মঙ্গলবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

মুখ বেঁধে স্কুলছাত্রকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার ৪

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলায় ঢিল ছোরাকে কেন্দ্র করে ছোটদের বিরোধ বড়দের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। স্কুলছাত্র জুনায়েদ হাসান ওরফে রিমনকে (১০) খেলার ছলে ডেকে নিয়ে গামছা দিয়ে মুখ চেপে ধরে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ১৬ এপ্রিল উপজেলার নয়নগর ৬নং ওয়ার্ডের বাগমারা ধান খেতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে চারজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গ্রেফতাররা হলো- ইমন, আল আমিন, আনোয়ার হোসেন ওরফে বাবু ও মানিক মিয়া।

গতকাল দুপুরে পিবিআই-এর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই-এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম জানান, ‘১৬ এপ্রিল রিমন সমবয়সীদের সঙ্গে খেলাধুলার জন্য বাসা থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। পরের দিন সকালে বাদীর বাড়ির পার্শ্ববর্তী ধান খেত থেকে তার রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই দিনই নিহত রিমনের বাবা বাদী হয়ে সোনারগাঁও থানায় মামলা করেন।

২৩ এপ্রিল মামলাটি পিবিআই-এ হস্তান্তর করা হয়। তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে পিবিআইয়ের কর্মকর্তারা চারজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

গ্রেফতারের পর আসামি ইমন জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, ঘটনার দুই দিন আগে বৃহস্পতিবার আসামি আল আমিনের (৩৫) ভাইয়ের ছেলে তানজিনের (৭) সঙ্গে নিহত রিমন খেলার ছলে ইটের টুকরা দিয়ে ঢিল ছোরাকে কেন্দ্র করে বিরোধ তৈরি হয়। এর পর তা বড়দের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।

জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানায়, ‘ঘটনার আগের দিন শুক্রবার দুপুরে গ্রেফতার আসামি আল আমিন এবং তার ভাই আনোয়ার হোসেন ওরফে বাবু এ হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতা করার জন্য ইমনকে এক হাজার টাকার প্রলোভন দেখিয়ে রাজি করায়।

পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী রিমন স্কুল শেষে সমবয়সীদের সঙ্গে খেলাধুলার জন্য বাড়ির পাশের বাগমারা চকে (ধান খেতের উঁচু জায়গা) যায়। সেখানে ইমনও যায়। কিছু সময় খেলাধুলার পরে অন্যরা সেখান থেকে চলে যায়। তবে বক শিকারের কথা বলে রিমনকে নিয়ে সেখানে অবস্থান করে ইমন। পরে দুপুর আড়াইটার সময় ইমন পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী রিমনকে চক থেকে খানিকটা দূরে ধান খেতের আইলে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকেই অপেক্ষা করছিল আসামি আল আমিন এবং তার ভাই আনোয়ার হোসেন ওরফে বাবু। রিমন তাদের কাছাকাছি এলেই আল আমিন তার কোমর থেকে গামছা বের করে রিমনের মুখ চেপে ধরে। ইমন তার হাতে থাকা চাকু (ছুরি) দিয়ে রিমনের গলায় উপর্যুপরি আঘাত করে। এ অবস্থায় রিমন হাত-পা ছোরাছুরি করলে আনোয়ার হোসেন ওরফে বাবু তার পা চেপে ধরে এবং ইমন হাত চেপে ধরে। মৃত্যু নিশ্চিত করে তিনজনে ধরাধরি করে পাশের ধান খেতে লাশ ফেলে চলে যায়।

ঘটনার দিন বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও জুনায়েদের সন্ধান না পেয়ে তার স্বজনরা আসামিদের পরামর্শে কবিরাজের কাছে যায়। সেখানেও কাজ না হলে বাড়ি ফিরে আসে। পরের দিন ১৭ এপ্রিল সকাল সাড়ে ১০টায় বাগমারা চকের ধান খেতে আবার খুঁজতে গেলে ধান খেতের সেচকর্মীরা কয়েকটি শিয়াল ঘোরাফেরার তথ্য দেয়। এর সূত্র ধরে ধান খেতের ভিতরে তার ক্ষতবিক্ষত রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখে।

সর্বশেষ খবর