বিদ্যুৎ সেবা চালু রেখে আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে সারা দেশে কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সাত দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচির ৬ষ্ঠ দিন আজ সোমবার সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন পল্লী বিদ্যুৎ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম।
অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়ন, হয়রানি বন্ধ, মামলা প্রত্যাহারসহ সাত দফা দাবিতে সারা দেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গত ২১ মে থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনির্দিষ্টকালের অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।
প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চলমান আন্দোলন বৈষম্যহীন একটি সুন্দর ও আধুনিক বিতরণ ব্যবস্থা বিনির্মাণের আন্দোলন, যেখানে সারা দেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৪৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর অংশগ্রহণ রয়েছে। পক্ষান্তরে আরইবি (বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড) আগের মতো সরকারের কাছে ভুল বার্তা দিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সংস্কারের এই যৌক্তিক আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। অথচ এখানে হাজার হাজার পল্লী বিদ্যুতের কর্মী সমবেত হয়েছে স্বেচ্ছায় এবং স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে। যারা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের শোষণ, বৈষম্য, নির্যাতন ও নিপীড়ন থেকে মুক্তি চায়। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমাদের সঙ্গে অন্য কোনো ব্যক্তি, সংস্থা বা দেশের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। আমাদের বিরোধ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সঙ্গে, যা সমাধানে আমরা এই কর্মসূচি পালনে বাধ্য হয়েছি।
তিনি আরও বলেন, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রথম চার দিন অবস্থান কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালনের পর সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে ৫ম দিনে আরইবির বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়। আজ ৬ষ্ঠ দিনের মতো বিদ্যুৎ সেবা স্বাভাবিক রেখে কর্মসূচি পালিত হলেও সরকারের পক্ষ থেকে সমস্যা সমাধানে দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি।
সাত দফা দাবি হলো—
১. পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীদের ফ্যাসিবাদী কায়দায় দমন-পীড়নের মাধ্যমে কর্মপরিবেশ অস্থিতিশীলকারী, অত্যাচারী আরইবি চেয়ারম্যানের অপসারণ।
২. ‘এক ও অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়নের মাধ্যমে আরইবি-পবিস একীভূতকরণ’ অথবা দেশের অন্যান্য বিতরণ সংস্থার ন্যায় পুনর্গঠন।
৩. মিটার রিডার কাম মেসেঞ্জার, লাইন শ্রমিক এবং পৌষ্য কর্মীদের চাকরি নিয়মিতকরণ।
৪. মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারপূর্বক চাকরিচ্যুতদের স্বপদে পুনর্বহাল।
৫. গ্রাহক সেবার স্বার্থে লাইনক্রুসহ সব হয়রানি ও শাস্তিমূলক বদলি আদেশ বাতিল এবং বরখাস্ত ও সংযুক্ত কর্মীদের অবিলম্বে পদায়ন করতে হবে।
৬. জরুরি সেবায় নিয়োজিত কর্মীদের আন্তর্জাতিক নিয়মানুযায়ী নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা/শিফটিং ডিউটি বাস্তবায়নের জন্য অতিদ্রুত জনবলের ঘাটতি পূরণ করতে হবে।
৭. পূর্ণাঙ্গ সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন বোর্ড গঠন করে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কার্যক্রম পরিচালিত করতে হবে।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ