মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠক ও সাবেক মন্ত্রী শাজাহান সিরাজের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিকদের সমন্বয়ে গঠিত সংগঠন অল ইউরোপ বাংলাদেশ প্রেসক্লাব।
সংগঠনের সভাপতি ফয়সাল আহমেদ দ্বীপ, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জমির হোসেন এবং সংগঠনের প্রচার সম্পাদক মো. রাসেল আহম্মেদের সমন্বিত বিবৃতিতে এ শোক জানানো হয়। এতে একত্মতা করেছেন অল ইউরোপ বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি গ্রেট ব্রিটেনের মাহাবুব সুয়েদ, সহ সভাপতি বেলজিয়ামের ফারুক আহমদ মোল্লা, সহ সভাপতি রোমের আখি শিমা কায়সার, সহ সভাপতি ইতালির রিয়াজ হোসেন, সহ সভাপতি ফ্রান্সের নুরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পর্তুগালের জহুর উল হক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক স্পেনের কবির আল মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক পর্তুগালের রনি মোহাম্মদ, প্রচার সম্পাদক মো. রাসেল আহম্মেদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ইতালির আসলামুজ্জামান, কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য ও মিলান সমন্বয়ক নাজমুল হোসাইন, জার্মানির ফাতেমা রুমা, ইতালির সাইফুল ইসলাম মুন্সী, জার্মানির হাবিব বাবুল, স্পেনের সাইফুল আমিন, স্লোভেনিয়ার রাকিব হাসান রাফি, গ্রিসের মো. আল আমিন, হাঙ্গেরির জেরিন ফাতেমা, পর্তুগালের যুবরাজ শাহাদাত, পর্তুগালের এনামুল হক, সাইপ্রাসের মাহফুজুল হক চৌধুরী, পোল্যান্ডের আহমেদ রাজ বিন আইয়ুব, পর্তুগালের জাহিদ কায়সার, ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী, আনোয়ার এইচ খান, মুরাদ শেখসহ আরও অনেকে।
শাজাহান সিরাজের মৃত্যুতে বাংলাদেশ রাজনৈতিক অঙ্গন এক উজ্জ্বল নক্ষত্রকে হারালো বলে উল্লেখ করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘শাজাহান সিরাজ বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে যাদের ‘চার খলিফা’ বলা হতো শাজাহান সিরাজ ছিলেন তাঁদেরই একজন। ১৯৭১ সালের ১ মার্চ তিনি সিরাজুল আলম খান, শেখ ফজলুল হক, আব্দুর রাজ্জাক, তোফায়েল আহমেদ, আবদুল কুদ্দুস মাখন, নূরে আলম সিদ্দিকী, আ স ম আবদুর রব প্রমুখ ছাত্রনেতাদের পাশাপাশি স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠনে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছিলেন।’‘১৯৭১ সালের ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন আ স ম আবদুর রব। সেখান থেকেই পরবর্তী দিনে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠের পরিকল্পনা করা হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৩ মার্চ ১৯৭১ পল্টন ময়দানে বিশাল এক জনসভায় বঙ্গবন্ধুর সামনে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেছিলেন শাজাহান সিরাজ। এরপর যুদ্ধ শুরু হলে তিনি সশস্ত্র যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স (বিএলএফ) বা মুজিব বাহিনীর কমান্ডার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।’
‘স্বাধীনতা পরবর্তী সময় তিনি জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদে যোগদান করেন এবং জাসদের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি হিসেবেও তিনি কাজ করেছেন। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ৩ বার জাসদের মনোনয়নে এবং ১ বার বিএনপি'র মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। শাজাহান সিরাজ ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনের পর চার দলীয় জোট সরকারের অধীনে গঠিত সরকারের বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।’
উল্লেখ্য, শাজাহান সিরাজ দীর্ঘদিন বিভিন্ন ধরণের শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। আজ মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। অল ইউরোপ বাংলাদেশ প্রেসক্লাব শাজাহান সিরাজের শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক