গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হওয়ায় তার পদত্যাগপত্রের কোনও ভূমিকা নেই বলে দাবি করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
সোমবার দুপুরে এক ফেসবুক পোস্টে তিনি এই দাবি করেন।
এতে হাসনাত আব্দুল্লাহ লেখেন, “হাসিনাকে উৎখাত করা হয়েছে; একটি অবৈধ সরকারকে জনগণ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে উৎখাত করেছে। এখানে পদত্যাগপত্রের কোনও ভূমিকা নেই।”
এর আগে রাষ্ট্রপতির কাছে শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র নেই বলে দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সেখানে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এর সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। তাতে শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রপতি মানবজমিন পত্রিকার সম্পাদক মতিউর রহমানকে বলেন, “আমি শুনেছি তিনি পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু আমার কাছে কোনও দালিলিক প্রমাণ নেই। বহু চেষ্টা করেও আমি ব্যর্থ হয়েছি। তিনি হয়তো সময় পাননি।”
সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, “৫ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টায় বঙ্গভবনে ফোন এলো প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন থেকে। বলা হলো- মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গভবনে আসবেন মহামান্য প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য। এটা শুনেই প্রস্তুতি শুরু হলো বঙ্গভবনে। ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই ফোন এলো তিনি আসছেন না। ”
প্রেসিডেন্ট বলেন, “চারদিকে অস্থিরতার খবর। কী হতে যাচ্ছে জানি না। আমি তো গুজবের ওপর নির্ভর করে বসে থাকতে পারি না। তাই সামরিক সচিব জেনারেল আদিলকে বললাম খোঁজ নিতে। তার কাছেও কোনো খবর নেই। আমরা অপেক্ষা করছি। টেলিভিশনের স্ক্রলও দেখছি। কোথাও কোনো খবর নেই। এক পর্যায়ে শুনলাম, তিনি দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। আমাকে কিছুই বলে গেলেন না। যা সত্য তাই আপনাকে বললাম। যাই হোক, সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার যখন বঙ্গভবনে এলেন তখন জানার চেষ্টা করেছি প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন কি না? একই জবাব। শুনেছি তিনি পদত্যাগ করেছেন। মনে হয় সে সময় পাননি জানানোর। সব কিছু যখন নিয়ন্ত্রণে এলো তখন একদিন মন্ত্রিপরিষদ সচিব এলেন পদত্যাগপত্রের কপি সংগ্রহ করতে। তাকে বললাম, আমিও খুঁজছি। এক পর্যায়ে প্রেসিডেন্ট বললেন, এ নিয়ে আর বিতর্কের কিছু নেই। প্রধানমন্ত্রী চলে গেছেন এটাই সত্য। তারপরও কখনও যাতে এ প্রশ্ন না উঠে সেজন্য সুপ্রিম কোর্টের মতামত নিয়েছি। ”
রাষ্ট্রপতি জানান, “প্রেসিডেন্টের পাঠানো রেফারেন্সের প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ ৮ আগস্ট এ সম্পর্কে তাদের মতামত দেন। এতে বলা হয়, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সাংবিধানিক শূন্যতা দূর করতে এবং নির্বাহী কার্যক্রম সুন্দরভাবে পরিচালনার উদ্দেশ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা যেতে পারে। প্রেসিডেন্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টামণ্ডলীকে শপথবাক্য পাঠ করাতে পারবেন বলে আপিল বিভাগ মতামত দেন।”