‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা রচনার ক্ষেত্রে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু অর্জিত হয়েছে বাংলাদেশের। সেই অর্জন সমূহকে বস্তুনিষ্ঠ ভাবে উপস্থাপনের জন্যে গণমাধ্যমের আন্তরিক সহযোগিতা চাই। একই সাথে প্রবাস প্রজন্মকে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে অবহিত এবং বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় সমগ্র জনগোষ্ঠীকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্যেও গণমাধ্যমের ভূমিকা অপরিসীম।' এসব কথা বলেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে এ মোমেন।
১৬ জুলাই মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কে ‘বাংলা চ্যানেল’ নামক নতুন একটি স্যাটেলাইট টিভির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ‘খুবই ভালো একটি সময়ে এই টিভির যাত্রা শুরু হলো। সামনের বছর হচ্ছে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের শততম জন্মবার্ষিকী। তার পরের বছর হবে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সুবর্ণজয়ন্তী। এ দুটি বিশেষ বছরের সকল কার্যক্রম সুন্দরভাবে উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে এই চ্যানেলটি বাঙালির হৃদয়ে ঠাঁই করে নিতে সক্ষম হবে বলে আশা করছি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে, বিশেষ করে মানুষের জীবন-মানের উন্নয়নের পাশাপাশি দারিদ্র বিমোচনে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। বাংলাদেশ এখন গোটাবিশ্বে উন্নয়নের মডেল হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের সম্মান বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব অবিস্মরণীয় ঘটনাবলি নতুন এই টিভিতে চমৎকারভাবে উপস্থাপিত হবে বলে আশা করছি।’
উল্লেখ্য, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহবানে ওয়াশিংটন ডিসিতে চলমান একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগদানের জন্যে ১৬ জুলাই নিউইয়র্কে গিয়েছেন ড. মোমেন। ১৯ জুলাই ঢাকার উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগের আগে বস্টনে বিশ্বখ্যাত হার্ভার্ডে রোহিঙ্গা ইস্যুতে এক সেমিনারে বক্তব্য দেবেন ড. মোমেন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও’র সাথেও বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে দ্বি-পাক্ষিক নানা ইস্যুতে। মার্কিন কংগ্রেসের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সাথেও রোহিঙ্গা ইস্যুতে কথা হতে পারে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর।
নিউইয়র্কে বসবাসরত শাহ জে চৌধুরীর মালিকানাধীন এই টিভির প্রচার শুরু করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ‘কোটি প্রাণ একসাথে’ স্লোগানে এই টিভির উদ্বোধনী সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন। অতিথি হিসেবে আরো ছিলেন কন্সাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা, নিউইয়র্কের স্টেট এ্যাসেম্বলীওম্যান ক্যাটালিনা ক্রুজ, স্টেট অ্যাসেম্বলিম্যান ডেভিড ওয়েপ্রিন, কুইন্স ডিস্ট্রিক্ট ডেমক্র্যাটিক পার্টির লিডার এটর্নি মঈন চৌধুরী, যুক্তরাষ্ট্র সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা রাশেদ আহমেদ, যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি আব্দুল কাদের মিয়া, ডেমক্র্যাট ফাহাদ সোলায়মান, কন্ঠযোদ্ধা রথীন্দ্রনাথ রায় এবং শহীদ হাসান, কমিউনিটি লিডার মোহাম্মদ এন মজুমদার, খান’স টিউটোরিয়ালের নাঈমা খান, মোর্শেদ আলম, লেখক ও মানবাধিকার সংগঠক ড. পার্থ বানার্জি, বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি প্রার্থী কাজী নয়ন, নিউইয়র্ক ইন্স্যুরেন্সের শাহনেওয়াজ প্রমুখ।
স্বাগত বক্তব্য দেন চ্যানেলটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ফৌজিয়া চৌধুরী। সাংবাদিক শামীম আল আলামিনের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী সমাবেশে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসার, সাংবাদিক মাহফুজুর রহমান প্রমুখ।
বিশিষ্টজনদের মধ্যে আরো ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা হাজী এনাম, আশরাফুজ্জামান, মোর্শেদা জামান, আশরাফুজ্জামান, ট্যাভেল ব্যবসায়ী শামসুদ্দিন বশির, সিপিএ ইয়াকুব এ খান, তৈয়বুর রহমান হারুন, যুবদল নেতা এম এ বাতিন, মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বারি, কমিউনিটি এ্যাক্টিভিস্ট শুভ রায়, গোপন সাহা, সাংস্কৃতিক সংগঠক সবিতা দাস, হাজী জাফরউল্লাহ, এটিএম মাসুদ, তপন মোদক, শাহ শহীদুল হক সাঈদ, নাজিমউদ্দিন প্রমুখ।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশী-আমেরিকানদের মালিকানাধীন আরো ৩টি টিভি চ্যানেল নিউইয়র্কসহ বিভিন্ন স্থান থেকে প্রচারিত হলেও ভারতীয় বাঙালি শাহ জে চৌধুরির মালিকানাধীন এই চ্যানেলের মধ্যদিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এগিয়ে চলা বাংলাদেশ যথাযথভাবে উপস্থাপিত হবে বলে অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন। উদ্বোধনী পর্বে ‘তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দেব রে’ সঙ্গীত পরিবেশন করেন কন্ঠযোদ্ধা রথীন্দ্রনাথ রায় এবং শহীদ হাসান।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার