বাংলাদেশের ৪৮তম স্বাধীনতা এবং জাতীয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে উদযাপন করেছে ভিয়েনাস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস।
অষ্ট্রিয়ায় অবস্থানরত বাঙালি কমিউনিটির বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণের উপস্থিতিতে মন্যবর রাষ্ট্রদূত মো: আবু জাফর ২৬ মার্চ সোমবার দিবসের প্রথমভাগে বাংলাদেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে স্থনীয সময় ভোর ৪টায় দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচী শুরু করেন।
জাতীয় সংগীতের সুরের মূর্ছনায় পতাকা উত্তোলন শেষে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর শহীদদের অমর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর ভিয়েনার হউফসাইলস্থ বাংলাদেশ দূতালয়ে ‘মহান স্বাধীনতা দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য’ বিষয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন, রাষ্ট্রদূত মো: আবু জাফর, সঞ্চালনা করেন কাউন্সেলর ও চ্যান্সারী প্রধান রাহাত বিন জামান। পবিত্র কোরআন থেকে তিলওয়াত এর মধ্য দিয়ে আলোচনা সভা শুরু হয়। এরপর মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে প্রেরিত মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয়।
দূতাবাস প্রাঙ্গণে দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং অষ্ট্রিয়া প্রবাসী বাঙালি কমিউনিটির বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে সঙ্গে নিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন রাষ্ট্রদূত মো: আবু জাফর।
‘মহান স্বাধীনতা দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য’ বিষয়ে অনুষ্ঠনে বক্তব্য রাখেন, সর্বইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং অষ্ট্রিয়া প্রবাসী মানবাধিকার কর্মী, লেখক, সাংবাদিক এম. নজরুল ইসলাম, অষ্ট্রিয়া আওয়ামী লীগের সভাপতি খন্দকার হাফিজুর রহমান নাসিম, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম কবির, মিনহাজুর রহমান, রুহী দাস সাহা, নয়ন হোসেন, সিরাজ চৌধুরী, রবিন মো: আলী, বখতিয়ার রানা, মনোয়ার পারভেজ, ইমরুল কায়েস, মাহাবুব খান শামীম, জান্নাতুল ফরহাদ, মিষ্টি বেগম, মোসারফ হোসেন, ইয়াসিম মিয়া প্রমুখ।
রাষ্ট্রদূত মো: আবু জাফর তাঁর বক্তব্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানকে স্মরণ করেন। বাংলাদেশ সৃষ্টির জন্য ১৯৭১ সালে যারা চরম আত্মত্যাগ স্বীকার করেছিলেন তিনি তাঁদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। রাষ্ট্রদূত মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধের ভিত্তিতে গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, সুখী ও সমৃদ্ধিশালী ডিজিটাল সোনার বাংলা বাস্তবায়নে স্ব স্ব অবস্থান থেকে ভ’মিকা পালন করার জন্য প্রবাসীদের প্রতি আহবান জানান।
অনুষ্ঠনে জাতির পিতার বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা যুদ্ধের সকল শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত এবং দেশ ও জাতির অব্যাহত সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন, দূতাবাসের সহকারী কনস্যুলার জুবায়দুল হক চৌধুরী। ভোজের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বের সমাপ্তি ঘটে।
দ্বিতীয় পর্বে ‘ভিয়েনা মারিয়ট’হোটেলের বলরুমে সন্ধ্যায় ৬টায় এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে ভিয়েনাস্থ জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অবস্থিত জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার উচ্চপদস্থ প্রতিনিধি, জাতিসংঘে নিযুক্ত ৫০টি দেশের স্থায়ী প্রতিনিধি, ৮০টি দেশের রাষ্ট্রদূত সহ প্রায় তিন শতাধিক অতিথি উপস্থিত ছিলেন।
প্রবাসী বিশিষ্ট বাঙালিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সর্বইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং অষ্ট্রিয়া প্রবাসী মানবাধিকার কর্মী, লেখক, সাংবাদিক এম. নজরুল ইসলাম, অষ্ট্রিয়া আওয়ামী লীগের সভাপতি খন্দকার হাফিজুর রহমান নাসিম, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম কবির, অষ্ট্রিয়ান শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের কর্মকর্তা মিজানুর রহমান খান, জাতিসংঘ শিল্প উন্নয়ন সংস্থার (ইউনিডো) সিনিয়র আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ কাশফিয়া মনসুর, জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক আনবিক সংস্থার কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, ওপেক এর কর্মকর্তা রুহুল আমিন, এমরান ফারুক, মিনহাজুর রহমান প্রমুখ।
আমন্ত্রিত অতিথিদের রাষ্ট্রদূত মো: আবু জাফর ও তাঁর সহধর্মিণী সালমা আহমেদ জাফর স্বাগত জানান। বাংলাদেশ ও অষ্ট্রিয়ার জাতীয় সংগীত বাজানোর মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। সবংর্ধনা অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত মো: আবু জাফর স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশ-অষ্ট্রিয়ার সম্পর্কের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে আগামী দিনে দু‘দেশের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তিনি বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য ও গুরুত্ব তুলে ধরেন।
রাষ্ট্রদূত স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উন্নয়নশলি দেশে উত্তরণ, বাংলাদেশে বিনিয়োগের অনুকুল পরিবেশ, বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্ভাবনা ও অর্জন সম্পর্কে আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছে। তিনি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করায় সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। অতিথিদের সম্মানে নৈশভোজের আয়োজন করা হয়।
বিডি প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ সিফাত তাফসীর