আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত বুঝিনা। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিচার করতে হবে। এই খুনের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের ফাঁসির মঞ্চে দেখতে চাই বলেছেন ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী।
আজ শনিবার ফেনীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রহমান বিকম এর সভাপতিত্বে ফুলগাজী উপজেলার চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপিত একরামুল হক একরামকে নৃশংসভাবে হত্যার প্রতিবাদে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য জাহানার বেগম সুরমা, জেলা পরিষদের প্রশাসক আজিজ আহম্মদ চেৌধুরী, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ফেনী পৌরসভার মেয়র হাজী আলাউদ্দিন, ফেনী জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মীর আবদুল হান্নানসহ বিভিন্ন উপজেলার চেয়ারম্যান ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
নিজাম হাজারী তার বক্তব্যে জানান, অতীতে ফেনীতে অনেক খুন হয়েছে। তারা রক্ষাও পেয়েছে। এই খুনের প্রশ্রয় দেয়া হবে না। এই খুনকে প্রশ্রয় দেয়া হলে ভবিষ্যতে আরো অনেক খুন হবে। ষড়যন্ত্রকারীরা এই খুনের সঙ্গে আমাকে জড়িয়ে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্টনিক মিডিয়ায় মিথ্যা তথ্য দিচ্ছেন। তদন্তে যদি এই খুনের সঙ্গে আমার কোন সম্পৃক্ততা পাওয় যায় আমাকেও আইনের আওতায় আনা হউক। আমি আইনের ঊর্ধ্বে নই।
তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা চাচ্ছেন আমাকে এই খুনের সঙ্গে জড়িত করে ফেনী থেকে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে। অতীতে যারা ক্ষমতায় ছিলেন তারা শুধু সন্ত্রাসে ব্যস্ত ছিলেন। আমি সাধারণ মানুষকে নিয়ে চিন্তা করায় এবং ফেনীকে আধুনিক ফেনীতে রূপান্তর করার পথে থাকায় আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে।
নিজাম হাজারী ষড়যন্ত্রকারীদের হুঁশিয়ারি করে বলেন, নিজাম হাজীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে কোন লাভ হবে না। তদন্তে যাদের নাম বের হয়ে আসবে সে যেই হোক তাকে আইনের আওতায় আনা হবে বলেও তিনি জানান।
ফুলগাজীবাসীকে ধৈর্য্য ধরার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আজ তো একরামের স্মরণেই এই প্রতিবাদ সভা। সভায় আসার পথে যারা ফুলগাজী সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে বাধা দিয়েছে তারা কারা সকলকে বুঝতে হবে। তারা বিএনপি-জামায়াত ছাড়া অন্য কেউ নয়। এই মামলায় অনেকে গ্রেফতার হয়েছে, যারা এখনও গ্রেফতার হননি তাদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ও জানান নিজাম হাজারী।
এদিকে, ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিবাদ সভায় যোগ দেননি ফুলগাজী উপজেলা ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও একরাম সমর্থকরা। ফেনীতে একরাম হত্যার ঘটনায় জেলা আওয়ামী লীগের শোক সভা বর্জন করে ফুলগাজীতে ছাত্রলীগ ও একরাম সমর্থকদের গাছের গুড়ি ফেলে ফেনী-পরশুরাম সড়ক অবরোধ করেছে। এসময় তারা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরন করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।
আজ শনিবার বিকেল তিনটার দিকে ফুলগাজী উপজেলা পুরাতন মুন্সীর হাট, নতুন মুন্সীর হাট, ফুলগাজী বাজারসহ ৮-১০টি স্থানে গাছের গুঁড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করে স্থানীয় ছাত্রলীগ ও একরাম সমর্থকরা। এসময় তারা ফেনী-পরশুরাম সড়কের একাধিক স্থানে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে ও ককটেল বিস্ফোরণ করে যানচলাচল বন্ধ করে দেয়। ফুলগাজী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও বিক্ষোভকারীরা সড়ক থেকে সরে যায়নি। বিকেল ৩টার পর থেকে ফুলগাজীর সঙ্গে ফেনী-পরশুরাম সড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের প্রতিবাদ সভা শেষ হওযার পর তারা ব্যারিকেড তুলে নেয়।
অন্যদিকে, একরাম হত্যায় রিমান্ডে থাকা তিন আসামিকে ১৬৪ ধারা জবানবন্দি দিতে আজ বিকালে আদালতে নিয়েছে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফেনী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ। ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে যাওয়া আসামিরা হলেন: শিফাত, সৈকত ও শিফন।