প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, ২০১৩ সালে ২ হাজার ৩১০টি বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়েছে। এর বাইরে নতুন কোনো বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করার পরিকল্পনা সরকারের নেই।
সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে সোমবারের বৈঠকে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে মো. জিয়াউল হক মৃধার লিখিত প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ তথ্য জানান।
মন্ত্রী আরও বলেন, ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী দেশের সব রেজিস্টার্ড, এমপিওভুক্ত এবং আবেদিত ২৬ হাজার ১৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পার্বত্য জেলায় ইউএনডিপি পরিচালিত ২৩১০টি বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়। বর্তমানে এসব ঘোষিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বাস্তবায়ন চলমান রয়েছে। তাই এসব প্রতিষ্ঠানের বাইরে নতুন করে কোনো বিদ্যালয় জাতীয়করণের পরিকল্পনা আপাতত সরকারের নেই।
শিক্ষকদের চাকরি জাতীয়করণের পরিকল্পনা নেই :
একই সংসদ সদস্যের অপর প্রশ্নের জবাবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী জানান, দেশের যে সকল উপজেলায় কোন সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ নেই, যে সকল উপজেলায় একটি করে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও একটি কলেজ সরকারিকরণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। সে আলোকে শিক্ষামন্ত্রণালয়ে কার্যক্রম চলছে। এমনকি দেশের সকল বেসরকারি শিক্ষকদের চাকরি জাতীয়করণের পরিকল্পনাও আপাতত সরকারের নেই।
২০ হাজার ৮৪৭টি প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য:
এ কে এম মাঈদুল ইসলামের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, সারাদেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে গত বছরের অক্টোবর পর্যন্ত প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে ২০ হাজার ৮৪৭টি। যার মধ্যে ঢাকা মহানগর, ভোলা, লক্ষীপুর এবং মেহেরপুর জেলায় ৩৯৪জন শিক্ষককে প্রধানশিক্ষকের শূন্য পদে চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া নেত্রকোনা, কুষ্টিয়া ও ঠাকুরগাঁও জেলায় প্রধানশিক্ষকের চলতি দায়িত্ব প্রদানের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। পদগুলোপূরণের কার্যক্রম চলছে।
তিনি আরো বলেন, প্রধান শিক্ষক পদটি দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত হওয়ায় এই পদের নিয়োগ বাংলাদেশ সরকারিকর্মকমিশন (পিএসসি) থেকে সম্পন্ন হয়ে থাকে। পিএসসি থেকে ৩৪তম বিসিএস থেকে প্রধান শিক্ষকের পদ পূরণের জন্য ৮৯৮ জনের তালিকা প্রকাশ করে সেই পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এছাড়া ৩৬তম বিসিএসে উন্নীতদের মধ্যে থেকে সরাসরি নিয়োগেরজন্য পিএসসির নির্ধারিত ফরমে তথ্য প্রেরণ করা হয়েছে।
২৫ ধরণের বিদ্যালয় :
নূরুল হকের লিখিত প্রশ্নের জবাবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী জানান, প্রাথমিক বিদ্যালয় বার্ষিক জরিপ ২০১৭ অনুযায়ী দেশে বর্তমানে ২৫ ধরনের প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। যারসংখ্যা একলাখ ৩৩ হাজার ৯০৭টি। এসব বিদ্যালয়ে ৫ লাখ ৫৭ হাজার শিক্ষক কর্মরত আছেন। যার মধ্যে ৩লাখ ৫১ হাজার ৮৬৩ জন মহিলা শিক্ষক। অর্থাৎ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬৩ দশমিক ১৭ শতাংশই মহিলা শিক্ষক কর্মরত।
তিনি আরো জানান, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন ভাতা বাবদ বাৎসরিক ১০ কোটিরও অধিক টাকা সরকারের ব্যয় হয়। ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য রাজস্ব বাজেটে সর্বমোট ১০ কোটি ৮৪ লাখ ৫৯ হাজার ২০৬ টাকা ব্যয় হয়েছে।
বিডিপ্রতিদিন/ ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮/ ই জাহান