কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় নতুন মাইলফলক ছুঁয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার তা প্রথমবারের মতো দুই হাজার ৩০০ কোটি (২৩ বিলিয়ন) ডলার ছাড়িয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম ১৩ দিনে ৫৯ কোটি ৭৯ লাখ ডলারের রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
তবে চলমান রাজনৈতিক সহিংসতার মধ্যেও ব্যাংক রিজার্ভের এ রেকর্ডকে সমালোচনার দৃষ্টিতে দেখছেন অর্থনীতিবিদদের অনেকে।
এ ব্যাপারে সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, চলমান সহিংসতার মধ্যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি কোন সুখবর নয়। উল্টো বলা যায় সহিংসতার কারণেই রিজার্ভ বেড়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে রেমিটেন্স প্রবৃদ্ধি ভাল। তবে এটা আহামরি নয়। মূলত আমদানি কমে যাওয়ায় বৈদেশিক রিজার্ভ বেড়েছে। রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে একদিকে চূড়ান্ত পণ্য রপ্তানি কমে গেছে। অন্যদিকে ক্যাপিটাল গুডস ও শিল্পের কাঁচামাল আমদানি কমে গেছে। এসব পন্য আমদানি কমে যাওয়ার অর্থ দেশের উৎপাদন সক্ষমতার পুরোটা ব্যবহার হচ্ছে না। অনেক শিল্প-কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক কারখানা উৎপাদন কমিয়েছে। ভোক্তাপণ্য কম উৎপাদিত হচ্ছে। এছাড়া আমদানি-রপ্তানির এ নাজুক পরিস্থিতিতে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারে ভারসাম্য রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংকও কিছু ডলার কিনেছে। এসব কারণে ব্যাংক রিজার্ভ বেড়েছে।
বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবার রিজার্ভ ২২ বিলিয়ন ছাড়ায় গত বছরের ৭ অগাস্ট। আকুর বিল পরিশোধের পর তা কমে যায়। কয়েক দফা ওঠানামার পর গত ২৮ জানুয়ারি রিজার্ভ আবার ২২ বিলিয়ন ডলার ছাড়ালে গভর্নর আতিউর রহমান বলেছিলেন, 'রাজনৈতিক অস্থিরতায় অর্থনীতির সব খাতই যখন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তখন রিজার্ভ ২২ বিলিয়ন ডলারের বেশি থাকা একটি স্বস্তির খবর।'
বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেক্স রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মহাব্যবস্থাপক কাজী ছাইদুর রহমান বলেন, রপ্তানি আয় ও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স প্রবাহ স্থিতিশলী থাকায় এই মইল ফলকে পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে। প্রতি মাসে ৩ বিলিয়ন ডলার আমদানি ব্যয় হিসেবে এই রিজার্ভ দিয়ে সাত মাসের বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব বলে জানান তিনি।
বিডি-প্রতিদিন/২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫/ এস আহমেদ