শিরোনাম
১৫ নভেম্বর, ২০১৯ ০৮:৫০

স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতৃত্বে কারা আসছেন

পদে আসতে শেষ মুহূর্তে দৌড়ঝাঁপ কাল সম্মেলন

রফিকুল ইসলাম রনি

স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতৃত্বে কারা আসছেন

আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের কাক্সিক্ষত পদ পেতে চলছে প্রার্থীদের শেষ মুহূর্তের দৌড়ঝাঁপ। নিজেদের ‘যোগ্য’ প্রমাণে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ছুটে চলেছেন তারা। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে এবং ১/১১ সময়ে দলের দুর্দিনে কার কী ভূমিকা ছিল সেসব তুলে ধরার চেষ্টা করছেন কেউ কেউ।

দীর্ঘ ৯ বছর পর আগামীকাল শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হবে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন। এরই মধ্যে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন হয়েছে।

আগামীকাল একই মঞ্চে হবে ছয় নেতার ভাগ্য নির্ধারণ। কেন্দ্রের সঙ্গে ঘোষণা করা হবে দুই মহানগরের কমিটি। সংগঠনের শীর্ষ পদ পেতে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী ফোরামের নেতাদের বাসাবাড়ি ছাড়াও পদপ্রত্যাশীরা বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও ধানমন্ডি দলীয় সভানেত্রীর কার্যালয়ে ভিড় করছেন। রাজধানীজুড়ে পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন টানিয়ে নিজেদের প্রার্থিতা জানান দিচ্ছেন তারা।       
সর্বশেষ ২০১২ সালে মোল্লা মো. আবু কাওসারকে সভাপতি এবং পঙ্কজ দেবনাথকে সাধারণ সম্পাদক করে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন হয়। সম্প্রতি ক্যাসিনোকান্ডে  মোল্লা মো. আবু কাওছারকে সংগঠন থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। ভিন্ন অভিযোগে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথকে। স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সংগঠনের সহ-সভাপতি নির্মল চন্দ্র গুহ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী মেজবাহউল সাচ্চুকে। স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলনের দায়িত্বপ্রাপ্ত এই দুই নেতা কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে জোর আলোচনায় আছেন। এ ছাড়া সভাপতি পদে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন- সংগঠনের সহ-সভাপতি সাবেক ডাকসু সদস্য ম. আবদুর রাজ্জাক, সহ-সভাপতি মতিউর রহমান মতি, আফজালুর রহমান বাবু, সৈয়দ নুরুল ইসলামসহ অনেকেই। সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় আছেন সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম আজিম, খায়রুল হাসান জুয়েল, শেখ সোহেল রানা টিপু, সাজ্জাদ শাকিব বাদশা, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম লিটন, দফতর সম্পাদক সালেহ মোহাম্মদ টুটুল, সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক নাফিউল করিম নাফা, পল্লী উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক আবুল ফজল রাজু, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শেখ মোহাম্মদ নুরুজ্জামানসহ একডজন নেতা।

গাজী মেজবাহউল সাচ্চু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুকন্যা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার একজন কর্মী। তিনি যেখানে রাখবেন সেখানেই আমি কাজ করব। ম. আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘নিঃস্বার্থভাবে দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। সুযোগ থাকলেও কখনো রাজনীতির নাম ভাঙিয়ে অর্থ উপার্জনের পথ বেছে নেইনি। আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হলে তা সততার সঙ্গে পালন করব।’  সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় থাকা শেখ সোহেল রানা টিপু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘দলের দুঃসময়ে যারা জীবন বাজি রেখে দলের জন্য কাজ করেছেন, রাজপথে থেকেছেন, আন্দোলন করেছেন, সংগঠনকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করতে ভূমিকা রেখেছেন তারা নেতৃত্বে আসুক। এতে সংগঠন যেমন শক্তিশালী হবে, তেমনি শেখ হাসিনার হাতও শক্তিশালী হবে।’ খায়রুল হাসান জুয়েল বলেন, ‘ওয়ার্ড ছাত্রলীগ থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছি। ১/১১ সময়ে গ্রেফতার হয়ে এক বছর জেল খেটেছি। নেত্রী আমাকে যেখানে রাখবেন সেখানেই কাজ করব।’  আরেক প্রার্থী সাজ্জাদ শাকিব বাদশা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘যারা দুঃসময়ে দলের পাশে থেকে কাজ করেছেন, রাজপথে থেকেছেন তারাই যেন নেতৃত্বে আসে এই প্রত্যাশা আমার।’ রফিকুল ইসলাম লিটন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হলে নেত্রীর নির্দেশ পালনে সর্বদা প্রস্তুত থাকব।’ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন হলেও কমিটি ঘোষণা হয়নি। গত ১২ নভেম্বর ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলনে সভাপতি প্রার্থী ফরিদুর রহমান খান ইরান ও মো. ইসহাক মিয়া গ্রুপের নেতারা সামনের চেয়ারে বসাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়ান। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। দক্ষিণে সভাপতি পদে আলোচনায় আছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি কামরুল হাসান রিপন, মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি প্রার্থী মনির হোসেন মোল্লা মনজু, মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ হাওলাদার। সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় আছেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তারিক সাঈদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, সাবেক ছাত্রনেতা ও কাউন্সিলর আনিসুর রহমান, শেখ মো. আনিসুজ্জামান রানা, ছাত্রলীগ দক্ষিণের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, ছাত্রলীগের সাবেক নেতা জাভেদ ইকবাল, সাগর আহমেদ শাহীনসহ ডজনখানেক নেতা। ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি পদে আলোচনায় রয়েছেন বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ও কাউন্সিলর ফরিদুর রহমান খান ইরান, বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক মনোয়ারুল ইসলাম বিপুল, সহ-সভাপতি গোলাম রাব্বানী। সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় আছেন দফতর সম্পাদক রবিউল আলম, বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন সরদার, মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. ইসহাক মিয়াসহ অন্তত ডজনখানেক নেতা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর