প্রজন্ম বাংলাদেশ আয়োজিত যুব সমাবেশে স্যালুলয়েডের পর্দায় ভিন্ন ধাঁচের রাজনৈতিক কর্মসূচি প্ল্যান বি’র উপস্থাপনায় মুগ্ধ হয়ে দেশের প্রবীণ রাজনীতিবিদরা সংখ্যাগরিষ্ট দলীয় রাজনৈতিক সরকারের ক্ষমতার ধারায় ভারসাম্যমূলক রাজনৈতিক পরিবর্তন আনার অঙ্গীকার করলেন।
রবিবার বিকালে রাজধানীর কৃষিবিদ কনভেনশন হলে প্রজন্ম বাংলাদেশ-এর ‘যুব প্রচার অভিযান’ প্ন্যান-বি কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তরুণ প্রজন্মের হাতে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব তুলে দেওয়ার এ অঙ্গীকার করেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্পধারার প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. এ.কিউ.এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।
এর আগে, অনুষ্ঠান শুরু হয় একটি প্রতিবাদী ব্যান্ড সঙ্গীত দিয়ে, যেখানে স্যালুলয়েডের পর্দায় দেশের নানা অসঙ্গতি ও সাম্প্রতিক নিরাপদ সড়ক ও কোটা শিক্ষার্থী আন্দোলন এবং নিপীড়নের চিত্র তুলে ধরা হয়। এরপর একজন একজন করে প্রতিক্রিয়া জানতে মঞ্চে ডেকে নেওয়া হয় বিদগ্ধ রাজনীতিবিদদের। এর আগে স্যালুলয়েডে তুলে ধরা হয় প্রত্যেকের সংক্ষিপ্ত রাজনৈতিক ক্যারিয়ার। প্ন্যান-বি কর্মসূচি তুলে ধরেন প্রজন্ম বাংলাদেশ-এর প্রধান মাহী. বি. চৌধুরী।
সভায় সাবেক রাষ্ট্রপতি, যুক্তফ্রন্ট চেয়ারম্যান ও বিকল্পধারার প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. এ.কিউ.এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী তরুণ প্রজন্মের হাতে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব তুলে দেওয়ার এ অঙ্গীকার করে বলেন, তোমরা বলেছো উই ওয়ান্ট জান্টিস, সারা বাংলাদেশ বলেছে উই ওয়ান্ট জান্টিস। আমরা বলেছি উই ওয়ান্ট জান্টিস। আমারা তোমাদের কাছে কৃতজ্ঞ। যে ভাষায় দেশকে ভালোবাসতে হবে, আম জনতার সাথে থাকতে হবে, সেটা তোমারা ভবিষ্যতেও থেকো। দেশ তোমাদের হাতে তুলে দিয়ে আজকে নিজেকে কৃতজ্ঞ মনে করছি। ভবিষ্যতে তোমাদের হাতে। এ সময় স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পতাকা উত্তোলক আ স ম আবদুর রবকে দেখিয়ে তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের মান সম্মান যারা এনেছে তাদের অন্যতম ওনার তখন মাত্র ২৩ বছর বয়স ছিল। তার যৌবন এখন নেই। ইতিহাস তার সাক্ষী আছে।
জেএসডির সভাপতি আ.স.ম আবদুর রব বলেন, জহির রায়হান, খান আতার পর এতো সুন্দরভাবে বাংলাদেশের মানুষ, আম জনতা-শ্রেণি বিভক্ত সমাজ, শ্রমজীবী কর্মজীবী মেহনতি মানুষ-তাদের জীবন বৈচিত্র্যকে এমন সুন্দরভাবে উপস্থানের জন্য তোমাদের সবাইকে ধন্যবাদ। সাম্প্রতিক শিক্ষার্থীদের সম্প্রতিক নিরাপদ সড়ক আন্দোরনের উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, এটা শুধু কোমল শিশুদের আন্দোলন নয়, এটা পুরো ষোল কোটি মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। সরকার বলেছে শিক্ষার্থীরা তাদের চোখ খুলে দিয়েছে। কিন্তু তাদের যখন পুলিশ দিয়ে, হ্যালমেট দিয়ে, হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়েছেন, তখন কী সরকারের চোখ বন্ধ ছিল? তিনি আরো বলেন, ওদের কণ্ঠে পুরোদেশের বিবেকের ধ্বনি প্রতিধ্বনিত হয়েছে। এরা আগামীর প্রজন্ম, এরাই আগামী দিনের বাংলাদেশ। আমার পরে মান্নার পরে নেতৃত্বের যে সাপ্লাই লাইন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিরিয়ে আসার কথা ছিল তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে। যারা তাদের মেরুদণ্ড ভেঙ্গেছে আগামী দিনের প্রজন্ম তাদেরও মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দিবে। সেই আগামী প্রজন্মের হাতে বাংলাদেশকে দিয়ে যেতে চাই।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, মানুষ বলছে যা চলছে তা বদলাতে পারবেন না। তরুণ প্রজন্ম দেখিয়েছে বদলানো সম্ভব। আমরা তোমাদের হাতেই নিরাপদ বাংলাদেশের স্বপন তুলে দিলাম।
বিডি-প্রতিদিন/০২ সেপ্টেম্বর, ২০১৮/মাহবুব