রাজনীতির পুরোপুরি ঊর্ধ্বে নয় খেলাধুলা। উপমহাদেশে ক্রিকেটের সঙ্গে রাজনীতির সম্পৃক্ততা গভীর। বিশেষ করে দুই প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের রাজনৈতিক সম্পর্ক একেবারেই শীতল। নিরপেক্ষ ভেন্যু ছাড়া দুই দেশ পরস্পরের বিপক্ষে কোনো ধরনের ক্রিকেট ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে না বহু বছর। ইদানীং রাজনৈতিক কারণে বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্কও শীতল। আওয়ামী সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের মাটিতে ক্রিকেট কিংবা ফুটবল খেলতে রাজি হচ্ছে না দেশটি। ঢাকায় চলমান সাফ অনুর্ধ্ব-২০ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে খেলতে আসেনি প্রতিবেশী ভারত। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো ধরনের ক্রিকেটও খেলতে রাজি নয় দেশটি। আগস্টে তিনটি করে টি-২০ ও ওয়ানডে খেলতে ভারত আসবে বলে জানিয়েছিল। পরে রাজি হয়নি। দেশটির এমন শক্ত অবস্থানে আগামী সেপ্টেম্বরে দুবাইয়ে ছয় জাতির এশিয়া কাপের ভবিষ্যৎ পুরোপুরি ঝুলে গেছে। শুধু তাই নয়, ২৪ জুলাই ঢাকায় এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) এজিএমও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। দুই দিনব্যাপী এসিসির সভায় অংশ না নেওয়ার কথা জানিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। ভারতের সঙ্গে ঢাকায় এসিসির সভায় অংশ নিতে আসবে না জানিয়েছে দুই টেস্ট খেলুড়ে দেশ আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। বিসিবির একজন প্রভাবশালী পরিচালক এসিসির সভা নিয়ে বলেন, ‘যদি এসিসির সভায় তিনটি টেস্ট খেলুড়ে দেশ অংশ না নেয়, তাহলে সেই সভা নিয়ম মাফিক বাতিল হয়ে যাবে।’ এসিসির সদস্যগুলোর মধ্যে টেস্ট খেলুড়ে দেশ বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান।
ভারত, আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কা না এলেও এসিসির সভা আয়োজনে প্রস্তুত বিসিবি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বোর্ড পরিচালক এমনই বলেছেন, ‘আমরা জেনেছি ভারত, আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ডের কর্মকর্তারা আসবেন না। তারপরও আমরা প্রস্তুত সভা আয়োজনে। যেহেতু আমরা সভার আয়োজক, সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েই রেখেছি।’ এসিসির সভা ২৩ ও ২৪ জুলাই। অবশ্য এশিয়া কাপ মাঠে গড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। যদি এসিসির সভার ভেন্যু পরিবর্তিত হয়। ভেন্যু পরিবর্তনের সম্ভাবনা অবশ্য কম। কারণ ২৩ জুলাই ঢাকায় আসবেন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) সভাপতি মহসিন নাকভি। তিনি ২৪ জুলাই ঢাকায় বাংলাদেশ-পাকিস্তান টি-৩০ সিরিজের শেষ ম্যাচ দেখবেন। সেজন্যই সম্ভাবনা কম ভেন্যু পরিবর্তনের। ভারত কেন আসবে না, তার প্রকৃত কোনো উত্তরও দেয়নি দেশটির ক্রিকেট বোর্ড। অবশ্য সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ না নেওয়ার কারণ জানিয়েছিল। আগামী মাসে বাংলাদেশে ৩টি করে টি-২০ ও ওয়ানডে খেলার কথা ছিল ভারতের। রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য বাংলাদেশ সফর করতে অনীহা জানায়। পরবর্তীতে দুই দেশের বোর্ডের আলোচনায় আগামী বছরের এপ্রিলে সিরিজ আয়োজনের তারিখ নির্ধারিত হয়। পরবর্তীতে সেই সফর বাতিল করে ভারত।