জামায়াত-শিবিরের মদদে আমেরিকাতেও মুক্তিযোদ্ধাদের চরিত্র হননের সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টা চলছে। নিউইয়র্ক হতে প্রকাশিত বাংলা ভাষার কয়েকটি পত্রিকা, অনলাইন নিউজপেপার এবং সামাজিক মিডিয়ায় চালানো হচ্ছে এসব অপপ্রচার। এ ব্যাপারে প্রবাসের মুক্তিযোদ্ধারা সজাগ রয়েছেন এবং নিজেদের স্বার্থেই সকলে ঐক্যবদ্ধ থাকার সংকল্প ব্যক্ত করেছেন। একইসঙ্গে শত বাধা সত্ত্বেও একাত্তরের ঘাতকদের বিচার অব্যাহত রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানান তারা।
শনিবার রাতে নিউইয়র্ক সিটির জ্যামাইকায় একটি পার্টি হলে যুক্তরাষ্ট্র মুক্তিযোদ্ধা সংসদের মতবিনিময় সভায় বক্তরা এসব কথা বলেন। যুক্তরাষ্ট্র মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহবায়ক ড. এম এ বাতেনের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব মশিউল আলম জগলুর সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ছিলেন নূরনবী কমান্ডার, লাবলু আনসার, গোলাম মোস্তফা খান মিরাজ, এ বি সিদ্দিক, শফিকুল ইসলাম, আলাউদ্দিন, ড. প্রদীপ রঞ্জন কর।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) হেলাল মুর্শেদ খান নিউইয়র্কে আসছেন মে মাসে। এ উপলক্ষে বিস্তারিত প্রস্তুতি গ্রহণকল্পে এ সভার আহবান করা হলেও তাতে প্রাধান্য পায় একাত্তরের ঘাতকদের বিচার বন্ধে নিউইয়র্কে চলমান ষড়যন্ত্র।
সভায় মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, বিপুল অর্থে চালানো হচ্ছে নানা ষড়যন্ত্র। ভাড়াটে সাংবাদিক ও সংবাদপত্রগুলো জাতিসংঘ, স্টেট ডিপার্টমেন্ট, বিশ্বব্যাংক, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশালের মত সংস্থায় বিচার প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে তৎপর রয়েছে। তারা অভিযোগ করেন যে, এ ধরনের অপপ্রচারের জন্য বাংলাদেশ থেকে বিপুল অর্থ পাচার করা হয়েছে এবং এ অর্থ ঢাকা থেকে বহনকারীদের মধ্যেও মিডিয়ার লোকজন রয়েছেন।
মুক্তিযোদ্ধারা আরও অভিযোগ করেন, ‘১/১১ পরবর্তী সময়ে যেভাবে রাজনীতিকদের চরিত্র হননের সংঘবদ্ধ চেষ্টা চলেছে, ঠিক একইভাবে মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে এখন লাগাতার অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধাদের সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করতে জামায়াত-শিবিরের অপপ্রচারে নিউইয়র্কে বসবাসরত একাত্তরের আলবদর এবং রাজাকারের সন্তানেরাও তৎপর বলেও মুক্তিযোদ্ধারা উল্লেখ করেন।
মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, ‘মানবতাবিরোধী অপরাধী হিসেবে আদালত কর্তৃক মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আলবদর আশরাফুজ্জামান খান এবং রাজাকার জব্বার ইঞ্জিনিয়ার যুক্তরাষ্ট্রে আত্মগোপন করেছে। এদেরকে গ্রেফতার করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়ার ব্যাপারেও সরকারের গৃহিত উদ্যোগে সমর্থন জানানো হবে।’
জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধাদের ওই মতবিনিময় সভায় গৃহিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান নিউইয়র্কে অবস্থানকালে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত প্রবাসীদের সাথে একটি মতবিনিময় সমাবেশ হবে।
বিডি-প্রতিদিন/১৯ এপ্রিল, ২০১৫/মাহবুব