বিংশ শতকের প্রভাবশালী রুশ শিল্পী কাজিমির মালেভিচ-এর নামে অজানা তিনটি তৈলচিত্র রোমানিয়ার ন্যাশনাল মিউজিয়াম অব কনটেমপোরারি আর্টে প্রদর্শিত হচ্ছে। তবে এগুলো আসল না ভুয়া—নিয়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক বিতর্ক।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রমাণিত হলে ছবিগুলোর বাজারমূল্য দাঁড়াবে অন্তত ১০০ মিলিয়ন পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা)।
ইসরায়েলি নাগরিক ইয়ানিভ কোহেন দাবি করেছেন, এই তিন ছবি তাঁর স্ত্রীর দাদি ইভা লেভান্দো-এর কাছ থেকে পাওয়া। সোভিয়েত আমলে ওডেসার হিসাবরক্ষক বাবার কাছ থেকে লেভান্দো এগুলো উত্তরাধিকারসূত্রে পান। ১৯৯০ সালে ইসরায়েলে অভিবাসনের সময় তিনি ছবিগুলো সঙ্গে নিয়ে যান।
প্রদর্শিত তিন চিত্রকর্ম হলো—সুপ্রিমেটিস্ট কম্পোজিশন উইথ গ্রিন অ্যান্ড ব্ল্যাক রেক্টেঙ্গল (১৯১৮), কাবোফিউচারিস্ট কম্পোজিশন (১৯১২–১৩), এবং সুপ্রিমেটিস্ট কম্পোজিশন উইথ রেড স্কয়ার অ্যান্ড গ্রিন ট্রায়াঙ্গল (১৯১৫–১৬)।
তবে শিল্পবিশেষজ্ঞ কনস্ট্যানটিন আকিনশা বলেছেন, মালেভিচ ১৯১৭ সালের পর কোনো ছবি ব্যক্তিগতভাবে বিক্রি করেননি। ফলে এই তিনটির কাহিনি সন্দেহজনক। অন্যদিকে কিয়েভ-ভিত্তিক শিল্প ইতিহাসবিদ দিমিত্রো হোরবাচভ ছবিগুলোকে ‘প্রথম শ্রেণির মালেভিচ’ বলেছেন, যদিও তাঁর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন আছে।
ফরাসি ও জার্মান ল্যাবরেটরির পরীক্ষায় দেখা গেছে, রং ও উপাদান মালেভিচের সময়কালের। তবে আসল প্রমাণ করার মতো কোনো সনদ পাওয়া যায়নি। মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষও জানিয়েছে, এটি কেবল একটি ‘কিউরেটরিয়াল এক্সপেরিমেন্ট’, মালেভিচের আনুষ্ঠানিক কাজ নয়।
শিল্পবাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মালেভিচের একটি আসল ছবি ২০১৮ সালে ৮৫ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি হয়েছিল। তাই নতুন পাওয়া ছবিগুলো সত্য হলে এর মূল্য দাঁড়াতে পারে ১৬০–১৯০ মিলিয়ন ডলার।
এখনও রহস্যের জট খুলেনি। ফলে বুখারেস্টের প্রদর্শনী শিল্পপ্রেমীদের কাছে একইসাথে বিস্ময় ও সংশয়ের জন্ম দিয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/আশিক