ব্র্যাক ব্যাংকের সাসটেইনেবিলিটি রিপোর্ট ২০২৩ প্রকাশ
‘ব্লুম ইনটু দ্যা ফিউচার’ থিম নিয়ে সাসটেইনেবিলিটি রিপোর্ট ২০২৩ প্রকাশ করেছে ব্র্যাক ব্যাংক। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নূরুন নাহার। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারপারসন মেহেরিয়ার এম. হাসান, এমডি অ্যান্ড সিইও সেলিম রেজা ফরহাদ হোসেন, ডিএমডি অ্যান্ড সিওও সাব্বির হোসেন, ব্র্যাক ব্যাংকের করপোরেট ও এসএমই ক্লায়েন্ট, স্টেকহোল্ডার এবং অন্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
এ রিপোর্টটি টেকসই ভবিষ্যতের প্রতি ব্র্যাক ব্যাংকের অবিচল প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে, যা গ্লোবাল রিপোর্টিং ইনিশিয়েটিভ (জিআরআই) ফ্রেমওয়ার্ক অনুসরণ করে তৈরি করা হয়েছে। পরিবেশ, সমাজ এবং সুশাসনের (ইএসজি) ওপর গুরুত্ব দিয়ে রিপোর্টটি ব্যাংকটির টেকসই কৌশল সম্পর্কে সার্বিক ধারণা প্রদান করে। সাসটেইনেবিলিটি রিপোর্ট প্রকাশের মাধ্যমে ব্র্যাক ব্যাংক বাংলাদেশের আর্থিক খাতে পরিবেশগত দায়বদ্ধতার ক্ষেত্রে পথিকৃৎ হিসেবে ব্যাংকটির অবস্থান আরও শক্তিশালী করেছে। স্বচ্ছতা এবং টেকসই অনুশীলনের মাধ্যমে দায়িত্বশীল অর্থায়ন, সুশাসন এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ব্যাংকটির ব্যক্ত করা প্রতিশ্রুতি ফুটে উঠেছে। ব্র্যাক ব্যাংকের টেকসই এজেন্ডা প্রকাশ এবং টেকসই নিয়ে বিভিন্ন উদ্যোগের ব্যাপক প্রশংসা করে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “আমি বাংলাদেশে এমন এক ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখি, যেখানে শহুরে পরিকল্পনা থেকে শুরু করে কৃষি পরিকল্পনা, যেমন সবুজ অর্থায়ন, সার্কুলার ইকোনমি প্র্যাকটিস এবং টেকসই প্রযুক্তির মতো উদ্ভাবনী সল্যুশনে প্রাধান্য দেওয়া হবে। এ লক্ষ্যে ব্র্যাক ব্যাংক ইতোমধ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সবুজ অর্থায়ন বিষয়ে ব্র্যাক ব্যাংকের গৃহীত উদ্যোগগুলো অন্য যেসব প্রতিষ্ঠান সবুজ অর্থায়ন এবং টেকসই অর্থনীতিতে অবদান রাখতে চায়, সেসব প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি আদর্শ মডেল হিসেবে কাজ করতে পারে।” দেশের ব্যাংকগুলোর মধ্যে সাসটেইনেবিলিটি বিষয়ে রিপোর্ট প্রকাশের সংস্কৃতির প্রসারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রচেষ্টার ওপর জোর দিয়ে নূরুন নাহার বলেন, “সাসটেইনেবিলিটি রেটিং শুধু একটি ব্যাংকের পারফর্ম্যান্সের পরিমাপকই নয়, বরং তা দীর্ঘমেয়াদী প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে ব্যাংকটির নেওয়া নানান উদ্যোগ, যা অর্থনৈতিক অগ্রগতি, পরিবেশ সুরক্ষা এবং সামাজিক দায়বদ্ধতার বিষয়গুলোও তুলে ধরে। বাংলাদেশ ব্যাংকে আমরা বিশ্বাস করি, একটি শক্তিশালী এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে ব্যাংকিং প্র্যাকটিসে টেকসইতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।”
মেহেরিয়ার এম. হাসান বলেন, “আধুনিক ব্যাংকিং জগতে টেকসইতা এখন আর শুধু একটি পছন্দই নয়, বরং গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও। বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়- উভয় ক্ষেত্রেই টেকসই ব্যাংকিং প্র্যাকটিসের প্রসারে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পেরে ব্র্যাক ব্যাংক গর্বিত।” তিনি আরও বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি, আর্থিক খাতকে অবশ্যই মানুষ, পৃথিবী এবং দীর্ঘমেয়াদী সমৃদ্ধির উদ্দেশ্য পূরণ করতে হবে। আমাদের এই রিপোর্টে সাসটেইনেবিলিটি বিষয়ে আমাদের ব্যাংকের উদ্দেশ্য এবং কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।” সেলিম রেজা ফরহাদ হোসেন বলেন, “আমাদের রিপোর্টটি মূল্যবোধ-ভিত্তিক, দায়িত্বশীল এবং টেকসই ব্যাংকিং প্র্যাকটিসের প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। সামাজিক এবং পরিবেশগত বিষয় বিবেচনা করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রসারে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের রিপোর্টের এই বছরের থিম ‘ব্লুম ইনটু দ্য ফিউচার’ একটি সমৃদ্ধ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যতের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন, যেখানে টেকসইতা এবং আর্থিক সমৃদ্ধি পাশাপাশি অবস্থান করে। আমরা শুধু একটি ব্যাংক হিসেবেই বড় হচ্ছি না, বরং আমরা একটি বৃহৎ উদ্দেশ্য পূরণের লক্ষ্যে ব্যাংকিং খাতের ভবিষ্যতকেও নতুন রূপ দিচ্ছি।” -বিজ্ঞপ্তি
আইডিএলসি ফাইন্যান্সের প্রথম প্রান্তিকে নিট মুনাফা বৃদ্ধি
আইডিএলসি ফাইন্যান্স পিএলসির ২০২৪ সালের প্রথম তিন প্রান্তিকের কর পরবর্তী একত্রিত (কনসোলিডেটেড) নিট মুনাফা হয়েছে। ১২৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা। যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৫.৩০% বেশি। শেয়ার প্রতি আয়ও ২৫.৩০% বেড়ে ৩.০২ টাকা হয়েছে। ৯ মাসে, আমানত ২০২৩ সালের তুলনায় ২.৩০% বেড়ে ৮,২৩২ কোটি টাকা হয়েছে। লোন পোর্টফোলিও ১১,১৬৫ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশি ও আন্তর্জাতিক নানা অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও, আইডিএলসি তার বার্ষিক আরওএ (ROA) ১.১৪% এবং আরওই (ROE) ৮.৬৫% বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে (যা গত বছরের একই সময়ে যথাক্রমে ০.৮৮% এবং ৭.২৯% ছিল)।
সেপ্টেম্বরের শেষে মন্দ ঋণ (এনপিএল) গত বছরের তুলনায় সামান্য বৃদ্ধি পেয়ে ৪.৯৮% হয়েছে, যা আর্থিক খাতের গড়ের চেয়ে অনেক কম। এর পাশাপাশি ১০০.৭২% মন্দ ঋণ কভারেজ অনুপাত বজায় রেখেছে যা ভবিষ্যৎ ঋণ সংক্রান্ত লোকসানের ঝুঁকি মোকাবিলায় গ্রুপটির সুদৃঢ় অবস্থান নিশ্চিত করেছে। আইডিএলসির পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান - আইডিএলসি সিকিউরিটিজ লিমিটেড, আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড এবং আইডিএলসি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড তৃতীয় প্রান্তিক শেষে খুবই শক্তিশালী ফলাফল প্রদর্শন করেছে, যা গ্রুপের ইতিবাচক ফলাফলে অবদান রেখেছে।
আইডিএলসি ফাইন্যান্স পিএলসি-এর সিইও এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম জামাল উদ্দিন তাদের আর্থিক ফলাফলের উপর সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ের রাজনৈতিক পট পরিবর্তন এবং নানা সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবন্ধকতার মাঝেও নয় মাসের এই ভালো আর্থিক ফলাফল আমাদের ব্যবসায়িক দক্ষতা, সততা এবং সুশাসনেরই প্রতিফলন যা যুগের পর যুগের আমাদের আর্থিক সাফল্যের মূলমন্ত্র। যার ফলশ্রূতিতে আমাদের পরিচালন আয় ১১.৩২% বৃদ্ধি পেয়ে ৫২৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা হয়েছে, যেখানে পরিচালন ব্যয় বেড়েছে মাত্র ২.১৮%।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা আমাদের এই অগ্রগতি বজায় রাখতে এবং ভবিষ্যতে আমাদের শেয়ারহোল্ডারদের জন্য আশানুরূপ ফলাফল অর্জন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” জামাল উদ্দিন ভবিষ্যতের সাফল্যের জন্য মূল কৌশলের ব্যাপারে বলেন, “ভবিষ্যতে মুনাফা মার্জিন চাপে থাকা এবং প্রতিযোগিতা তীব্র হওয়ার সত্ত্বেও, আর্থিক প্রতিষ্ঠানদের ভবিষ্যত সাফল্য নির্ভর করবে তারা কীভাবে গ্রাহক সেবা, পোর্টফোলিও মান এবং পরিচালন দক্ষতা উন্নত করতে পারে তার উপর। আইডিএলসি-তে আমরা এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমাদের উদ্যোগগুলি ক্রমাগত উন্নত করছি এবং আশা করি যে এই উদ্যোগগুলি আগামী বছরগুলিতে প্রতিযোগিতার মধ্যেও আমাদের আলাদা করবে।” তিনি কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদকে তাদের দিকনির্দেশনার জন্য এবং গ্রাহক ও অংশীদারদের কোম্পানির প্রতি তাদের অব্যাহত আস্থার জন্য কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। - বিজ্ঞপ্তি