বিএনপির সেই সমর্থক সুমন আহমেদ (৩০) ডিটেনশন সেন্টার থেকে মুক্তি পেলেন ঈদের দিন। ১৫ জুলাই নিউজার্সির এলিজাবেথ সিটিতে অবস্থিত ইমিগ্রেশন কোর্টের মাননীয় জজ ডরোথি হারবেক সুমন আহমেদের রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনার আবেদন মঞ্জুর করেন। অর্থাৎ স্থায়ীভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের সুযোগ পান সুমন।
তারও ৮ দিন আগে একই আদালত ঐতিহাসিক এক সিদ্ধান্তে উল্লেখ করেছেন যে, বিএনপি দলগতভাবে সন্ত্রাসী সংগঠন নয়।
সুমন আহমেদ প্রায় ৮ মাস কাটালেন ইমিগ্রেশনের ডিটেনশন সেন্টারে। দালালকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে স্বপ্নের দেশ আমেরিকার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমিয়েছিলেন বিয়ানিবাজারের সন্তান সুমন। মেক্সিকো হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের পরই গ্রেফতার হন আরো অনেকের সাথে। এরপরই তাদেরকে ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে আটক রেখে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কারের প্রক্রিয়া শুরু করেছিল হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট।
সুমন আহমেদ এ অবস্থায় নিজেকে বিএনপির সমর্থক দাবি করে এসাইলাম প্রার্থনা করেন। তার পক্ষে মাননীয় আদালতে লড়েন নিউইয়র্কের বিশিষ্ট এটর্নী অশোক কর্মকার।
প্রসঙ্গত: জ্বালাও-পোড়াও এবং রেল লাইন ওপড়ে ফেলার মত নাশকতামূলক কর্মকান্ডের জন্যে বিএনপি জোটকে অভিযুক্ত করার পাশাপাশি সরকার দলীয় নেতা এবং মন্ত্রীরা বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রণালয়ের অঘোষিত একটি তালিকায় ‘বিএনপি’র নামও উঠেছে। এর ফলে বেআইনীভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের পর যারাই ধরা পড়ছে তাদেরকেই প্রাথমিক দৃষ্টিতে ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
এসাইলামের আবেদনের শুনানীর সময় এ প্রসঙ্গটি বলিষ্ঠভাবে উপস্থাপন করা হয় মার্কিন সরকারের পক্ষ থেকে। সুমন আহমদের এসাইলামের শুনানীর সময় এ প্রসঙ্গের অবতারণা করা হলে এটর্নী অশোক কর্মকার বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। সুমন আহমেদের মামলার এ রায়কে এখন সর্বত্র উদাহরণ হিসেবে দেখানো যাবে বিএনপির সমর্থক হিসেবে এসাইলামের শুনানীর সময়।
এটর্নী কর্মকার ২২ জুলাই বুধবার এনআরবি নিউজকে আরো বলেন, সুমন আহমেদ ঈদের দিন মুক্তি পেলেন, এটি খুবই আনন্দের সংবাদ। এখন আর কোন ঝামেলা রইলো না। আরো অনেকেই ডিটেনশন সেন্টারে রয়েছেন। এসাইলাম পেন্ডিং থাকলে তারা এর সুবিধা পাবেন যদি বিএনপির কর্মী হিসেবে আবেদন করে থাকেন।
এদিকে, গত ৬ সপ্তাহে ফ্লোরিডা, টেক্সাস, ক্যালিফোর্নিয়া, আরিজোনা, নিউইয়র্ক, মিশিগান, ইলিনয়, ওয়াশিংটন প্রভৃতি অঙ্গরাজ্যের সীমান্তবর্তী এলাকায় আরো ৬৫ বাংলাদেশী গ্রেফতার হয়েছে বলে ২২ জুলাই প্রাপ্ত সর্বশেষ সংবাদে জানা গেছে।
বিডি-প্রতিদিন/ ২৩ জুলাই ১৫/ সালাহ উদ্দীন