ঈদ-উৎসবে বিশিষ্ট কয়েকজনের সাথে সিটি কম্পট্রোলার স্কট স্ট্রিঙ্গার। ছবি-এনআরবি নিউজ।
পবিত্র ঈদুল ফিরত উপলক্ষে নিউইয়র্ক সিটির কম্পট্রোলার স্কট স্ট্রিঙ্গারের উদ্যোগে বর্ণাঢ্য এক উৎসব হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ম্যানহাটানে ৬৮ স্ট্রিটে হান্টার কলেজ ক্যাম্পাসে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়।
এতে বাংলাদেশিসহ মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন ছাড়াও জুইশ, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানরাও অংশ নিয়ে ধর্মীয় সম্প্রীতির অনন্য এক নজির প্রদর্শন করেন।
সিটি কম্পট্রোলার স্কট এম স্ট্রিঙ্গার স্বাগত বক্তব্যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সমালোচনা করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ধর্মীয় সম্প্রীতির দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যকে তছনছ করা হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে সামাজিক অস্থিরতার পাশপাশি আন্তর্জাতিক বিশ্বে আমেরিকার ইমেজকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে। মুসলিম নিষিদ্ধ করার প্রক্রিয়াকে কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। একইভাবে শিশু সন্তানকে মা-বাবার কাছে থেকে কেড়ে নেয়ার নিষ্ঠুর আচরণও যুক্তরাষ্ট্রের নীতি-নৈতিকতার পরিপন্থী। তবে এই নিউইয়র্ক সিটিতে ট্রাম্পের গণবিরোধী এবং অ-আমেরিকান কর্মকাণ্ড চলবে না। আমরা ওইসব আচরণ সমর্থন করিনি, কখনো করবো না।
কম্পট্রোলার বলেন, এই সিটির মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশ তথা ৬ লাখ ৭০ হাজার জনই গ্রীণকার্ডধারী। তাদের সিটিজেনশিপের আবেদনের সময় অতিবাহিত হচ্ছে। কিন্তু ফি বেশি হওয়ায় তারা আবেদন করতে পারছেন না। ১৯৮৯ সালে এই ফি ছিল মাত্র ৬০ ডলার। এখন বাড়িয়ে ৫০০ ডলার করা হয়েছে। এহেন অবস্থার উত্তরণে এই সিটিতে কর্মরত শতাধিক সংস্থা তহবিল সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে আমার ডাকে সাড়া দিয়ে। আর এভাবেই আমরা স্বল্প আয়ের লোকজনকে সেবা দিয়ে যাচ্ছি। কারণ, সিটিজেনশিপ গ্রহণের পর তাদের ফেডারেল সহায়তার পথ অবারিত হবে।
পাবলিক স্কুলে হালাল খাদ্যের দাবি প্রসঙ্গে কম্পট্রোলার বলেন, এই সিটির কম্পট্রোলার হিসেবে আমি বিশ্বাস করি যে, ক্লাসের প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীরই অধিকার রয়েছে নিজের পছন্দের খাবার গ্রহণের। সেটি নিশ্চিত করা হলেই লেখাপড়ায় তারা অধিক মনোযোগী হবে। বলার অপেক্ষা রাখে না, এই স্কুল সিস্টেমের মোট ছাত্র-ছাত্রীর ৩৮ শতাংশ হচ্ছে জুইশ ও মুসলমান। আর এজন্যেই আমার অফিস থেকে এক মিলিয়ন ডলারের একটি পাইলট প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে মুসলমান ও জুইশ ছাত্রদের মধ্যে হালাল/কুশের খাদ্য সরবরাহের অভিপ্রায়ে।
মাউন্ট হোপ মসজিদের ইমাম ইশা লামিন পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন।
সিটিতে মুসলমানদের অধিকার ও মর্যাদার প্রশ্নে আপসহীন কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির ছাত্র করিম আবুলনাগা এবং শিক্ষা বিভাগের টিচার সহকারী আসমা সারা আলীকে বিশেষভাবে সম্মান জানানো হয়। পরে সকলের মধ্যে ঈদের খাবার পরিবেশন করা হয়।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম