ডা. দীপু মনি সংসদে প্রশ্ন তুলে জানতে চেয়েছেন, সম্প্রতি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে যে আলোচনা চলছে তাতে পাকিস্তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করা হচ্ছে কি না? তিনি বলেন, ১৯৭২ সালের সংবিধানে সরকার সংসদের কাছে দায়বদ্ধ। বিচার বিভাগের দায়বদ্ধতাও আবশ্যক।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বাজেট অধিবেশনের বুধবারের বৈঠকে সংসদে ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
দীপু মনি বলেন, এই দায়বদ্ধতার বিষয়টি ১৯৭২ সালের সংবিধানে ছিল। এমনি সারাবিশ্বে, সব জায়গায় দায়বদ্ধতার বিষয়টি বাজ্যিক (এক্সাটার্ণাল)। কোথাও নিজে নিজে জবাবদিহিতা করে না। আমাদের ৭২’র সংবিধানেও বিচার বিভাগের দায়বদ্ধতার বিষয়টি বাজ্যিকই ছিল। এই সংসদের কাছে ছিল। সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনী সেটিতেও বাজ্যিকই ছিল, তবে সেটি ছিল রাষ্ট্রপতির কাছে। এমনকি আমেরিকার প্রেসিডেন্সিয়াল সিস্টেমেও দায়বদ্ধতা রয়েছে। তারা কংগ্রেসের কাছে দায়বদ্ধ। কাজেই একমাত্র মার্শাল ‘ল’ সামরিক শাসনে তারা নিজেরা নিজেদের কাছে দায়বদ্ধ থাকে। তারা কারোও কাছে দায়বদ্ধ থাকে না। ওই এক পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রটিতে এই ব্যবস্থাটি আছে। এখন আমরা শুধু মাত্র সেই জায়গাটিতে যেতে চাই কি না? এটি আসলে আমাদের সকলের ভেবে দেখার প্রয়োজন রয়েছে।
সামরিক শাসনে ‘পিপলস উইলস’ বা মানুষের ইচ্ছার জায়গা নেই। আমরা কি সেই জায়গায় যেতে চাই- প্রশ্ন দীপু মনির। তিনি আরও বলেন, আমাদের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিটির দায়বদ্ধতা, জবাবদিহিতার বিষয়টি রয়েছে। বিচার বিভাগেরও দায়বদ্ধতার বিষয় রয়েছে, জবাবদিহিতার বিষয় রয়েছে। আমাদের এই সংসদের দায়বদ্ধতা মানুষের কাছে, আমরা মানুষের কাছে দায়বদ্ধ। আমরা প্রতি ৫ বছর পর পর মানুষের কাছে যাই, মানুষের কাছে আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। আমরা প্রতিদিনই দায়বদ্ধতা, জবাবদিহিতা করি। সরকার এই সংসদের কাছে দায়বদ্ধ। আমাদের বিভাগেরও দায়বদ্ধতা অত্যাবশ্যক।
ডা. দীপু মনি বলেন, আমাদের দেশে আমরা সাংবিধানিক চর্চা অব্যহত রেখেছি। অনেক কষ্টে, অনেক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অব্যাহত রেখেছি। আমাদের সংবিধানের মূল চেতনা সকল সাংবিধানিক যে অঙ্গগুলো আছে তার মধ্যে একটা ভারসম্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকবে। সেটা সংবিধানে রয়েছে। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো প্রত্যেকে যেন ভালোভাবে ফাংশন করতে পারে সেই ব্যবস্থাগুলো কিন্তু আমাদের সংবিধানে রেখেছি। এগুলো রাখা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/৭ জুন ২০১৭/এনায়েত করিম