করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কমাতে প্রায় ৭ সপ্তাহ আগে লকডাউন করা হয় ব্রিটেনকে। তবে গত রবিবার রাতে টেলিভিশন ভাষণের মাধ্যমে লকডাউন কিছুটা শিথিল করেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
তবে স্বায়ত্ত্বশাসিত স্কটল্যান্ড এবং ওয়েলসের সরকারগুলো কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত গুলো মেনে নেয়নি।
মঙ্গলবার হাউস অব কমন্সের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনস বলেন, শুধু আশা-ভরসা বা অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে প্রলুব্ধ হয়ে নয়, তার সরকারের কার্যক্রম পরিচালিত হবে বিজ্ঞান ও জনস্বাস্থ্যের সুনির্দিষ্ট তথ্যের ওপর ভিত্তি করে।
সোমবার লকডাউন প্রত্যাহারে ৫০ পৃষ্ঠার রোডম্যাপ প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্য। এতে থাকা উল্লেখযোগ্য নির্দেশনাগুলো হলো সংক্ষিপ্তকারে তুলে ধরা হলে
বুধবার থেকে যা করা যাবে:
আপনি যদি বাড়ি থেকে কাজ করতে না পারেন তবে কাজে যেতে পারবেন। যদি সম্ভব হয় তবে গণপরিবহন এড়িয়ে চলুন। বাস বা ট্রেন কিংবা জনসমাগমের জায়গায় মুখে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।
এখন থেকে ঘরের বাইরে সময় কাটানো, সূর্যস্নান, হাঁটাচলা করা যাবে। তবে ২ মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। তবে পরিবারের বাইরের কারো সাথে নয়। এমনকি সাইলে চালিয়ে হলেও।
প্রাইভেট গাড়িতে করে বাইরের খোলা জায়গায় ডে ট্রিপ বা একদিনের ভ্রমণ করা যেতে পারে। সামাজিক দূরত্ব ও দিক নির্দেশনা গুলো অনুসরণ করে ঘরের বাইরে থেকে প্রতিবেশীদের দেখা যাবে।
বাইরে গিয়ে ব্যায়াম করা যাবে দুই মিটার দূরত্ব বজায় রেখে।
টেনিস বা বাস্কেটবল এবং গলফ খেলার জন্য একটি কোর্ট ব্যবহার করা যাবে পরিবারের সদস্যদের সাথে কিংবা অন্য কারো সাথে।
গার্ডেন সেন্টারে যাওয়া যাবে। শিক্ষার্থীরা ঘরে ফিরতে পারবে তারা যদি স্থায়ীভাবে ফিরতে চায়।
উৎপাদন, নির্মাণ, প্রস্তুতকারক, গবেষণার মতো খাতে কর্মরতদের আগামী বুধবার থেকেই কাজে ফিরতে পারবেন।
গুরুত্বপূর্ণ সেবাখাতে কর্মরত ব্যক্তিদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে।
স্কুল: ইংল্যান্ডের কিছু কিছু প্রাইমারি স্কুল জুন থেকে চালু হবে। তবে বেশিরভাগ সেকেন্ডারি স্কুল আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। প্রাইমারি স্কুলের রিসিভশন, ইয়ার ওয়ান ও ইয়ার সিক্স এর শিক্ষার্থীরা ১লা জুন থেকে যেতে পারবে। তবে শিক্ষক ইউনিয়ন এ নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। শিশুদের স্কুলে না পাঠালে জরিমানা দিতে হবে না।
আগামী ১লা জুন থেকে কিছু দোকানপাট খোলা যাবে। তবে সরকার আরও বিস্তারিত রিপোর্ট প্রকাশ করবে।
১ জুন থেকে ছোট্ট পরিসরে বিয়ের অনুষ্ঠান করা যাবে।
সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে আগামী জুলাই থেকে রেস্টুরেন্ট হোটেলসহ অন্যান্য হসপিটালিটি সেক্টর খুলে দেয়া হবে।
যা করা যাবে না
নিকট আত্মীয় কিংবা বন্ধু-বান্ধবের ঘরে বেড়াতে যাওয়া যাবে না।
ইনডোর স্পোর্টস, জিম বা ব্যায়ম, লেজার সেন্টারে যাওয়া ও সুইমিংপুলে সাঁতার কাটা যাবে না
ঘরে কেউ মারা গেলে, দুর্বল ব্যক্তিকে সহায়তার জন্য, ঘরের কাজের জন্য, ঘর পরিবর্তন এবং জরুরি প্রয়োজনে (ঘরের লোক ছাড়া) দুই জনের বেশি লোক আনা যাবে না।
নিজের বাড়ি ছেড়ে অন্যের বাড়িতে গিয়ে থাকা যাবে না।
অন্য কারো ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করা যাবে না।
হলিডের উদ্দেশে নিজের ঘর ছেড়ে অন্যের বাড়ি গিয়ে থাকা যাবে না।
জরিমানা:
লকডাউন নিয়ম ভাঙলে ৬০ পাউন্ড থেকে ১০০ পাউন্ড পর্যন্ত। পুনরায় অপরাধ করলে সর্বাধিক ৩২০০ পাউন্ড পর্যন্ত জরিমানা।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন