বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) মহাপরিচালক ড. এনগোজি ওকনজো-ইওয়েলা বলেছেন, বৈশ্বিক বাণিজ্য সংস্থা বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণ প্রক্রিয়াকে মসৃণ করতে এবং শীর্ষ ব্যবসায়ীদের সরবরাহ শৃঙ্খল দক্ষিণ এশীয় এই দেশে স্থানান্তরে উৎসাহিত করবে।
শুক্রবার সুইজারল্যান্ডের দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক বৈঠকের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এই আশ্বাস দেন তিনি।
বাংলাদেশের এলডিসি ক্যাটাগরি থেকে উত্তরণের বিষয়ে ড. এনগোজি বলেন, ডব্লিউটিও এই প্রক্রিয়া মসৃণ করতে কাজ করবে। আমরা নীতিমালা প্রতিষ্ঠা করেছি। আমরা আপনাদের সঙ্গে কাজ করব।
তিনি জানান, শীর্ষ বৈশ্বিক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করছেন এবং তাদের সরবরাহ শৃঙ্খল বিকেন্দ্রীকরণের অংশ হিসেবে বাংলাদেশে স্থানান্তরের জন্য উৎসাহিত করছেন।
তিনি বলেন, আমি তাদের বলেছি, কেন বাংলাদেশ নয়? আমরা বাংলাদেশে আরও সরবরাহ শৃঙ্খল আনার জন্য আরও জোর দিচ্ছি।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনুস ড. এনগোজির নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, তিনি বৈশ্বিক বাণিজ্য আলোচনায় গতিশীলতা এনেছেন।
অধ্যাপক ইউনুস আরও বলেন, বাংলাদেশ এখন ব্যবসার জন্য প্রস্তুত। দুর্নীতি ও অলিগার্চদের সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যবসায়িক চুক্তি দেশের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের তরুণ, প্রযুক্তি-দক্ষ এবং দক্ষ কর্মীদের বিশাল সমৃদ্ধি রয়েছে, যা দেশকে সহজেই বৃহত্তম উৎপাদন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে একটি করতে পারে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার চালাচ্ছে এবং চট্টগ্রাম বন্দরের জট কমানোর মাধ্যমে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বলেও তিনি জানান।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইও শুরু করেছি। বিগত শাসক পরিবারের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা দুর্নীতিগ্রস্ত আন্তর্জাতিক চুক্তিতে জড়িত ছিলেন।
ড. এনগোজি জানান, জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানের সময় তরুণ প্রতিবাদকারীদের মনোভাব তাকে মুগ্ধ করেছে। তারা সবচেয়ে প্রভাবশালী বার্তা দিয়ে এক নজিরবিহীন উদাহরণ স্থাপন করেছে।
তিনি দেশের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে অধ্যাপক ইউনুসের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন এবং বাংলাদেশকে আবারও বৈশ্বিক মানচিত্রে স্থান দেওয়ার কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, আপনি স্থিতিশীলতার প্রতীক। বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা ও শান্তি ফিরে এসেছে।
দাভোসের একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত আলোচনার সময় ড. এনগোজি বাংলাদেশকে মৎস্য ভর্তুকি চুক্তি অনুমোদনের আহ্বান জানান। জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ এটি পর্যালোচনা করবে।
মৎস্য সংক্রান্ত ফিশ-২ চুক্তি নিয়ে ড. এনগোজির অনুরোধের বিষয়ে বাংলাদেশের জেনেভায় জাতিসংঘের স্থায়ী প্রতিনিধি তারেক আরিফুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ গঠনমূলক আলোচনায় সম্পৃক্ত রয়েছে।
ড. এনগোজি ডব্লিউটিওতে আলোচনাধীন অন্যান্য চুক্তি, যেমন উন্নয়নের জন্য বিনিয়োগ সুবিধা চুক্তি বাস্তবায়নে বাংলাদেশের সহযোগিতা চান।
বাংলাদেশ সরকারের এসডিজি সমন্বয়ক লামিয়া মুর্শেদও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/কেএ