জাতিসংঘ মহাসচিবের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বিষয়ক একজন বিশেষ উপদেষ্টা রানি ম্যাক্সিমা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণতাপূর্ণ নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, ‘নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও শুধুমাত্র উদ্ভাবনীমূলক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব উন্নয়নের পথে ধাবিত হচ্ছে। সব ধরনের কর্মকাণ্ডে সকল জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনন্য এক উদাহরণে পরিণত হয়েছে।’
বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ড. আতিউর রহমান নেদারল্যান্ডের রানি ম্যাক্সিমার সঙ্গে শুক্রবার আইএমএফ হেডকোয়ার্টারে এক দ্বি-পাক্ষিক সভায় মিলিত হন। ড. আতিউর ‘আইএমএফ-ওয়ার্ল্ড ব্যাংক স্প্রিং মিটিংস ২০১৫’ তে অংশ নিতে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। তার সঙ্গে সভায় রানি বাংলাদেশের আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণ কর্মসূচির প্রশংসা করে আগামী বছরের শুরুর দিকে বাংলাদেশ ভ্রমণের আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি একইসঙ্গে মোবাইলে আর্থিক সুবিধা ও নারীর ক্ষমতায়নের মতো আর্থিক অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মকাণ্ড ত্বরান্বিত করা এবং কৃষি ও এসএমই-র উন্নয়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভূমিকার প্রশংসা করেন।
রানি ম্যাক্সিমা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গত সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে তার সাক্ষাতের কথা স্মরণ করে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টার ব্যাপক প্রশংসা করেন। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী তাকে বাংলাদেশ ভ্রমণের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। বাংলাদেশ ভ্রমণের সময় তিনি আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণে কিছু নতুন উদ্ভাবন দেখবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ত্বরান্বিতকরণে তার ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং বাংলাদেশের কিছু উল্লেখযোগ্য উদাহরণও তার কাছে তুলে ধরেন।
একই দিনে গভর্নর ড. রহমান গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি কর্তৃক ওয়াশিংটন ডিসিতে ন্যাশনাল প্রেস ক্লাব-এ আয়োজিত “অবৈধ আর্থিক প্রবাহ এবং অভ্যন্তরীণ সম্পদের সংযোজন” শীর্ষক অপর এক অনুষ্ঠানে যোগদান করেন। সেখানে তিনি আফ্রিকান উন্নয়ন ব্যাংক, নেদারল্যান্ডের বৈদেশিক বাণিজ্য ও উন্নয়ন সহযোগিতা মন্ত্রী এবং গুয়াতেমালার সাবেক উপরাষ্ট্রপতির সঙ্গে প্যানেলিস্ট হিসেবে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
ড. আতিউর জিএফআইর পর্যবেক্ষণের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে বলেন, অবৈধ অর্থপাচার দেশের মোট সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ থেকে বেশি, যা বিনিয়োগযোগ্য সম্পদ নিঃশেষ করে দিচ্ছে এবং প্রবৃদ্ধি অর্জন ও দারিদ্র দূরীকরণকে ব্যাহত করছে। তিনি বলেন যে, দূর্নীতির বিরুদ্ধে জাতিসংঘের অধিবেশন মোতাবেক বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ দুর্নীতি উদ্ভূত সম্পদ (চুরিকৃত সম্পদ) উদ্ধারের জন্য বিদেশী সহযোগীদের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের একটি নতুন মূল্য হস্তান্তর মনিটরিং ইউনিট ভ্রান্ত চালানের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ পাচার শনাক্ত করতে বাণিজ্যিক লেনদেনসমূহ পর্যবেক্ষণ করছে। তিনি আরও বলেন যে, বাংলাদেশ ব্যাংকে অবস্থিত বিএফআইইউ এবং এএমএল-সিএফটি আইন এবং নীতিমালা বাস্তবায়নকারী বাংলাদেশের অন্যান্য কর্তৃপক্ষ দরকারী আন্তঃদেশীয় একটি নতুন সহযোগিতা কাঠামো নির্মাণে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে অংশগ্রহণ করছে।
বিডি-প্রতিদিন/ ২০ এপ্রিল, ২০১৫/ রশিদা