কানাডীয় বহুজাতিক কোম্পানি নাইকোর দায়ের করা দুটি মামলার চূড়ান্ত শুনানি সোমবার আন্তর্জাতিক আদালত ইকসিডে (ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর সেটেলমেন্ট অব ইনভেস্টমেন্ট ডিসপিউট) শুরু হয়েছে। লন্ডনে ইকসিডের প্রধান কার্যালয়ে এ শুনানি আগামী ৭ নভেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।
ইকসিডের ওয়েবসাইটে এ তথ্য দেওয়া হয়েছে। শুনানিতে বহুজাতিক কোম্পানি নাইকোর সব অভিযোগের বিপরীতে প্রয়োজনীয় তথ্য উপাত্ত এবং যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করবে বাংলাদেশ।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, নাইকোর বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে জিততে চূড়ান্ত শুনানিতে আন্তর্জাতিক মানের আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। বাংলাদেশের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত আইন সংস্থা ফলি হোয়াগ এলএলপির আইনজীবী ডেরেক স্মিথ এবং ঢাকার আইনজীবী ব্যারিস্টার ইমতিয়াজউদ্দিন আহমেদ আসিফ ও মঈন গণি শুনানিতে অংশ নিয়েছেন।
এতোদিন পযন্ত নাইকোর মামলায় বাংলাদেশের পক্ষে শুনানিতে অংশগ্রহণ করে আসছিলেন সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডা. দীপু মনির স্বামী ব্যারিস্টার তৌফিক নেওয়াজ। এবার তাকে বাদ দিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছে সরকার।
সম্প্রতি এ প্রসঙ্গে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিষয়টি এড়িয়ে যান। তিনি বলেন, নাইকোর মামলায় বাংলাদেশ যাতে জিতে আসে সেজন্য আন্তর্জাতিক মানের আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, নাইকো বাপেক্স ও পেট্রোবাংলার বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছিল ইকসিডে। গত বছর একটি মামলার রায়ে নাইকোর আটকে রাখা ২৫ মিলিয়ন ডলার ফেরত দিতে বলেছে ইকসিড। তবে আমরা নষ্ট হওয়া গ্যাসের মূল্য বাবদ নাইকোর কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ চাই।
পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালের ৭ জানুয়ারি ও ২৪ জুন সুনামগঞ্জের টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্রে পর পর দুইটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ২০০৮ সালের ১৫ জুন নাইকোর কাছে ৭৪৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করে ঢাকার যুগ্ম জেলা জজ আদালতে মামলা দায়ের করে বাংলাদেশ সরকার ও পেট্রোবাংলা। এই মামলা চলাকালেই ২০১০ সালের জুলাইয়ে নাইকো আন্তর্জাতিক সালিসি প্রতিষ্ঠান ইকসিড ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশ সরকার, পেট্রোবাংলা ও বাপেক্সের বিরুদ্ধে পাল্টা দুইটি মামলা করে।
পরে সরকারের বিরুদ্ধে মামলার শুনানি ইকসিডের এখতিয়ার বহির্ভূত বলে পেট্রোবাংলা ও বাপেক্সের বিরুদ্ধে মামলার শুনানি গ্রহণ করা হয়। শুনানি শেষে গত বছর নাইকোর কাছ থেকে আটকে রাখা ২৫ মিলিয়ন ডলার ফেরত দেওয়ার আদেশ দেয় ইকসিড। অন্যদিকে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ওই দুর্ঘটনায় নষ্ট হওয়া বিপুল পরিমাণ গ্যাসের মূল্য বাবদ ক্ষতি পূরণ দাবি করা হয়। সোমবার থেকে ইকসিডে নাইকোর এ সংক্রান্ত মামলার শুনানি শুরু হয়।
বিডি-প্রতিদিন/০২ নভেম্বর ২০১৫/ এস আহমেদ