সেবা-পরিষেবায় উন্নতি করতে না পারলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসকে ভেঙে দিয়ে নতুন আরেকটি এয়ারলাইনস সংস্থা গড়ে তোলার প্রস্তাব এসেছে। এ প্রস্তাব দিয়েছে সরকার গঠিত বৈষম্যহীন টেকসই উন্নয়নের জন্য অর্থনৈতিক কৌশল পুনর্নির্ধারণ ও প্রয়োজনীয় সম্পদ আহরণবিষয়ক টাস্কফোর্স।
প্রস্তাব অনুযায়ী, নতুন এয়ারলাইনসের নাম হতে পারে ‘বাংলাদেশ এয়ারওয়েজ’। বিমানের অর্ধেক সম্পদ ব্যবহার করে স্বাধীনভাবে বিশ্বমানের কোনো ব্যবস্থাপনা কোম্পানি দিয়ে প্রস্তাবিত এয়ারলাইনস কোম্পানিটি পরিচালনা করা যেতে পারে। নতুন এয়ারলাইনস গঠন হলেও বিমান বিলুপ্ত হবে না। সমান্তরালে দুই এয়ারলাইনস প্রতিযোগিতামূলকভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করে যেতে পারে। দুটি এয়ারলাইনসের কোনোটি যদি প্রত্যাশিত পরিষেবা দিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সেটি বন্ধ করে দেয়া যেতে পারে।
টাস্কফোর্স কমিটির সুপারিশ নিয়ে সোমবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন এয়ারলাইনস গঠনের সুপারিশ নিয়ে কথা বলেন শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ উন্নত ও আধুনিক আকাশ পরিবহনসেবা পাওয়ার দাবিদার। কিন্তু এ ধরনের সার্ভিস দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ বিমান। আমাদের দেশে বিদেশী ব্যবসায়ীরা এসে মুনাফা অর্জন করে নিয়ে যাচ্ছেন। অথচ বাংলাদেশ বিমান কিছুই করতে পারছে না। এতে যাত্রীসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ জনগণ। এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে শূন্য থেকে নতুন একটি এয়ারলাইনস তৈরি করাটা সময়ের দাবি। পরিকল্পনা অনুযায়ী বাংলাদেশ বিমান ভেঙে নতুন নামে পুরোপুরি নিউ মডেলে একটি এয়ারলাইনস তৈরি করা হবে।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘অর্ধেক সম্পদ ব্যবহার করে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব। এমনটাই মনে করছে অর্থনৈতিক কৌশল পুনর্নির্ধারণ টাস্কফোর্স কমিটি। সব ধরনের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা যেন বহাল থাকে সেজন্য বিশ্বমানের স্বতন্ত্র ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পরিচালনা করা যেতে পারে।’
প্রসঙ্গত, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন, গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংসহ বিভিন্ন পরিষেবা দিয়ে ২৮২ কোটি টাকা নিট মুনাফা করেছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে সংস্থাটির নিট মুনাফা ছিল ২২ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে মুনাফা বাড়লেও এখনো বিপুল পরিমাণ দায় ও দেনা রয়ে গেছে সংস্থাটির। বিমানের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের নিরীক্ষা প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, সংস্থাটির দায় ও দেনার পরিমাণ ১৪ হাজার ৯৩৬ কোটি টাকা। সংস্থাটির দায় ও দেনার সিংহভাগই বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) ও পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের কাছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিয়মিত বিমানবন্দর ও আকাশসীমা ব্যবহার ফি পরিশোধ না হওয়া এবং জ্বালানি তেলের মূল্য পরিশোধ না করায় বড় অংকের দায় ও দেনা থেকে বের হতে পারছে না বিমান।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল