অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে নির্বিচারে ও ঢালাওভাবে মামলা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে বাংলাদেশ পার্লামেন্ট জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশন (বিপিজেএ)। তারা বলেছে, এ ধরনের প্রবণতা এই সরকারের প্রতিশ্রুতির লঙ্ঘন। কারণ এই সরকার বাকস্বাধীনতা ও স্বাধীন সাংবাদিকতার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। গণমাধ্যমকর্মীদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া হত্যা মামলাসহ অন্যান্য মামলা হওয়ার কারণে উদ্বেগ প্রকাশও করেছে সংগঠনটি।
আজ বুধবার রাজধানী ঢাকার বনানীতে অনুষ্ঠিত বিপিজেএ’র এক সভায় এই উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিপিজেএ’র সভাপতি হারুন আল রশীদ।
সভায় বলা হয়, ‘এ ধরনের মামলা প্রচলিত আইনের অপব্যবহারকে উৎসাহিত করে। সাংবাদিকেরা কোনো অপরাধ করে থাকলে বা অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে যথাযথ ধারা অনুসরণ করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। নৈতিকতাবিবর্জিত সাংবাদিকতা অবশ্যই বর্জনীয়। কোনো সাংবাদিক যদি সাংবাদিকতার নামে বিগত সরকারের নিপীড়নমূলক কর্মকাণ্ডকে সমর্থন দিয়ে থাকেন তার বিরুদ্ধে প্রেস কাউন্সিলে একটি কমিটি গঠন করে তদন্ত ও অনুসন্ধান করা যেতে পারে। সেখানে দোষী সাব্যস্ত হলে প্রেস কাউন্সিল আইনে তার সাজা হতে পারে। সাংবাদিকদের অন্যান্য অপরাধের ক্ষেত্রেও প্রেস কাউন্সিলের সুপারিশের ভিত্তিতে প্রচলিত আইনে বিচার হতে পারে।’
‘বিগত সরকারের সময়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, সাইবার নিরাপত্তা আইনসহ নিবর্তনমূলক বিভিন্ন আইন প্রয়োগের মাধ্যমে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধের প্রয়াস চালানো হয়েছিল, যা সারাবিশ্বে অত্যন্ত নিন্দিত ও সমালোচিত হয়েছিল। আর বর্তমানে সাংবাদিকদের নামে এভাবে ক্রমাগত হত্যা মামলা দেওয়ার প্রবণতাও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন করছে বলে বিপিজেএ মনে করে।’
এ অবস্থায় দায়ের করা মামলায় অভিযুক্ত সাংবাদিকদের কোনো সংশ্লিষ্টতা না পাওয়া গেলে এসব মামলা থেকে তাদের দ্রুত অব্যাহতি দেওয়ার আহ্বান জানায় বিপিজেএ।
সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিপিজেএ’র সহ-সভাপতি মসিউর রহমান খান, অর্থ-সম্পাদক শরীফ খিয়াম আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক জেসমিন মলি, নির্বাহী কমিটির সদস্য আজমল হক হেলাল, এমরান হোসাইন শেখ, সামসুদ্দিন আহমেদ, মো. সাইফুল্লাহ ও মিজানুর রহমান।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ