বিভিন্ন সময় দলীয় শৃঙ্খলা না মেনে স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগের দুই শীর্ষ নেতা রেজাউল করিম রেজা ও মকবুল হোসেন মুকুলের বিরুদ্ধে। অসাংগঠনিক এসব কার্যক্রমের জন্য মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগ থেকে অবাঞ্চিত ঘোষণার পাশাপাশি সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ারও ঘোষণা দিয়েছে দলটির নেতারা।
সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ নিয়ে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক কামরুজ্জামান কামাল।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয় বিভিন্ন সময় পদ-পদবী পাইয়ে দেয়ার কথা বলে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক রেজাউল করিম রেজা। এছাড়া দলের ভিতর স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ আনা হয়েছে মকবুল হোসেন মুকুলের বিরুদ্ধে।
পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন উপস্থিত নেতারা।
এক প্রশ্নের জবাবে যুগ্ম-আহ্বায়ক ওহিদুর রহমান ওহিদ বলেন, মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগকে এগিয়ে নিতে হলে আর কোনো বিকল্প নেই। তাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা শুধু দু'এক দিনের নয় দীর্ঘদিন ধরে তারা এসব অনৈতিক কাজ করে আসছেন। আজ সবাই একত্রিত, মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগের নতুন-পুরাতন সবাই আজ এক মঞ্চে, সকলের মতামতের ভিত্তিতে এ দুই নেতার বিরুদ্ধে আমরা অনাস্থা প্রকাশ করছি। আশা করি এ থেকে বাকিরা শিক্ষা নেবে।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে যুগ্ম-আহ্বায়ক কামরুজ্জামান কামাল বলেন, বঙ্গবন্ধুকে ভালোবেসে, তার আদর্শকে মেনে প্রবাসে আমরা স্বার্থহীন রাজনীতি করি। কিন্তু কতিপয় নেতার জন্য আমাদের দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। এজন্য আমরা সকলে একত্রিত হয়েছি। এখন থেকে মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগে আর কোনো অতিথি পাখি নেই আর কোনো সুবিধাভোগী নেই। মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগ এক এবং অভিন্ন আমাদের কোনো গ্রুপিং নেই।
যুগ্ম-আহ্বায়ক শাহিন সর্দার বলেন, হাইব্রীড দিয়ে রাজনীতি হয় না। আমরা এতোদিন ভুল পথে চলেছি। সবকিছু পেছনে ফেলে আজকের মঞ্চে যারা একত্রিত হয়েছে তারা একসঙ্গে চলতে বদ্ধ পরিকর।
যুগ্ম-আহ্বায়ক রাশেদ বাদল বলেন, দীর্ঘ দুই যুগ ধরে মালয়েশিয়াতে আমাদের রাজনৈতিক পথ চলা। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে আমরা চেষ্টা করেছি মালয়েশিয়ার অলিতে গলিতে ছড়িয়ে দেয়ার। তবে কিছু নেতার স্বেচ্ছাচারিতার কারণে আজও আমরা পিছিয়ে। আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হওয়া উচিত এক এবং অভিন্ন।
মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি জামিল হোসেন নাসির বলেন, পুতুল খেলার দিন শেষ। অনেক হয়েছে আর নয়। এখন সময় ঐক্যবদ্ধভাবে সামনে এগিয়ে যাওয়ার। পেছনে ফিরে তাকাবার সময় নেই, যারা অন্যায় করেছে তারা শাস্তি পেয়েছে। মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগ নিয়ে কারো খেলার অধিকার নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।
অনেকটা একই সুরে ঐক্য এবং সম্মিলিতভাবে পথ চলার কথা বলেন দলটির সাবেক আহ্বায়ক সোহরাওয়ার্দী হোসেন সরোয়ার, জসিম উদ্দিন চৌধুরী, মনিরুজ্জামন মনির ও কামাল চৌধুরী।
এসময় উপস্থিত থাকা সহযোগী সংগঠন স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি বিএম বাবুল হাসান, শ্রমিকলীগ সভাপতি নাজমুল ইসলাম বাবুল ও যুবলীগের জহিরুল ইসলাম বলেন, আমরা এই শুদ্ধি অভিযানের সঙ্গে একাত্ম। তবে এ উদ্যোগ যেন আবার অন্ধকারে চলে না যায় সেদিকে সবাই খেয়াল রাখবেন। অতীতের মতো ভবিষ্যতেও সহযোগী সংগঠন পাশে থাকবে বলে আশ্বস্ত করেন তারা।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হুমায়ুন কবির, শফিকুর রহমান চৌধুরী, কবি আলমগীর হোসেন, শাখাওয়াত সুমন, হুমায়ুন কবির আমির, নূর মোহাম্মদ ভূইয়া, প্রদীপ কুমার বিশ্বাস, প্রকৌশলী মো. রাহাদ উজ্জামান, শাখাওয়াত হোসেন শওকত, আক্তার হোসেন, আব্দুল বাতেন, ইকবাল হোসেন, মোহাম্মদ মামুন, সায়ীদ সরকার, মাহবুব আলমসহ আরও অনেকে।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম