স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশের প্রশংসায় মার্কিন কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং, নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটর জন ল্যু এবং কুইন্স বরো প্রেসিডেন্ট ডোনাভান রিচার্ডস পৃথক পৃথকভাবে ভিডিও বার্তার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভাবনীয় উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
একইসাথে মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে তারা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিও গভীর শ্রদ্ধা জানান। বাংলাদেশি আমেরিকানসহ সারাবিশ্বের বাঙালিদের প্রতিও তারা আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ২৬ মার্চ নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কন্স্যুলেটের ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে এসব বক্তব্য উপস্থাপন করা হবে বলে জানান কন্সাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা।
কংগ্রেসনাল বাংলাদেশ ককাসের প্রভাবশীলী সদস্য নিউইয়র্কের কুইন্স হতে নির্বাচিত কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং তার বক্তব্যে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে কাজ করে যাবেন বলে উল্লেখ করেন এবং নিউইয়র্কে বাংলাদেশি-আমেরিকানদের স্বার্থ সুরক্ষায় তার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, তিনি বাংলাদেশের একজন প্রকৃত বন্ধু।
স্টেট সিনেটর জন ল্যু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। দু’বছর আগে জাতির পিতার বাসভবন সফরের স্মৃতিচারণ করে সিনেটর জন ল্যু ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুসহ সকল শহীদের নৃশংস হত্যাকাণ্ডকে ইতিহাসের একটি বর্বর অধ্যায় হিসেবে উল্লেখ করেন। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে সকল বাংলাদেশিদের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি নিউইয়র্কে বসবাসরত বাংলাদেশি-আমেরিকানদের উচ্ছসিত প্রশংসা করেন।
বাংলাদেশি-আমেরিকান অধ্যুষিত কুইন্স বরো প্রেসিডেন্ট ডোনাভান রিচার্ডস বলেন, বঙ্গবন্ধুর সুদৃঢ় রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও বিচক্ষণ নেতৃত্বের কারণেই নয় মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ হিসেবে পৃথিবীর মানচিত্রে স্থান করে নিয়েছে। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর নৃশংস হত্যাকান্ডের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধু অতি অল্পসময়ের মধ্যেই একটি দৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। মহান স্বাধীনতার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান জানান বরো প্রেসিডেন্ট। কুইন্সে বসবাসরত বাংলাদেশি-আমেরিকান কমিউনিটির সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক অবদানকে তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে অভিহিত করেন।
নিউইয়র্কে করোনাভাইরাসজনিত বৈশ্বিক মহামারীর পরিপ্রেক্ষিতে স্বাগতিক দেশের বিধি-বিধান প্রতিপালন সাপেক্ষে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল, নিউইয়র্ক ২৬ মার্চ দুপুরে ভার্চুয়ালে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করবে। এই অনুষ্ঠানে কংগ্রেসওমেন গ্রেস মেং, নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটর জন সি. ল্যু এবং কুইন্স বরো প্রেসিডেন্ট ডোনাভান রিচার্ডসসহ বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ, বাংলাদেশি-আমেরিকান কমিউনিটি ও বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত/কনসাল জেনারেলবৃন্দের রেকর্ডকৃত বক্তব্য প্রচারিত হওয়ার কথা। মুক্তিযুদ্ধে অসাধারণ অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ''Friends of Liberation War Honor'' প্রাপ্ত প্রখ্যাত মার্কিন চলচ্চিত্র নির্মাতা লেয়ার লেভিনও ভার্চুয়াল এ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার কথা। এছাড়াও, এ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশি-আমেরিকান কমিউনিটির অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা থাকবে।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষের মাহেন্দ্রক্ষণে আয়োজিত “স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস - ২০২১”-এর এই ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানটি উপভোগ করার জন্য সকলকে সাদরে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
এদিকে, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে সমাবেশ হবে ২৯ মার্চ সোমবার সন্ধ্যা ৮টায় জ্যাকসন হাইটসে পালকি পার্টি হলে। সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুল কাদের মিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি সুব্রত তালুকদার সকলকে অনুরোধ জানিয়েছেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্যে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা