কানাডার অন্টারিও প্রদেশের একটি শহর লন্ডন। সেখানে বাঙালী কমিউনিটির পরিধি এখনো যথেষ্ট ছোট। সেই ছোট কমিউনিটিও আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়ে বাংলাদেশের জাতীয় দিবসে, বাঙালী চেতনার ডাকে। সেই ডাকে সাড়া দিয়েই শহরে বসবাসরত বাংলা অন্তঃপ্রাণ বাঙালীরা এবার পালন করেছে অমর একুশে-শহীদ দিবস।
দিনটি এখানে কর্মদিবস হওয়াতে শহরের কর্মব্যস্ত বাঙালিরা উদযাপনের জন্য ২৫ তারিখটি বেছে নেন। শহরের ১৮৪৫ বেলিমোট এভিনিউতে বাংলাঅন্তঃপ্রাণ বাঙালিরা ভোরবেলায় জড়ো হয়ে প্রভাতফেরির মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু করে। ”আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি” গানের সুরে সুরে তাঁরা নিজেদের হাতে বানানো পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন নিজেদের তৈরি শহীদ মিনারের পাদদেশে। সুদূর প্রবাসে মাতৃভূমির একটুকরো অংশে তাঁরা যেন ঢেলে দেন নিজেদের মন-প্রাণ।
তানিয়া রুবাইয়াতের পরিচালনায় বাংলা গান, কবিতা, নাচ আর যন্ত্র সঙ্গীত বাজিয়ে অনুষ্ঠানের প্রথম অংশ প্রাণবন্ত করে রাখে শিশু-কিশোররা। ছোট্ট রোদেলা একুশের ইতিহাস উপস্থাপনা করে সবার জন্য। অরিত্র, নাভিদ, তাহসান আর সারিন কবিতা আবৃত্তি করে; গান পরিবেশন করে সাবিন, আতিক ও আহসান। ফারহান পিয়ানোতে বাংলা গান বাজিয়েছে। ছোটদের অংশের শেষে ছিলো আবার রোদেলার নাচ। ‘আমি বাংলায় গান গাই” গানের সুরে রোদেলার নাচের সাথে অংশ নিতে হয়েছে তার মা-বাবা মাহমুদা আর রিপনকে।
বড়দের অংশে গান পরিবেশন করেন জহির ইসলাম ও বানু আক্তার, শফিউর রহমান শফিক, মাহমুদা সুলতানা ও কাজী আফজাল আহমেদ কপিল। কবিতা আবৃত্তি করেন ইশরাত লতা, পারভীন আক্তার, তানিয়া রুবাইয়াত ও মিল্টন।
অপেক্ষাকৃত ছোটো শহরের ছোট বাঙালী কমিউনিটির একুশেকে ঘিরে এই আয়োজন সবাইকে আবেগ আপ্লুত করে তুলে। সেই আবেগ যেন ছুঁয়ে দেয় নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েদেরও। বাবা মাকে অনুকরণ করে তারাও যেন বাঙালীর আবহমান সংস্কৃতি আর একুশের চেতনায় ঋদ্ধ হয়ে একাত্ম হয়ে পড়ে পুরো আয়োজনের সাথে।
প্রসঙ্গত, গত ১৬ ডিসেম্বর অন্টারিওর লন্ডনে প্রথমবারের মতো উদযাপিত হয়েছিলো বিজয় দিবস। তারই ধারাবাহিকতায় একুশে উদযাপন। এই শহরে বাঙালীর একুশের উদযাপন এই প্রথম।
বিডি-প্রতিদিন/০৪ মার্চ, ২০১৭/মাহবুব