৩১ জানুয়ারি, ২০২৩ ১৯:৪২

শিক্ষা নিয়ে ব্যবসা করার মানসিকতা পরিহারের আহ্বান রাষ্ট্রপতির

অনলাইন ডেস্ক

শিক্ষা নিয়ে ব্যবসা করার মানসিকতা পরিহারের আহ্বান রাষ্ট্রপতির

সমাবর্তন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ

শিক্ষা নিয়ে ব্যবসা করার মানসিকতা পরিহারের জন্য এ খাতের উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। 

মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ-এর প্রথম সমাবর্তনে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের আচার্য মো. আবদুল হামিদ বলেন, ‘শিক্ষাকে নিয়ে ব্যবসা করার মন-মানসিকতা পরিহার করাই সবার জন্য মঙ্গল...বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে আইন ও বিধি-বিধান মেনে চালাবেন।’

তিনি বলেন, নিজেদের ইচ্ছে আর সুবিধামতো বিশ্ববিদ্যালয় চালানো যাবে না। রাষ্ট্রপতি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত না করে জ্ঞান বিতরণ ও একবিংশ শতাব্দীর উপযোগী গ্রাজুয়েট তৈরির প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার তাগিদ দেন। 

তিনি বলেন, প্রাাইভেট বিশ্বাবিদ্যালয়গুলো দাতব্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত হোক সেটা যেমন চাই না আবার এটাও চাই না যে শিক্ষাকে পণ্য বিবেচনা করে শিক্ষার নামে বিশ্ববিদ্যালয়কে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হোক।

দেশে বর্তমানে দেড় শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পত্রপত্রিকা খুললেই দেখা যায় কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিগ্রির নামে সার্টিফিকেট বিতরণ করে যাচ্ছে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় গ্রাজুয়েট তৈরির কারখানা খুলে বসেছে।

তিনি বলেন, একবিংশ শতাব্দীতে বৈশ্বিক অগ্রযাত্রার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে, জাতির উন্নয়ন, উন্নত সমাজ গঠন এবং বিশ্বমানের গ্রাজুয়েট তৈরির লক্ষ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গুণগত মান, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।

‘গুণগত মান ছাড়া উচ্চশিক্ষা মূল্যহীন। তাই, উচ্চ শিক্ষা যাতে কোনভাবেই সার্টিফিকেট সর্বস্ব না হয় তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন তিনি।

আবদুল হামিদ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, দেশে উচ্চ শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। শিক্ষার সাথে কর্মের সংযোগ ঘটাতে না পারলে ভবিষ্যতে হয়তো বা শিক্ষার্থীর অভাবে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিতে হতে পারে।

রাষ্ট্রপ্রধান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করার পাশাপাশি নিজস্ব ক্যাম্পাস ও অবকাঠামো নির্মাণেও পদক্ষেপ নেয়ার তাগিদ দেন। 

স্নাতক ডিগ্রিধারীদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি বলেন, ভবিষ্যতে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি নিশ্চিতকরণে এই শিক্ষার্থীদেরকেই নেতৃত্ব দিতে হবে এবং তাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাবে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ।

তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলেন, দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে লালন করে জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চায় সমৃদ্ধ হয়ে তারা সুনাগরিক হিসাবে গড়ে উঠবে। 

শিক্ষকদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি বলেন, আপনারা উন্নত জাতি তৈরির মহান কারিগর। আপনাদের হতে হবে নৈতিকভাবে বলিষ্ঠ চরিত্রের অধিকারী, নিরপেক্ষ, অকুতোভয় এবং সত্যবাদী। দেশের তরুণ প্রজন্মকে যুগোপযোগী শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার অনুরোধ জানান তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয় আচার্য বলেন, শিক্ষার্থীদেরকে শুধু পাঠ্যপুস্তক অধ্যয়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেই চলবে না, পাঠ্য বিষয়ের সাথে সাথে বহির্জগতের জ্ঞানভান্ডার হতে জ্ঞান আহরণ করতে হবে।

তিনি বলেন, নিজেকে কর্মবীর ও জ্ঞানী করে তোলাই হবে শিক্ষার মূল লক্ষ্য। উচ্চ চিন্তা ও সহজ জীবনাচরণ  তোমাদের প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবে। সদাচরণ আর সদালাপ হচ্ছে শিক্ষা জীবনের ভূষণ।

সমাবর্তনে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ও অধিকার কর্মী কৈলাস সত্যার্থী।

সূত্র : বাসস।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর