১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ২০:২৫

চাঁদা একটা কালচারে পরিণত হয়েছে: আনিসুল ইসলাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

চাঁদা একটা কালচারে পরিণত হয়েছে: আনিসুল ইসলাম

ফাইল ছবি

চাঁদা একটা কালচারে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিরোধীদলীয় উপনেতা আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। রবিবার মাগরিবের নামাজের পর জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন। 

তিনি বলেন, 'চাঁদা দে, নইলে গুলি' এটি একটি গণমাধ্যমের হেডলাইন। যেখানে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের ব্যাপারে বলা হয়েছে। কিছু ঘটনা তারা লিখেছেন। একটি ঘটনা হচ্ছে পশ্চিম মেরুল বাড্ডার একটি ফাস্ট ফুডের দোকানের সামনে দ্রুত বেগে সাত থেকে আটটি মোটরসাইকেল থেমে যায়। মোটরসাইকেল থেকে ১০ থেকে ১২ জন নেমে ফাস্ট ফুডের দোকানে প্রবেশ করে। এদের মধ্যে এক যুবকের হাতে পিস্তল। দুই জনের হাতে ধারালো ছুরি। এরই মধ্যে পিস্তল হাতে থাকা যুবক দোকানের মালিক রায়হানের দিকে এগিয়ে যায়। চেঁচিয়ে বলছে, 'তোকে বলেছি যে ভাই ফোন দিয়েছিল। ১০ লাখ টাকা চেয়েছে।' 

'তার কিছুদিন আগে মতিঝিল আওয়ামী লীগের সেক্রেটারিকে গুলি করে মারা হয়। তার স্ত্রী ডলি একজন কাউন্সিলর, তিনি এখন নিয়মিতভাবে টেলিফোন পান হুমকি দিয়ে যাতে মামলা তুলে ফেলা হয়।'
তিনি আরও বলেন, আজকে চাঁদা একটা কালচারে পরিণত হয়েছে। রাস্তা দিয়ে যখন পরিবহনের ট্রাকগুলো আসে সেখানে চাঁদা দিতে হয়। সেই চাঁদা যোগ হয় দ্রব্যমূল্যের সাথে। আপনি একটি বাড়ি করবেন সেখানে বালি কে দিবে, ইট কে সাপ্লাই দিবে, রড কে সাপ্লাই দিবে এগুলোর জন্য দিতে হয় চাঁদা। হয় চাঁদা দিতে হবে নয়ত তাদেরকে সেই সাপ্লাইয়ের কাজ দিতে হবে। আজকে চাঁদাটা ভয়ংকর ব্যাধির আকার ধারন করেছে।

আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, যেমন হকার, এদেরও চাঁদা দিতে হবে। যে হকারগুলো খুবই গরীব মানুষ, কোনোভাবে বিক্রি করে তারা সংসার চালায়, এই গরীব লোকদের থেকে পর্যন্ত চাঁদা নিচ্ছে। চাঁদা নেওয়া হচ্ছে রিকশার থেকে। রিকশার যে স্ট্যান্ড সেখানে তাদের চাঁদা দিতে হচ্ছে। সিএনজির যে মালিক, ড্রাইভার তাদের চাঁদা দিতে হচ্ছে। সমাজের প্রত্যেক জায়গায়, বিশ্ববিদ্যালয়েও আমরা অনেক কিছু দেখছি। এই চাঁদার যে কালচার ডেভলপ করছে এটার বিরুদ্ধে যদি আমরা একটা মুভমেন্ট না করি তাহলে আমাদের দেশের জন্য দুর্দিন সামনে আছে বলে আমি মনে করি। 

তিনি বলেন, আমাদের সংসদে এখন তিনশ' সদস্য আছেন। অচিরেই ৩৫০ জনে সেটি উন্নীত হবে। আমার একটি পরামর্শ আছে যে আমরা যে ৩৫০ জন আছি আমরা যদি নিজেদের কাছে প্রতিজ্ঞা করি, আমরা কোনো চাঁদাবাজকে মদদ দেব না, সাহায্য করব না বরং তারা যদি এসব কাজ করে তাহলে তাদের প্রতিহত করব। তাহলে আমি মনে করি হয়ত বাংলাদেশ থেকে নির্মুল করা যাবে না, কিন্তু অনেকখানি আমরা কমাতে পারব। আমি এই সংসদে দাঁড়িয়ে আমার যে সহকর্মীরা আছেন সেই সংসদ সদস্যদের কাছে আমার আবেদন- চলুন আমরা এই একটা কাজে ঐক্যবদ্ধ হই। এখানে কোনো পয়সা খরচ হবে না। কোনো কিছু লাগবে না। কেবল আমরা প্রতিজ্ঞা করব এদেরকে মদদ দেব না এবং যেখানে জানব সেটা প্রতিহত করব। এই কাজটি করলে আমরা মনে করি বাংলাদেশ অনেকখানি বেঁচে যায়। এই যে উন্নত দেশের স্বপ্ন আমরা দেখি সেই স্বপ্ন হয়ত বাস্তব হবে, সেই উন্নত বাংলাদেশ গড়তে পারব।

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর