'যুব শক্তিকে কাজে লাগিয়ে এজেন্ডা-২০৩০ সফলভাবে বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ সরকার'- আজ জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশন আয়োজিত ৬ষ্ঠ ইকোসক ইয়ুথ ফোরামে প্রদত্ত বক্তৃতায় যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ড. শ্রী বীরেন সিকদার এমপি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) বিভিন্ন খাতে বর্তমান সরকার যুবদেরকে সংশ্লিষ্ট রেখে লক্ষ্য নির্ধারণ ও বাস্তবায়ন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এছাড়া সরকার বিভিন্ন জাতীয় নীতি ও কর্মসূচিতে যুব উন্নয়ন বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে যাচ্ছে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের 'ইয়ুথ ফোরাম' যুবদের জন্য জাতিসংঘের একমাত্র প্লাটফরম যেখানে যুবকরা নীতি নির্ধারণী আলোচনায় অংশগ্রহণের সুযোগ পায়। এর মাধ্যমে যুবকরা সমন্বিতভাবে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান, নতুন নতুন ধারণার প্রবর্তন এবং সৃষ্টিশীল কাজে অবদান রাখতে পারে।
জাতিসংঘে অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশন আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্নের কথা তুলে ধরেন বলেন, জাতির পিতার প্রদর্শিত পথেই আমাদের যুবশক্তি দেশ গড়ার কাজে নিজেদেরকে নিয়োজিত করছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে সমাজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ যুবদের উন্নয়নে বর্তমান সরকারের নেওয়া বিভিন্ন প্রদক্ষেপের কথা প্রতিমন্ত্রী তার বক্তৃতায় উল্লেখ করেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় যুব নীতি অনুযায়ী ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী নাগরিক যুব যা দেশের জনগোষ্ঠীর এক-তৃতীয়াংশ। এই বিশাল জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন ব্যতীত দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়।
তিনি আরো বলেন, বেকার যুবদের কর্মমুখী করতে বর্তমান সরকার ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির আওতায় দুই বছরের জন্য বিভিন্ন পেশায় চাকুরির সুযোগ সৃষ্টি, যুবদের তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রদান, জাতীয় সংসদে যুব কল্যাণ তহবিল বিল ২০১৬ পাশসহ এ খাতে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করেছে। উদ্ভাবনে যুবদের উৎসাহ দিতে প্রধানমন্ত্রীর 'যুব উদ্ভাবনী তহবিল ২০১৫' চালু বাংলাদেশে যুব উন্নয়নে একটি মাইলফলক। যুব সমাজকে কর্মমুখী করতে প্রতি বছর আমরা আত্মকর্মসংস্থানে সফল যুবদের পুরস্কৃত করছি। দেশে প্রতিবছর পহেলা নভেম্বর জাতীয় যুব দিবস পালন করা হচ্ছে।
দারিদ্র্য বিমোচন, সমৃদ্ধি ও উন্নয়নে যুবদের ভূমিকা আরো বৃদ্ধি করতে প্রতিমন্ত্রী এ ফোরামে ৬টি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এগুলো হচ্ছে- ক) যুব সমাজকে দারিদ্র্য থেকে মুক্ত করে শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান, খ) যুব মহিলাদের কর্মমূখি করতে বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচি প্রণয়ন, গ) অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধীদের যুবদের যথাযথ গুরুত্ব প্রদান, ঘ) প্রযুক্তিগত উন্নয়নের সাথে যুবদেরকে সম্পৃক্ত করা, ঙ) বিশ্বের সকল যুবদের বিশেষায়িত জ্ঞান ও দক্ষতা উন্নয়নে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থা ও উন্নত দেশগুলোর আর্থিক সহায়তা প্রদান, চ) জাতিসংঘে যুবদের জন্য বিভিন্ন প্লাটফরম গড়ে তোলা যাতে তারা বৈশ্বিক নীতি প্রণয়নে অবদান রাখার সুযোগ পায়।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কস্থ জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ৩০ ও ৩১ জানুয়ারি দুই দিন ব্যাপী এই আন্তর্জাতিক ফোরাম অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিভিন্ন দেশের প্রায় ২৫ জন মন্ত্রীসহ যুব সংগঠনের প্রতিনিধিগণ এ ফোরামে অংশগ্রহণ করছেন।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার