চীনের ৪৪ বছর বয়সী লি জিলি বিগত ২০ বছর ধরে দেশের জনপ্রিয় মসলাদার খাবার লাতিওর স্বাদ পরীক্ষা এবং স্বাদের প্রকার ও বৈচিত্র্য বৃদ্ধিতে কাজ করছেন। নিজের কাজের প্রতি এতটাই নিবেদিত তিনি যে দিনের প্রধান খাবার হিসেবে লাতিওই খান এবং অন্য কোনো মসলাদার খাবার, ধূমপান বা মদ্যপান করেন না, যেন তার স্বাদগ্রন্থি সবসময় সতেজ থাকে।
চীনে লাতিও মূলত নাশতা হিসেবে খাওয়া হয়, যা সাদা আটা ও নানা রকম মসলাদার সস দিয়ে তৈরি করা হয়।
মধ্যচীনের হেনান প্রদেশের জিয়ালং লাতিও কারখানায় গবেষণা ও উন্নয়ন গবেষক হিসেবে কাজ করেন লি। তিনি প্রতিদিন প্রায় ৪০টি লাতিও খেয়ে এর স্বাদ পরীক্ষা করেন এবং নতুন স্বাদ তৈরি করতে সহায়তা করেন।
সম্প্রতি মধ্যচীনের হুনান প্রদেশের লাতিও জাদুঘর একজন খণ্ডকালীন কর্মীকে লাতিও খেয়ে সেটির স্বাদ বর্ণনা করার জন্য দিনে ১ হাজার ৮৮৮ ইউয়ান (২৬০ মার্কিন ডলার) দেওয়ার ঘোষণা দেয়। এই সংবাদে মানুষ লির কাজ সম্পর্কে জানতে পারেন এবং তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যান।
লি ইতিমধ্যে তার কোম্পানির জন্য এক ডজনের বেশি নতুন স্বাদের লাতিও উদ্ভাবন করেছেন।
বিভিন্ন কোম্পানি থেকে লি-কে নিয়োগ দিতে লোভনীয় সব প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। এমনকি বছরে ১০ লাখ ইউয়ান (১ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার) বেতনের প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছিল তাকে। কিন্তু লি সেই প্রস্তাবও ফিরিয়ে দেন, কারণ তিনি যেসব নতুন নতুন স্বাদ উদ্ভাবন করেছেন, সেগুলো তার কোম্পানির গোপনীয় বিষয়।
দক্ষিণ চীনের হুনান প্রদেশের পিংজিয়াংয়ে জন্ম লির, যেখানেই লাতিওর উৎপত্তি। লির পরিবার মসলাদার মটরশুঁটিযুক্ত দই বিক্রির ব্যবসা করত। অল্প বয়সেই তিনি নানা ধরনের মরিচের স্বাদ পরীক্ষা করে দেখেছেন।
ল্যান্ডস্কেপ আর্কিটেকচারে লেখাপড়া করা লি পরে পারিবারিক ব্যবসায় বাবাকে সহায়তা করার জন্য বাড়িতে ফিরে আসেন। তবে, একসময় তিনি আরও বড় চ্যালেঞ্জ নিতে বাড়ি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং লাতিও নিয়ে কাজ শুরু করেন।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল