ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ও ১৬৭ ধারা অনুযায়ী বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার ও রিমান্ড বিষয়ে হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশনার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল খারিজ করে আপিল বিভাগের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৩৯৬ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করা হয়।
এর আগে, গত ২৪ মে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এই রায় দেন। তবে আপিল বিভাগ তখন বলেছিলেন, রায়ে কিছু মোডিফিকেশন করা হবে।
বেঞ্চের অপর তিন বিচারপতি হলেন সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও মির্জা হোসেইন হায়দার।
এর এক সপ্তাহ আগে গত ১৭ মে হাইকোর্টের দেওয়া রায় চ্যালেঞ্জ করে রাষ্ট্রপক্ষ যে আপিল করেছিল, তার শুনানি শেষে রায়ের জন্য ২৪ মে দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ।
হাইকোর্ট যেসব নির্দেশনা দিয়েছিলেন :
ক. আটকাদেশ (ডিটেনশন) দেওয়ার জন্য পুলিশ কাউকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করতে পারবে না।
খ. কাউকে গ্রেফতার করার সময় পুলিশ তার পরিচয়পত্র দেখাতে বাধ্য থাকবে।
গ. গ্রেফতারের তিন ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারকৃতকে এর কারণ জানাতে হবে।
ঘ. বাসা বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য স্থান থেকে গ্রেফতারকৃতর নিকটাত্মীয়কে এক ঘণ্টার মধ্যে টেলিফোন বা বিশেষ বার্তাবাহক মারফত বিষয়টি জানাতে হবে।
ঙ. গ্রেফতার ব্যক্তিকে তার পছন্দ অনুযায়ী আইনজীবী ও আত্মীয়দের সঙ্গে পরামর্শ করতে দিতে হবে।
চ. গ্রেফতার ব্যক্তিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন হলে ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি নিয়ে কারাগারের ভেতরে কাঁচের তৈরি বিশেষ কক্ষে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। ওই কক্ষের বাইরে তার আইনজীবী ও নিকটাত্মীয় থাকতে পারবেন।
ছ. জিজ্ঞাসাবাদের আগে ও পরে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে হবে।
জ. গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ উঠলে ম্যাজিস্ট্রেট সঙ্গে সঙ্গে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করবে। বোর্ড যদি বলে ওই ব্যক্তির ওপর নির্যাতন করা হয়েছে তাহলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ম্যাজিস্ট্রেট ব্যবস্থা নেবেন এবং তাকে দণ্ডবিধির ৩৩০ ধারায় অভিযুক্ত করা হবে।
বিডি-প্রতিদিন/১০ নভেম্বর, ২০১৬/মাহবুব
