একজন প্রতিবন্ধী বয়স্ক ব্যক্তিকে কাতারে ব্যস্ততম রাস্তা পারাপার করে দেওয়ার ছবি সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ফুড ডেলিভারি “তালাবাতে' নিয়োজিত প্রবাসী বাংলাদেশি তরুণ ইয়াছিন ওই সেবামূলক কাজটি করেছিলেন।
পারাপারের ছবিটি অল্প সময়ের মধ্যে ছড়িয়ে যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ফলে সবার মনে জায়গা করে নেয় ছবিটি, যা মানবিকতার এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এরপর থেকে বাংলাদেশ কমিউনিটির বিভিন্ন মহলে আলোচনায় আসেন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশংসায় ভাসছে সেই বাংলাদেশি তরুণ।
এই মানবিক কাজের স্বীকৃতি হিসেবে সরকারি ও বেসরকারি পুরস্কারে ভূষিত হলেন ইয়াছিন। ভাইরাল হওয়ার পর কাতার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিশেষভাবে পুরস্কৃত করার পাশাপাশি ইয়াছিন যে কোম্পানিতে কাজ করেন সেই তালাবাতও তাকে কর্মক্ষেত্রে প্রমোশন দেয়।
তাকে বৃহস্পতিবার কাতারে শিল্পাঞ্চল সানাইয়া এশিয়ান টাউনের প্লাজা মলে অবস্থিত ইভিনিং স্পাইসিতে কাতার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশি মালিকানাধীন ইভিনিং স্পাইস রেস্তোরাঁর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরিফুল হক সাজুর পক্ষ থেকে বিশেষ সম্মাননা হিসেবে নগদ অর্থ ও বিভিন্ন সামগ্রী দেওয়া হয়। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিচালক মাশহারুল হক, রেস্তোরাঁর ম্যানেজার রুমেল উদ্দিন প্রমুখ।
শরিফুল হক সাজু বলেন, বিদেশের মাটিতে শত ব্যস্ততার মধ্যেও প্রবাসী বাংলাদেশিরা নিজেদের কাজের পাশাপাশি মানবিকতা কাজ করে যাচ্ছেন। কাতারে এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার নোয়াগাঁ গ্রামের বাসিন্দা ইয়াছিন।
জানা গেছে, দুই বছর আগে ২০১৮ সালে জীবকার তাগিদে কাতার আসেন মোহম্মদ ইয়াসিন। তারপর দীর্ঘদিন নিজের সঙ্গে সংগ্রাম করে একটি বাইক লাইসেন্স নেন এবং ফুড ডেলিভারি এজেন্ট “তালাবাতে” নতুন জার্নি শুরু করেন। অন্য সবার মতো নিজেও নিজের মতো করে কষ্ট করে উপার্জন করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন রাইডার মোহাম্মদ ইয়াসিন।
ইতোমধ্যে কাতারে স্থানীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমসহ তালাবাতের তৈরি একটি ছোট ভিডিওতে ইয়াসিন রাস্তায় এবং তারপরে কী ঘটেছিল তা বর্ণনা করা হয়েছে। ভিডিওটি ইয়াসিন বলেন, “লোকটি কোথায় থেকে এসেছে তা আমি নিশ্চিত নই। আমি ম্যাকডোনাল্ডস থেকে একটি অর্ডার রিসিভ করছিলাম তখন পাশের রাস্তা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ ও দ্রুত চলমান ট্রাফিক ছিল। একজন প্রতিবন্ধী বৃদ্ধ রাস্তা পার হতে চেষ্টা করছিলেন কিন্তু তিনি পেছন থেকে কিছুই দেখতে পেলেন না, তখন আমি তাকে সাহায্য করতে দ্বিধা করি নাই। আমি আমার মোটরবাইকটি রাস্তার পাশে পার্ক করেছিলাম এবং তাকে জিজ্ঞাসা করলাম তিনি কোথায় যেতে চান। তিনি রাস্তার শেষের দিকে ইঙ্গিত করলেন এবং আমি তাকে রাস্তাটি অতিক্রম করতে সহায়তা করেছি। ভদ্রলোক, সমস্ত কৃতজ্ঞতার সঙ্গে আমাকে ধন্যবাদ জানালেন।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ