মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী ছায়েদুল হক বলেছেন, দেশে ডিম ও দুধের চাহিদা বাড়ছে। সারাদেশে প্রতিদিন দুধের চাহিদা ৪ কোটি ২ লাখ ৪৯ হাজার ৩১৫ লিটার এবং ডিমের চাহিদা ৪ কোটি ৫৮ লাখ ৭৩ হাজার ৯৭৩টি। কিন্তু বর্তমানে দেশে প্রতিদিন উৎপাদিত হয় ১ কোটি ৯৯ লাখ ৩১ হাজার ৫০৭ লিটার দুধ এবং ৩ কোটি ২৬ লাখ ৩৬ হাজার ৭১৩টি ডিম। ফলে প্রতিদিন দুধের ঘাটতি থেকে যাচ্ছে ২ কোটি ৩ লাখ ১৭ হাজার ৮০৮ লিটার দুধ এবং ডিমের ঘাটতির পরিমাণ ১ কোটি ৩২ লাখ ৩৭ হাজার ২৬০টি।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বাজেট অধিবেশনে আজ মঙ্গলবার টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের সদস্য দিলারা বেগমের অপর প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান মন্ত্রী।
এসময় মন্ত্রী আরও জানান, সরকারের উদ্যোগের কারণে দেশে জনপ্রতি দৈনিক দুধের প্রাপ্যতা বেড়েছে। বিগত ২০০৮-০৯ অর্থবছরে দুধের প্রাপ্যতা ছিল গড়ে ৪৩ দশমিক ৩৫ মিলিলিটার। গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে দুধের প্রাপ্যতা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২৫ দশমিক ৫৯ মিলিলিটার।
দেশে চামড়া উৎপাদন বেড়েছে ১৩.১৬ শতাংশ :
আবুল কালামের (নাটোর-১ ) তারকা চিহ্নিত প্রশ্নের জবাবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মোহাম্মদ ছায়েদুল হক বলেন, গত তিন বছরে দেশে ১৩ দশমিক ১৬ শতাংশ চামড়া উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ২০১৩-১৪ অর্থবছরে চামড়া উৎপাদন ছিল ১ কোটি ৫০ লাখ ২৫ হাজার ৪১ পিস। গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে দেশে চামড়া উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ৭০ লাখ ৩ হাজার ৪০৭ পিস।
বিলুপ্তির পথে সরপুটি, কালিবাউশ, পাবদা, শিং, মাগুর, আইড়, চিতল, টেংরা :
সরকারি দলের বেগম পিনু খানের প্রশ্নের জবাবে মৎস্যমন্ত্রী ছায়েদুল হক বলেন, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট-এর গবেষণায় বিলুপ্তপ্রায় মাছের মধ্যে রয়েছে- বাটা, সরপুটি, ভাঙ্গনা, কালিবাউশ, গণিয়া, মহাশোল, পাবদা, গুলশা, শিং, মাগুর, ভেদা, গুজি, আইড়, চিতল, ফলি, কুচিয়া ও টেংরা। তবে ধারাবাহিক গবেষণা করে এই ১৭ প্রজাতির মাছের প্রজনন ও চাষ বিষয়ক প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হয়েছে। ফলে বাজারে দেশীয় বিলুপ্তপ্রায় মাছের প্রাপ্যতা সাম্প্রতিককালে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এসব মাছের ক্রয়মূল্য ভোক্তাদের নাগালের মধ্যে রয়েছে।
তিনি আরও জানান, বর্তমানে দেশে প্রায় ৮শ’ প্রজাতির মাছ ও চিংড়ি আছে, এর মধ্যে ২৬০ প্রজাতির স্বাদু পানির মাছ রয়েছে। আইইউসিএন’র তথ্য মতে দেশের স্বাদুপানির ৬৪টি প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হওয়ার পথে।
মৎস্য খাতে ৩৩ কোটি ৭২ লাখ টাকা ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ হয়েছে :
অ্যাডভোকেট মো. রহমত আলীর প্রশ্নের জবাবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মোহাম্মদ ছায়েদুল হক বলেন, দেশের মৎস্য সম্পদের উৎপাদন বৃদ্ধি ও এর সাথে সংশ্লিষ্ট খামারীদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে মৎস্য চাষীদের ঋণ দেয়া হয়। এ পর্যন্ত সারা দেশে ৩৩ কোটি ৭২ লাখ টাকা ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। এতে ৫৮ হাজার ৫৩৩ জন সুফলভোগী উপকৃত হয়েছেন। মৎস্য খাতে এ ক্ষুদ্র ঋণ সম্পূর্ণ সুদমুক্ত। শুধুমাত্র শতকরা ৫ ভাগ হারে সার্ভিস চার্জ প্রযোজ্য।
মন্ত্রী বলেন, ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ নির্দেশিকা মোতাবেক বিতরণকৃত অর্থ আদায়পূর্বক বিদ্যমান তহবিলের সাথে যোগ করে রিভলভিং ফান্ড হিসেবে পুনরায় দরিদ্র ও প্রান্তিক মৎস্য চাষীদের মাঝে বিতরণ করা হয়, যা একটি চলমান প্রক্রিয়া।
বিডি প্রতিদিন/১৩ জুন ২০১৭/এনায়েত করিম