সরকারি হিসাবে ভরা মৌসুমে উৎপাদন কিছুটা বাড়লেও বাজারে ইলিশের দাম বেড়ে যাওয়ার পেছনে সরবরাহের ঘাটতির পাশাপাশি চাঁদাবাজিকেও দায়ী করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
রবিবার (২১ জুলাই) দুপুরে সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, “সরবরাহ কম—এটাই প্রধান কারণ। আর চাঁদাবাজিও আছে, যেটা এখনো পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি।”
লিখিত বক্তব্যে ফরিদা আখতার জানান, “ইলিশের ভরা মৌসুম শুরু হয়েছে। এ বছর জাটকা রক্ষা সপ্তাহসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে ইলিশ সংরক্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। ১২ জুন থেকে ২০ জুলাই পর্যন্ত ৪৬ হাজার ৭৯০ মেট্রিক টন ইলিশ আহরিত হয়েছে।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মডেল অনুযায়ী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ইলিশ উৎপাদন ৫ লাখ ৩৮ হাজার থেকে ৫ লাখ ৪৫ হাজার মেট্রিক টন পর্যন্ত হতে পারে। তবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের মতো উৎপাদন হ্রাসের প্রবণতা অব্যাহত থাকলে বাস্তবে উৎপাদন আরও কম হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।”
এ সময় তিনি জাটকা নিধন বন্ধে চলমান অভিযানের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, “জেলা প্রশাসন, নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড ও নৌ পুলিশের যৌথ অভিযানের মাধ্যমে জাটকা সংরক্ষণের চেষ্টা চললেও পুরোপুরি সফল হওয়া যায়নি। এর সঙ্গে নদীর নাব্যতা হ্রাস, নদী দূষণ, অনিয়মিত বৃষ্টিপাত ও অতিরিক্ত তাপমাত্রা সমস্যাও যুক্ত হয়েছে। গত কয়েক সপ্তাহের অতিবৃষ্টি ও ঝড়ের কারণে অনেক জেলে নদীতে নামতে পারেননি। তবে যারা গেছেন, তারা কিছুটা হলেও মাছ পাচ্ছেন।”
ফরিদা আখতার বলেন, “বর্তমানে ঢাকায় ১ কেজির নিচে ওজনের ইলিশের দাম ২০০০ টাকার বেশি। সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। বাজারে সরবরাহ বাড়লে দাম কমবে বলে আশা করছি।”
তিনি আরও জানান, “প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকেও ইলিশের দাম নিয়ন্ত্রণে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে বরিশাল ও চট্টগ্রামে ইলিশের দাম তুলনামূলকভাবে কম।”
প্রবাসীদের জন্য ইলিশ রপ্তানির পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরে তিনি বলেন, “দেশে বসবাসরত মানুষের পাশাপাশি প্রবাসী বাংলাদেশিদের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে পরীক্ষামূলকভাবে এক বা দুইটি দেশে ইলিশ রপ্তানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রপ্তানির জন্য সেসব দেশ বাছাই করা হচ্ছে যেখানে বাংলাদেশি প্রবাসীর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি।”
বিডি প্রতিদিন/আশিক