ঘন অরণ্য। তার বুক চিরে পিচের রাস্তা। সেই রাস্তায় অন্যান্য দিনের মতোই মোটরসাইকেল চড়ে যাচ্ছিলেন বন দফতরের দুই কর্মী। হঠাৎ জঙ্গলের ভিতর থেকে বেরিয়ে এল বিশালাকায় রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। পুরোদস্তুর শিকার ধরার ভঙ্গিমায় বিদ্যুৎগতিতে তাড়াও করল বাইকের পিছনে। লোমহর্ষক এই ঘটনার ভিডিও ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়।
ভয়ানক এই ঘটনাটি ভারতের কেরালার মুথাঙ্গা অভয়ারণ্যের। অরণ্য ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সোসাইটির ফেসবুক পেজে প্রথম এই ভিডিও প্রকাশ্যে আসে। ভিডিওয়তে দেখা যাচ্ছে, মোটরসাইকেলে বেশ দ্রুতগতিতেই যাচ্ছেন আরোহীরা। এমন সময়ে সাংঘাতিক দ্রুতগতিতে সম্পূর্ণ শিকার ধরার কায়দায় জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসছে একটি বিশালাকায় বাঘ।
চোখের পলকে সেই বাঘ চলে এল চওড়া পিচ রাস্তায়। মোটরসাইকেল প্রায় ছুঁই ছুঁই এমন অবস্থা। তবে বাইক চালকের তৎপরতায় রণে ভঙ্গ দিল বাঘটি। পথ থেকে বেরিয়ে নিমেষে পাড়ি দিল গভীর অরণ্যে। পুরো ঘটনাই মোটরসাইকেলের পেছনের সিটে বসে নিজের ফোনে ভিডিও করেছেন ওই বনদপ্তরের কর্মী।
এই ভিডিও প্রকাশ্যে আসার সঙ্গে সঙ্গেই তা ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। অনেকেই গত বছর মহারাষ্ট্রের তাদুবা আন্ধারি ব্যাঘ্র প্রকল্পে বাঘের জিপ তাড়া করার সঙ্গে এই ঘটনার তুলনা করেন। বাঘটি ওই দুই বনকর্মীকে ধরে ফেললে কি হতে পারত, তাই ভেবেও শিউরে উঠছেন অনেকে।
বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণত মানুষের সংস্পর্শ এড়িয়েই চলে বাঘ। এভাবে মোটরসাইকেলের পিছনে তাড়া করার ক্ষেত্রে থাকতে পারে একাধিক কারণ। সাধারণত, প্রজননের সময়ে হিংস্র হয়ে যায় বাঘ। আবার, বয়সজনিত বা অন্য কোনও কারণে দূর্বল হয়ে পড়লে বাঘ হরিণ বা অন্যান্য দ্রুতগতির জন্তু শিকার করতে পারে না। সে ক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত সহজ শিকার হিসাবে মানুষকে বেছে নেয় বাঘ। এছাড়া কোনো কারণে সন্তানদের বিপদের আশঙ্কা করলেও মানুষকে আক্রমণ করতে পারে মা বাঘ।
কারণ যাই হোক, জঙ্গলে যে ওরাই রাজা, তা এক কথায় স্বীকার করে নিয়েছে নেটিজেনরা। সাক্ষাত মৃত্যুর মুখেও যেভাবে ভিডিও করেছেন ওই বন দফতরের কর্মী, সেজন্য তার অনেক প্রশংসা চলছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
বিডি-প্রতিদিন/ তাফসীর আব্দুল্লাহ
