দেশ-বিদেশের বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতি নিয়ে কর্মরতদের অংশগ্রহণে নিউইয়র্কে দু'দিনব্যাপী সাহিত্য মেলা শেষ হয়েছে। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের এ মেলার মধ্য দিয়ে পাঠকরা অর্ধেক ফি'তে মার্কিন আইটি কোম্পানিতে চাকরির কোর্স গ্রহণের বিশেষ একটি সুবিধার কথা জেনেছেন।
আমেরিকান স্বপ্ন পূরণে ২৮৩ উদ্যমী প্রবাসীকে মিলিয়ন ডলারের স্কলারশিপ প্রদানের পর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সদস্য তথা পাঠকদেরও ৫০% ডিসকাউন্টে আইটি (ইনফরমেশন টেকনোলজি) কোর্স প্রদানের অঙ্গিকার করলো যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক 'পিপল এন টেক ইন্সটিটিউট'।
গত শনিবার বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ'র উপস্থিতিতে নিউইয়র্কে এই সাহিত্যমেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে এই ঘোষণা দেন পিপল এন টেকের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী প্রধান ইঞ্জিনিয়ার আবু হানিপ।
মার্কিন আইটি কোম্পানীতে উচ্চ বেতনে চাকরি পাবার সহায়ক এসব কোর্স দেয়া হয় যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা এবং রাজধানী ঢাকার গ্রীনরোডে অবস্থিত ৬টি ক্যাম্পাস ছাড়াও অনলাইনে বিশ্বব্যাপী। গত দেড় দশকে ৬ হাজারের অধিক বাংলাদেশি এই ইন্সটিটিউটে নাম মাত্র ফি (অনেকেই স্কলারশিপ পেয়েছিলেন)তে এসব কোর্স করে মার্কিন কোম্পানিতে উচ্চ বেতনে চাকরি পেয়েছেন।
অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেছেন, বলতে দ্বিধা নেই যে, আমার তালিকাভুক্ত পাঠকদের অধিকাংশের পক্ষেই এই ৫০%-ও পরিশোধের ক্ষমতা নেই। তবে তাদের আন্তরিক আগ্রহের কোন সীমা-পরিসীমা নেই। তারা ভালো কিছু করতে পারলেই যেন হাতে আকাশের চাঁদ পেয়ে যান। তবুও আমি এমন একটি অফার দেয়ার জন্যে পিপল এন টেক ইন্সটিটিউটকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
মেলার বিভিন্ন পর্বের আলোচনায় স্থানীয় বিশিষ্ট লেখক-কবি-সাহিত্যিকরা অংশ নেন। এর মধ্যে ছিলেন ড. সেলিম জাহান, ড. দ্বীপেন ভট্টাচার্য, ড. রাশেদ চৌধুরী, আনিস আহমেদ, তাপস গায়েন, শামস আল মমিন, তুষার গায়েন, ফকির ইলিয়াস, মেহনাজ মোমেন, রুমা মোদক, রওশন জাহান, অনামিকা বন্দোপাধ্যায়, আহমেদ মাযহার।
সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় ছিলেন ঢাকা, কলকাতা এবং আমেরিকার খ্যাতিমান শিল্পীরা। তারা হলেন- বনানী মুখার্জি, লুৎফুন্নাহার লতা, মিতালি ব্যানার্জি ভৌমিক, অনির্বাণ দাসগুপ্ত, মাহমুদ হোসেন দুলু, কাবেরী দাস, তপন মোদক, দেবু নায়েক, নমিতা কুন্ডু, ক্রিস্টিনা রোজারিয়ো, ফেরদৌসী ইকরাম এবং মিথুন আহমেদ। চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর ব্যবস্থাও ছিল দুদিন।
স্বল্পদৈর্ঘ চলচ্চিত্র 'মুক্তিযুদ্ধের রেণু' প্রদর্শিত হয়। এর পরিচালক এনায়েত করিম বাবুল এবং সেলিম আফসারীও ছিলেন অনুষ্ঠানে। নাসরিন ইসলামের পরিচালিত 'দ্য পোস্টেজ অব ইন্ডিপেন্ডেন্স' প্রদর্শিত হয়েছে এ মেলায়।
তুষার গায়েনের নেতৃত্বে 'কবিতার ভাষা ও শৈলী' শীর্ষক একটি আলোচনায় অনেকে অংশ নেন। সমকালীন বাংলা সাহিত্য নিয়ে আলোচনা করেন ড. সেলিম জাহান, সনৎ সাহা প্রমুখ। 'সম-সাময়িক সাহিত্য : নতুন ধারা নাকি গতানুগতিক' শীর্ষক আলোচনা শুরু করেন অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ।
লুৎফুন্নাহার লতার সঞ্চালনায় কবিতা ও কবিতার ভাবনা অনুষ্ঠানে অংশ নেন শামস আল মমীন, ফকির ইলিয়াস, আনিস আহমেদ। পঞ্চকবির গান পরিবেশন করেন মাহমুদ হোসেন দুলু। মেলায় মিডিয়া পার্টনার ছিল বাংলাদেশ প্রতিদিনসহ স্থানীয় ৩টি পত্রিকা।
বিডি প্রতিদিন/০৯ জুলাই ২০১৮/আরাফাত