সৌদি আরবে পাচারের পর এক নারীর ওপর শুরু হয়েছে নির্যাতন। তিন মাস আগে ওই নারী বাঁচার আকুতি জানিয়ে বিষয়টি তার স্বামীকে জানান। এরপর স্ত্রীকে বাঁচাতে তার স্বামীর দৌড়ঝাপ শুরু হয়। দেশ থেকে যাদের মাধ্যমে ওই নারীকে সৌদি পাঠিয়েছিলেন, তাদের কাছে যান। কিন্তু তারা কোনো সহযোগিতা করেননি। উল্টো তার কাছে আরও ৪ লাখ টাকা চান। বলেন, স্ত্রীকে নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনতে হলে আরও ৪ লাখ টাকা দিতে হবে। নিরুপায় স্বামী এরপর র্যাবের কাছে অভিযোগ দেন। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মানবপাচারকারী চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
গ্রেফতাররা হলেন রুবেল, মুবারক এবং তাদের সহযোগী আক্কাস ও তাহের। সোমবার রাতে রাজধানীর পল্টন ও রমনা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান র্যাব-৩ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বীণা রানী দাস।
তিনি বলেন, ‘বর্তমান সময়ে মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন ফাঁদ, যেমন বিদেশে উচ্চ বেতনে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ জনগণের সরলতার সুযোগ নিয়ে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় সৌদি আরবে পাচারের শিকার ভুক্তভোগী নারীর স্বামীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে র্যাব-৩ এর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার রাজধানীর পল্টন ও রমনা এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।’
‘গ্রেফতার আক্কাস বেপারী ভিকটিমের স্বামীর পূর্বপরিচিত। তিনি পাচারের শিকার নারীকে মধ্যপ্রাচ্যে ২৫ হাজার টাকা বেতনে হাসপাতালে আয়ার চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে গ্রেফতার মোবারক ও তাহেরের কাছে নিয়ে যান। রুবেলের সহযোগিতায় রিক্রুটিং লাইসেন্স ব্যবহার করে ভিকটিমকে চলতি বছরের জুন মাসে সৌদি আরবে পাঠান। এরপর আসামিরা ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ করেননি। ভুক্তভোগী বিদেশে গিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হলে, স্বামীকে বিষয়টি জানান। ভুক্তভোগীর স্বামীর মাধ্যমে পাচারে জড়িতরা নির্যাতনের বিষয়টি জানতে পারলেও সমস্যা সমাধানের কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বীণা রানী দাস বলেন, ‘ভুক্তভোগীর স্বামী জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোতে ভুক্তভোগী নারীকে উদ্ধারের জন্য অভিযোগ করেন। তবে অভিযোগ প্রত্যাহার করার জন্য পাচারকারীরা ভুক্তভোগী পরিবারকে হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ও পাচারের শিকার নারীকে দেশে ফিরিয়ে আনার খরচ বাবদ ৪ লাখ টাকা দাবি করেন। এ অবস্থায় ভুক্তভোগী নারীর স্বামী নিরুপায় হয়ে স্ত্রীকে উদ্ধারের জন্য র্যাবের কাছে গত সপ্তাহে অভিযোগ করেন। তিনি পাচারে জড়িতদের নামে পল্টন মডেল থানায় মামলা করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই ৪ জনকে গ্রেফতার করা হলো।’
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ