২৩ মে, ২০২৪ ১৫:৩১

এমপি আনার খুনের ঘটনায় সন্দেহভাজন কে এই নারী?

অনলাইন ডেস্ক

এমপি আনার খুনের ঘটনায় সন্দেহভাজন কে এই নারী?

আনোয়ারুল আজীম আনার ও সিলিস্তি রহমান (ডানে)

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার খুনের ঘটনায় সিলিস্তি রহমান নামে এক নারীর নাম সামনে এসেছে। এমপিকে হত্যার জন্য কলকাতার নিউটাউনে অভিজাত ‘সঞ্জীবা গার্ডেন্সে’ যে ফ্ল্যাট ভাড়া নেওয়া হয়, সেখানে অবস্থান করেছিলেন ওই নারী। হত্যা মিশন ঘটিয়ে মূল ঘাতক আমানউল্লাহ আমানের সঙ্গে তিনি গত ১৫ মে বাংলাদেশে ফেরেন। এরই মধ্যে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) সন্দেহভাজন ওই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, এমপি আনার খুনের মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহীনের বান্ধবী সিলিস্তি রহমান। তার বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলছে। ফ্ল্যাট কম্পাউন্ডের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত ১৩ মে ওই ফ্ল্যাটে তিনজন একসঙ্গে ঢোকেন। তাদের মধ্যে দুজন পুরুষ ও একজন নারী।

একদিন ফ্ল্যাটে অবস্থানের পর বের হয়ে আসেন এক পুরুষ ও এক নারী। ধারণা করা হচ্ছে, ওই নারীই সিলিস্তি। ১৩ মে তিনি আমানউল্লাহ ও এমপি আনারের সঙ্গে ফ্ল্যাটে ঢুকে থাকতে পারেন। ভিডিও ফুটেজে আমান ও তার সহযোগীদের ট্রলিব্যাগ আনা-নেওয়া, এমপি আনারের বাইরে রাখা জুতা ভেতরে নেওয়ার দৃশ্যও দেখা যায়।

এছাড়া সিলিস্তি রহমান নামে শাহীনের বান্ধবীর বাইরে থেকে পলিথিন ও ব্লিচিং পাউডার নিয়ে আসার দৃশ্যও তাতে রয়েছে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) সূত্র বলছে, তাদেরও ধারণা, ওই নারীই সিলিস্তি। কারণ তিনি ১৫ মে বিমানযোগে দেশে ফেরেন। তার সঙ্গে দেশে ফেরেন মূল ঘাতক আমানউল্লাহ।

সূত্রটি আরো জানায়, ধারণা করা হচ্ছে এমপি আনারকে কলকাতা নিতে এ নারীকেই ফাঁদ হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহীন। কারণ সব পরিকল্পনা করে শাহীন ১০ মে দেশে ফিরে এলেও সিলিস্তি থেকে যান কলকাতায়।

ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা বলেছেন, হত্যাকাণ্ডের সময়ে সিলিস্তি তিনতলা ফ্ল্যাটের একটি তলায় অবস্থান করছিলেন। তবে সামনে ছিলেন না। হত্যাকাণ্ড ঘটানোর পর তিনি নিচে নেমে আসেন। ওই নারী সিলিস্তি কি না, তদন্ত চলছে। 

ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারকে পরিকল্পিতভাবে ভারতের কলকাতার একটি বাড়িতে হত্যা করা হয়। গতকাল বুধবার এমন তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার একজন কর্মকর্তা।

ডিবি সূত্র জানায়, পাঁচ কোটি টাকার চুক্তিতে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক আখতারুজ্জামান ভাড়াটে খুনিদের এমপি আজীমকে হত্যার দায়িত্ব দেন। যার মূলে রয়েছেন আমান উল্লাহ আমান নামের এক সন্ত্রাসী। 

এ ঘটনায় গ্রেফতার তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। তাঁরা হলেন আমান উল্লাহ, জিহাদ ও সিয়াম। গত মঙ্গলবার ঢাকা ও কেরানীগঞ্জ থেকে প্রথমে তাঁদের আটক করে ডিবি। গতকাল শেরেবাংলানগর থানায় করা হত্যা মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মামলার বাদী এমপি আজীমের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন।

গ্রেপ্তার তিনজনের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের বরাতে ডিবি সূত্র জানায়, হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী এমপি আজীমের ছোটবেলার বন্ধু আখতারুজ্জামান শাহীন। হত্যাকাণ্ডে ছয়জনের বেশি জড়িত।

তাঁদের বেশির ভাগ বাংলাদেশি নাগরিক। ঠিকাদারি ব্যবসা, সীমান্তকেন্দ্রিক সোনা চোরাকারবার নিয়ে বিরোধসহ আরো কয়েকটি কারণে এমপি আনারকে হত্যা করা হয়।

ডিবি সূত্রের তথ্য মতে, আখতারুজ্জামানের সঙ্গে এমপি আজীমের কোটি কোটি টাকার লেনদেন নিয়ে ব্যাবসায়িক দ্বন্দ্ব ছিল। এই বিরোধের জের ধরে সূক্ষ্ম ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তিনি এমপি আজীমকে ভাড়াটে লোক দিয়ে হত্যা করান। তাঁরা একটি নিষিদ্ধ চরমপন্থী সংগঠনের সদস্য। আখতারুজ্জামান এর মধ্যে নেপাল হয়ে দুবাই পালিয়ে গেছেন।

বিডি-প্রতিদিন/শআ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর