোপচার করার সাহস দেখান। তাও দিনে চারটে করে। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বয়সের কর্মরত শল্যচিকিৎসক এই মুহূর্তে তিনি।
কী করে পারেন এখনও কাজ করতে, ক্লান্ত লাগে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি চাকরি করি। অন্য কাজও করি। অবসর নিয়ে কী করব? ডাক্তারি করা শুধু তো পেশা নয়। জীবনকে বাঁচিয়ে রাখার কারিগর একজন ডাক্তার। একজন শল্যচিকিৎসক যদি অস্ত্রোপচারই না করল, তা হলে সে কী করবে? বহু বছর আগে আমি এমন অনেককে বাঁচিয়েছি, যাদের অস্ত্রোপচার করতে কেউ চায়নি। আমি সাহস নিয়ে করেছিলাম। আর করেছিলাম বলেই তারা বেঁচে আছে।’
বিডি-প্রতিদিন/ ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭/ আব্দুল্লাহ সিফাত-১
