বাংলাদেশ-ভারতের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত কমিটির জনগণনায় ছিটমহলে বাদপড়াদের বিষয়ে আগস্টে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার। এ ছাড়া যাদের নাম জরিপে আছে কিন্তু কারাগারে আছেন, কমিটির কাছে নাগরিকত্বের বিষয়ে মতামত জানাতে পারেননি-তাদের তাদের ইচ্ছা-অনিচ্ছাও জানা হবে। বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র বিষয়টি জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ২০১১ সালের জরিপে যাদের নাম আছে কমিটি তাদের মতামত নিয়েছে। কমিটির কাছে ছিটের এসব বাসিন্দা নিজেদের নাগরিকত্ব নিয়ে ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, 'ওই জরিপে যারা বাদ পড়েছেন কিংবা গত ৫ বছর কী করেছেন, কোথায় ছিলেন এবং কেন বাদ পড়েছেন- এসব বিষয় পর্যালোচনা করে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। এই বিষয়ে আগামী মাসের শেষের দিকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।'
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, চলতি বছরের ৩১ জুলাই মধ্যরাতে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ছিটমহল বিনিময় হয়েছে বলে গণ্য করা হবে। ভূমি মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপনও জারি করবে।
এদিকে, এরই মধ্যে ছিটমহলের বাসিন্দাদের জরিপে গঠিত কমিটি জনগণনা শেষ করেছে। এতে দেখা যায়, ছিটমহলের অধিকাংশই যে দেশে বসবাস করছেন তারা সেই দেশের নাগরিকত্ব নিতে আগ্রহী। তবে অনেকে নাগরিকত্ব বদলেরও আগ্রহ দেখিয়েছেন।
বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ছিটমহল সমস্যা সমাধানে ১৯৭৪ সালের ১৬ মে দিল্লিতে একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি সই হয়। পরবর্তীতে ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে এ সংক্রান্ত একই প্রটোকল সই হয়। নানা চড়াই-উৎড়াই পেরিয়ে চলতি বছরের মে মাসে ভারতের পার্লামেন্টে স্থল সীমান্ত চুক্তি অনুমোদন দেওয়া হয়।
এরপর জুনে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের সময় ওই চুক্তির দলিলপত্র বিনিময় হয়। আর চুক্তি অনুসারে জুনের প্রথম সপ্তাহে ছিটমহল হস্তান্তরের রূপরেখা প্রণয়ন করে বাংলাদেশ-ভারত।
বাংলাদেশে ভারতের ১১১টি ছিটমহল আছে। এসব ছিটমহলে জমির পরিমাণ প্রায় ১৭ হাজার ১৬০ একর। আর ভারতের ভেতরে বাংলাদেশের ৫১ টি ছিটমহলে প্রায় ৭ হাজার ১১০ একর জমি রয়েছে। ছিটমহল বিনিময় সম্পন্ন হলে বাংলাদেশ প্রায় ১০ হাজার একর জমি বেশি পাবে।
বিডি-প্রতিদিন/২৭ জুলাই ২০১৫/শরীফ