২২ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ১১:৫৬

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাড়িচালক কে এই মালেক?

নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাড়িচালক কে এই মালেক?

রাজধানীর তুরাগ থানার অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের করা দুই মামলায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের গাড়িচালক আবদুল মালেক ওরফে বাদলকে ১৪ দিন রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে আদালত। গতকাল ঢাকা মহানগর হাকিম শহিদুল ইসলাম রিমান্ডের এ আদেশ দেন। এদিকে প্রাথমিক অনুসন্ধানে ড্রাইভার মালেক ও তার স্ত্রীর অস্বাভাবিক সম্পদের সন্ধান পাওয়ায় তাদের সম্পদের হিসাব বিবরণী চেয়ে নোটিস দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গ্রেফতারের আগে থেকেই সংস্থাটি তাদের বিষয়ে অনুসন্ধান করছে বলে দুদকসূত্র জানিয়েছে। অন্যদিকে ড্রাইভার মালেককে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

গতকাল তুরাগ থানা পুলিশের রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, আসামি আবদুল মালেক স্বাস্থ্য অধিদফতরের স্বাস্থ্য ও শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালকের গাড়িচালক। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশ সরকারি গাড়িচালক সমিতির সভাপতি হিসেবে ২০-২৫ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি তার কর্মস্থলে খুবই প্রভাবশালী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে জাল টাকার ব্যবসাসহ নিজ কর্মস্থলে সাংগঠনিক পদবিকে কাজে লাগিয়ে বদলি ও নিয়োগ বাণিজ্য করে অবৈধভাবে বিপুল বিত্ত-বৈভবের মালিক হন। তাই মামলার মূল রহস্য উদ্ঘাটন, অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের উৎস, জাল টাকার উৎস, পলাতক আসামিদের পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা সংগ্রহসহ প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিন করে ১৪ দিনের রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।

জানা গেছে, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের গাড়িচালক মালেকের বিরুদ্ধে চলা অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে তার ও তার স্ত্রীর অস্বাভাবিক সম্পদের সন্ধান পেয়েছে দুদক। সম্পদের তথ্য বিবরণী চেয়ে দুদক তাদের নোটিসও দিয়েছে। তারা যদি সম্পদের হিসাব দিতে না পারেন তাহলে যথাযথভাবে মামলা হবে বলে জানিয়েছে দুদক। মালেক গ্রেফতার হওয়ার আগেই দুদক সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিস জারি করেছিল বলে সূত্র জানান।

দুদক সচিব বলেন, ড্রাইভার মালেকের সম্পদে আর কারও সম্পদ আছে কিনা তা সম্পদ বিবরণী পেলে এবং তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে জানা যাবে।

রবিবার দিবাগত রাতে রাজধানীর তুরাগ থানার কামারপাড়া বামনার টেক ৪২ নম্বর হাজি কমপ্লেক্স ভবন থেকে আবদুল মালেককে গ্রেফতার করে র‌্যাব-১। এ সময় তার কাছ থেকে বিদেশি পিস্তল, ম্যাগজিন, ৫ রাউন্ড গুলি, দেড় লাখ টাকার জালনোট, ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন সেট জব্দ করা হয়। অষ্টম শ্রেণি পাস আবদুল মালেক অধিদফতরের চাকরির পাশাপাশি নানা অবৈধ কর্মকাণ্ড চালাতেন। অবৈধ অস্ত্র ও জালনোটের কারবার ছাড়াও চাঁদাবাজি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন তিনি। তুরাগ থানার দক্ষিণ কামারপাড়ায় দুটি সাত তলা বিলাসবহুল ভবন, ধানমন্ডির হাতিরপুলে সাড়ে ৪ কাঠা জমিতে নির্মাণাধীন ১০ তলা ভবন রয়েছে তার। এছাড়া দক্ষিণ কামারপাড়ায় ১৫ কাঠা জমিতে একটি ডেইরি ফার্ম গড়ে তুলেছেন মালেক। বিভিন্ন ব্যাংকে নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ অর্থ জমা রয়েছে তার। সূত্র জানান, স্বাস্থ্য অধিদফতরের ড্রাইভার্স অ্যাসোসিয়েশনের নামে একটি সংগঠন তৈরি করে তার সভাপতি হন মালেক। কেবল ড্রাইভারদের নিয়োগ-বদলি-পদোন্নতির নামে হাতিয়েছেন বিপুল পরিমাণ অর্থ। এ ছাড়া স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালককে (প্রশাসন) জিম্মি করে ডাক্তারদের বদলি, পদোন্নতি, তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের নিয়োগের নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ আদায় করেছেন মালেক।

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর