পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের অবিলম্বে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে সাহায্য করার জন্য জি-২০সহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের দীর্ঘস্থায়ী অবস্থান সমগ্র অঞ্চল জুড়ে বিপর্যয়ের পাশাপাশি ব্যাপক নিরাপত্তা সমস্যা তৈরি করছে এবং তারা সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলির দ্বারা উগ্রবাদীতায় অনুপ্রাণিত ও নিয়োজিত হওয়ার সম্ভাব্য লক্ষ্যে পরিণত হতে পারে।’
ভারতের সভাপতিত্বে আজ শুক্রবার নয়াদিল্লিতে জি-২০ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনের এক অধিবেশনে বক্তৃতা করার সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর এতে সভাপতিত্ব করেন।
মোমেন বলেছেন, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের সাহায্য করার পাশাপাশি, জীবন বাঁচাতে এবং মানবিক সংকটে জনগণকে রক্ষা করতে বাংলাদেশ যেকোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি কোভিড-১৯-এর কঠিন সময়ে কয়েকটি প্রতিবেশী দেশের প্রতি বাংলাদেশের সহায়তার কথা উল্লেখ করেন।
আজকের অধিবেশন শুরু হয় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রেকর্ড করা ভিডিও ভাষণ দিয়ে। বাংলাদেশসহ বিশেষভাবে আমন্ত্রিত নয়টি দেশ এবং ১৩টি আন্তর্জাতিক সংস্থাসহ ৪০টিরও বেশি প্রতিনিধি দল গত সন্ধ্যায় বর্ণ্যাঢ্য সম্মেলনে যোগ দেন।
এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হচ্ছে- ‘এক পৃথিবী, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ’। ভারত গত ডিসেম্বরে বিশ্বের প্রধান অর্থনৈতিক গোষ্ঠীর সভাপতিত্ব পেয়েছে।
সন্ত্রাসবাদকে একটি গুরুতর চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করে মোমেন বলেন, চ্যালেঞ্জ শুধু আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য নয়, মানব নিরাপত্তার জন্যও।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ‘জিরো-টলারেন্স’ নীতি বজায় রেখেছে।
তিনি বলেন, "আমরা কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনকে বাংলাদেশের মাটি অন্য কোনো দেশের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার সুযোগ দেই না। আমাদের সরকারের সক্রিয় উদ্যোগের কারণে ভারত, বিশেষ করে উত্তর-পূর্ব ভারত বর্তমানে অব্যাহত উন্নয়ন, শান্তি ও নিরাপত্তা সুবিধা ভোগ করছে। রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই সংকট বিভিন্ন দেশের অনেকের জন্য, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের জন্য কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষিতে সরবরাহ শৃঙ্খল এবং আর্থিক লেনদেন ব্যবস্থায় ব্যাঘাতের কারণে অনেক সরকারই মূল্যস্ফীতি ও দ্রব্য মূল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে দিশেহারা হয়ে পড়ছে।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ