হোমের মধ্যেই তার ওপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করল বাংলাদেশ থেকে ভারতে পালিয়ে আসা এক কিশোর। নির্যাতনের কারণে হোম ছেড়ে পালাতেও বাধ্য হয় ওই কিশোর। এরপর ভারতের ওড়িষ্যার পুরী থেকে ওই কিশোরকে উদ্ধার করে নিজেদের হেফাজতে রেখেছে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি (সিডব্লিউসি)।
কিশোরটির অভিযোগ পেয়ে খুরদা জেলার যাতনি এলাকার সরকার অনুমোদিত ওই হোমের বিরুদ্ধে পুরী ডিস্ট্রিক্ট চাইল্ড প্রোটেকশন অফিসার (ডিসিপিও)-কে এই ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের কথা বলেছে সিডব্লিউসি এবং আগামী তিন দিনের মধ্যে একটি তদন্ত রিপোর্টও জমা দিতে বলা হয়েছে। ডিসিপিও’এর কাছ থেকে রিপোর্ট পেলেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে সিডব্লিউসি।
বৃহস্পতিবার সিডব্লিউসি’র চেয়ারপার্সন সিদ্ধার্থ রায় জানান, ‘১৬ বছর বয়সী ওই কিশোরের বাড়ি বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ জেলার গজঘাটি গ্রামে। তাকে কাউন্সেলিং করার পর সে জানায় যাতনি হোমে কর্মকর্তারা তার ওপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালাতো। তিন বছর আগে খুরদা এলাকায় উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুরতে দেখে তাকে উদ্ধার করে ওই হোমে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর থেকে ওই হোমেই অবস্থান করছিল বাংলাদেশি কিশোরটি। কিন্তু তার ওপর নির্যাতন নেমে আসায় গত সপ্তাহেই সে হোম ছেড়ে পালায়। পরে গত ৮ মার্চ পুরীর রেল স্টেশন থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়’।
সিদ্ধার্থ রায় আরও জানান, ‘তিন বছর আগে খুরদা জেলা থেকে ওই কিশোরকে উদ্ধার করা হলেও তাকে বাংলাদেশে ফেরানোর বিষয়ে সরকারি তরফে কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। কিন্তু এবার ওই কিশোরকে নিজের দেশে ফিরিয়ে দিতে দিল্লিস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের সঙ্গে কথা বলা হবে।
বাংলাদেশি ওই কিশোরের বক্তব্য উদ্ধৃত করে সিডব্লিউসি’র চেয়ারপার্সন জানান. ‘বাবা-মায়ের সঙ্গে মনোমালিন্যের জেরে পাঁচ বছর আগে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে আসে ওই কিশোর। প্রথমে কলকাতায় আসে সে, সেখানে একটি কারখানায় কাজ নেয়। কলকাতায় দুই বছর কাটিয়ে ওড়িষ্যার খুরদার চলে যায় ওই কিশোর। সেখানে বিভ্রান্তের মতো ঘুরতে দেখে পুলিশের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে হোমে পাঠিয়ে দেওয়া হয়’। তবে ঠিক কীভাবে বাংলাদেশ খেকে ভারতে এসে পৌঁছায় তা জানা যায়নি।
গত সপ্তাহে পুরী রেল স্টেশন থেকে যখন ওই বাংলাদেশি কিশোরকে উদ্ধার করা হয় তখন তার পায়ে ক্ষতের চিহ্ন ছিল বলে জানিয়েছেন সিদ্ধার্থ রায়। জখম অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় হাসপাতালে। যদিও ধীরে ধীরে সে সুস্থ হয়ে উঠছে।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ