কানাডা থেকে এসে এক উগ্রপন্থী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানিয়েছে সে দেশের পত্রিকা ন্যাশনাল পোস্ট। হোসেন সালমান আল নূর ওরফে সালমান হোসেন নামে ওই ব্যক্তি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক। ইহুদি গণহত্যায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগে কানাডার ওন্টারিও পুলিশের গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে সালমানের বিরুদ্ধে। তাকে ধরতে ইন্টারপোলের রেড নোটিশও জারি রয়েছে।
ন্যাশনাল পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, কানাডীয় পলাতক আসামি সালমান হোসেন। দেশটির অন্টারিওর প্রাদেশিক পুলিশ ও ইন্টারপোলের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তবে তাকে খুব সহজেই ঢাকায় শনাক্ত করেছেন একজন ফটোগ্রাফার। রবিবার ঢাকাস্থ গুলশানের একটি কপিশপে ৩২ বয়স্ক এই সাবেক টরেন্টোর বাসিন্দার খোঁজ মেলে। তিনি বন্দি হন ক্যামেরার ফ্রেমে।
বাংলাদেশি লাইসেন্স প্লেট থাকা একটি সিলভার টয়োটা করোলায় তাকে ওই কফিশপে হাজির হতে দেখা যায়। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ঘরোয়াভাবে তিনি আলোকচিত্র সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে আসছিলেন তাই তাকে ওই ফটোগ্রাফারের নজরে এনে দেয়। দিয়া বাড়ির উত্তরা নামের একটি এলাকায় এই যুবক তার করোলা গাড়ি পেছনে রেখে দাঁড়িয়েছিলেন। বনানীতে এক বিলাসবহুল হোটেল লেকশোর জিমে রাখা গাড়িও ছাপা হয়েছে কানাডিয়ান ন্যাশনাল পোস্টে।
এদিকে কানাডার ফেরারি জঙ্গি সালমানের সন্ধানে মাঠে নেমেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে বিভিন্নস্থানে। তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। গতকাল সংবাদ মাধ্যমে সালমানের সংবাদ প্রকাশের পর ঢাকায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়। সালমান হোসেন সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে গুলশান, উত্তরাসহ বিভিন্ন এলাকায় কাজ শুরু করেন গোয়েন্দারা। র্যাব-১-এর অধিনায়ক লে. ক. সারোয়ার বিন কাসেম বলেন, আপনাদের মাধ্যমেই জেনেছি। সকাল থেকেই এ বিষয়ে আমরা তৎপরতা চালাচ্ছি। অফিসাররা সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন। তবে এখনও সালমানের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানান তিনি। সূত্রমতে, সালমানের অবস্থান নিশ্চিত হতে গুলশান ও উত্তরার কয়েকটি স্থানে সাদা পোশাকে গোয়েন্দারা তথ্য সংগ্রহ করছেন।
ইন্টারপোলের তথ্য মতে, বাংলাদেশে জন্ম নেওয়া সালমানের পুরো নাম সালমান আল নূর ওরফে সালমান হোসেন। তার বিরুদ্ধে উগ্রপন্থায় জড়ানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ন্যাশনাল পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, ২০১০ সালের জুলাইয়ে সালমানের বিরুদ্ধে ইহুদি জনগোষ্ঠীকে গণহত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়। একটি ভিডিওতে মুসলিম জঙ্গিদের কানাডায় হামলার কথা বলেছিল সে। তবে সাত বছরে তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি ওন্টারিও অঙ্গরাজ্যের পুলিশ। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সালমানের ১৬ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক ও নব্য জেএমবির সংগঠক তামিম আহমেদ চৌধুরী ২০১৩ সালে বাংলাদেশে এসেছিলেন। এরপর ২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে তাঁর নেতৃত্বে হামলা চালায় জঙ্গিরা। পরে গত বছরের ২৭ আগস্ট নারায়ণগঞ্জে পুলিশের অভিযানে দুই সহযোগীসহ নিহত হন তামিম।
বিডি প্রতিদিন/৭ জুন ২০১৭/হিমেল